ভারত সফর বাতিল করলেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৯:৪৭ পিএম, ৩ জানুয়ারি ২০২০ শুক্রবার | আপডেট: ০৯:৫৬ পিএম, ৩ জানুয়ারি ২০২০ শুক্রবার
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন- ফাইল ছবি
আগামী ১৪ জানুয়ারি থেকে তিন দিনের জন্য ভারত সফরের কথা ছিল অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসনের। কিন্তু দেশটিতে ভয়াবহ দাবানলে পুড়ে যাচ্ছে বিস্তীর্ণ এলাকা। যার জেরে আসন্ন ভারত সফর বাতিল করেছেন তিনি।
ভারতীয় গণমাধ্যমের খবর- অস্ট্রেলিয়ায় দাবানল কার্যত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। ফলে অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসে জারি করা হয় জরুরী অবস্থা।
গেল বছরের নভেম্বর এবং ডিসেম্বরে একই কারণে কিছু দিনের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছিল। যা প্রায় এক সপ্তাহ স্থায়ী হয়েছিল। এ বারের পরিস্থিতি তার থেকে অনেক বেশি ভয়ঙ্কর। জরুরি অবস্থা জারির মাধ্যমে বাড়তি ক্ষমতা তুলে দেওয়া হয়েছে দমকল এবং বিপর্যয় মোকাবিলা কর্মীদের হাতে। তারা মনে করলে অবিলম্বে কোনও এলাকা খালি করার নির্দেশ দিতে পারেন, বাসিন্দাদের বাধ্য করতে পারেন বাড়ি ছাড়তে। শুক্রবার সকাল থেকে এই ব্যবস্থা কার্যকর হবে।
তবে ওয়াকিবহাল মহলের বক্তব্য, জোর করার দরকার পড়বে না। কারণ মানুষ এমনিতেই প্রাণ বাঁচাতে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছেন। আগুন থেকে বাঁচতে গত কয়েকদিন ধরে দক্ষিণের সমুদ্রতটে আশ্রয় নিয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। ধোঁয়া এবং ছাইয়ের দাপটে সেখানেও ঠিক ভাবে নিঃশ্বাস নেওয়া যাচ্ছে না। প্রবল গরম এবং হাওয়ার দাপটে হু হু করে ছড়িয়ে পড়ছে আগুন।
বৃহস্পতিবার সকালের দিকে হাওয়ার বেগ একটু কমলে হাজার হাজার মানুষ এলাকা ছাড়ার জন্য গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। তাতেও বিপত্তি বাঁধে। বুধবার থেকে মূল সড়কটিতে গাড়ি চলাচল নিষিদ্ধ, কারণ আগুনের লেলিহান শিখা রাস্তার উপর এসে পড়ছে, সেই অবস্থায় গাড়ি গেলে বড় ধরনের বিপদ ঘটে যেতে পারে। কিন্তু রাস্তা বন্ধ থাকায় এলাকা ছাড়তে পারছেন না স্থানীয়রা।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দক্ষিণের সমুদ্রতট সংলগ্ন এলাকায় তীব্র যানজট তৈরি হয়েছে। যার জেরে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। তেমনই এক জন রব ও'নেল। ৬ ঘণ্টা গাড়িতেই বসে রয়েছেন তিনি। মামার বাড়ি গিয়েছিল তার দুই সন্তান। সোমবার থেকে কারও সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করতে পারছেন না তিনি। রবের কথায়, আজ সকালে পরিস্থিতি একটু ভালো হতে হয়েছিলাম। কিন্তু এক পা-ও এগোতে পারিনি।
এ দিকে আবহাওয়ার দফতরের পূর্বাভাস বলছে, শনিবার পরিস্থিতি নতুন করে বিগড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ ওই দিন থেকে তাপমাত্রা আরও বাড়বে। পাশাপাশি ঝোড়ো হাওয়া-ও বইতে পারে।
এ বারের দাবানলে ইতোমধ্যেই ১৭ জনের প্রাণ গিয়েছে। এখনও কয়েকজন নিখোঁজ। শত শত ঘরবাড়ি ভস্মীভূত হয়েছে। উদ্বেগের বিষয় হল, অস্ট্রেলিয়ায় মাত্র গ্রীষ্ম শুরু হয়েছে। জানুয়ারি এবং ফেব্রুয়ারি দুই মাস জুড়েই গরমের দাপট থাকে। ফলে আগামী দিনের কথা ভেবে এখন থেকেই শিউরে উঠছেন বাসিন্দারা।
ক্ষোভ দানা বেঁধেছে সরকারের পরিবেশ নীতি নিয়েও। নানা মহলের সমালোচনা সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রীর মরিসনের বক্তব্য, অস্ট্রেলিয়ার পরিবেশ নীতিতে কোনও গলদ নেই। যেখানে বিরোধীদের অভিযোগ জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে বিশ্বজোড়া উদ্বেগ সত্ত্বেও কোনও হেলদোল নেই এই সরকারের। তাই ফল ভোগ করতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।
এমএস/এসি