ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

দলে থাকলে পাকিস্তান সফরে যেতেন মাশরাফি

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:২৫ পিএম, ১০ জানুয়ারি ২০২০ শুক্রবার

মাশরাফি বিন মর্তুজা কৌশিক

মাশরাফি বিন মর্তুজা কৌশিক

দিনক্ষণ ঘনিয়ে এলেও বাংলাদেশের পাকিস্তান সফর নিয়ে এখনও চলছে চরম অনিশ্চয়তা। এরইমধ্যে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি খেলা চালিয়ে গেলে পাকিস্তান সফরে যেতেন বলেই জানিয়েছেন বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। 

আজ (১০ জানুয়ারি) বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল)-এ ঢাকা প্লাটুন ও রংপুর রেঞ্জার্সের ম্যাচ শেষে বাংলাদেশ দলের অনিশ্চিয়তায় দুলতে থাকা পাকিস্তান সফর নিয়ে এমন কথা বলেন মাশরাফি। তিনি বলেন, ‘পরিবারের সাথে কথা বলে সিদ্বান্ত নিয়ে আমি পাকিস্তান সফরে যেতাম।’

২০০৯ সালের পর থেকে টেস্ট খেলছেন না মাশরাফি। ২০১৭ সালের এপ্রিলে টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নেন দেশ সেরা এই অধিনায়ক। তবে এখনও ওয়ানডে দলের নিয়মিত অধিনায়ক তিনি। 

এদিকে বর্তমানে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা বাংলাদেশ দলের পাকিস্তান সফরে রয়েছে দু’টি টেস্ট ও তিনটি টি-টোয়েন্টি। যদিও এ সফরে নেই কোনও ওয়ানডে ম্যাচ। তাই পাকিস্তান সফর নিয়ে কোনও মাথাব্যাথা নেই মাশরাফির। কিন্তু আসন্ন পাকিস্তান সফর নিয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেট সরগরম। বাংলাদেশ কি পাকিস্তান সফরে যাচ্ছে-কি যাচ্ছে না! তা এখনও নিশ্চিত নয়।

তারপরও এদিন পাকিস্তান সফর নিয়ে প্রশ্ন শুনতে হলো মাশরাফিকে। টেস্ট, টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে খেললে কি পাকিস্তান সফরে যেতেন? এমন প্রশ্নের জবাবে মাশরাফি বলেন , ‘সত্যিই যদি জানতে চান তাহলে আমি বলবো, আমি পাকিস্তানে যেতাম।’

তবে পরিবারের সাথে আলোচনা করে তবেই। মাশরাফি বলেন, ‘অবশ্যই পরিবারের সাথে আলাপ-আলোচনা করতাম। জানি না পরিবার কি বলতো। কারণ, এই প্রথম এ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। আমার পরিবারের সিদ্ধান্তে যদিও অনেক কিছু নির্ভর করে। পরিবার আপত্তি না করলে আমি অবশ্যই যেতাম।’

অবশ্য কিছুদিন আগে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন জানান, পাকিস্তান সফরে কোচিং স্টাফরা ও মুশফিকুর রহিম যেতে চান না। তবে প্রধান কোচের সঙ্গে কিছু খেলোয়াড় যেতে চাইলেও তা স্বল্প সময়ের জন্য।

বিষয়টি প্রসঙ্গে পরিস্কার করে দেশের সফল এই অধিনায়ক বলেন, ‘আমি যেতাম বলেই যে যারা যাচ্ছেন না তারা ভুল করছে, এমন ভাবার সুযোগ নেই। দলের কেউ যদি যেতে না চায়, সেটা একান্তই তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। তাদের যুক্তি অবশ্যই আছে। অবশ্যই খেলার থেকে জীবন সবার আগে। সবারই ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত রয়েছে। আর যেহেতু যাওয়ার ব্যাপারে কোনও বাধ্যবাধকতা নেই, তাই যে যেমন সিদ্ধান্তই নিক, তারা প্রত্যেকেই নিজেদের জায়গায় ঠিক আছে।’

এদিকে, পাকিস্তান সিরিজের সূচি এখনও চূড়ান্ত না হলেও হয়তো আগামী ১৩ জানুয়ারি মিলতে পারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। তবে স্বল্প সময়ের জন্য হলেও পাকিস্তান সফরে যাওয়ার জোরালো সম্ভাবনা আছে টাইগারদের। 

যদিও শুরু থেকেই এ সফরে কেবল তিনটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার পক্ষে মত দিয়েছে বিসিবি। তবে পাকিস্তান চায় পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলতে। আর এ নিয়েই এখন দুই ক্রিকেট বোর্ডের মধ্যে চলছে তুমুল আলোচনা।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ দল সর্বশেষ পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলতে পাকিস্তান সফর করেছিল সেই ২০০৮ সালে। এরপরের বছর মার্চে লাহোর টেস্টের তৃতীয় দিনে হোটেল থেকে মাঠে যাওয়ার পথে শ্রীলঙ্কা দলকে বহনকারী বাসে সন্ত্রাসী হামলা হয়। তাতে আহত হয়েছিলেন বেশ কয়েক জন লঙ্কান ক্রিকেটার। এরপর জরুরী ভিত্তিতে দেশ ছেড়েছিল লঙ্কান দলটি। সেই থেকে নিজদের হোম ভেন্যু হিসেবে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে বেছে নিয়েছিল পাকিস্তান। এরপর টানা ছয় বছর তো কোন ধরণের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটই হয়নি দেশটিতে।

এর ১০ বছর পর গত সেপ্টেম্বর-অক্টোবরেই পাকিস্তানে তিনটি করে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে এসেছে শ্রীলঙ্কা। তাতে প্রথম সারির খেলোয়াড় ছিল ১০ জন। সে সফর শেষে ফের ডিসেম্বরে টেস্ট খেলতে যায় দলটি। তখন থেকেই বাংলাদেশ দলকে পাকিস্তানে যাওয়ার জন্য চাপ দিয়ে যাচ্ছে পিসিবি।

এনএস/