ঘুমের মধ্যে নিঃশ্বাস বন্ধ হওয়ার মূল কারণ জিহ্বার চর্বি
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১২:৫৪ পিএম, ১১ জানুয়ারি ২০২০ শনিবার
ঘুমন্ত অবস্থায় হঠাৎ নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যায় অনেকের। ঘুম ভেঙে তারা হাসফাস করতে থাকেন। পানিটানি খেয়ে অনেকক্ষণ পর কিছুটা স্বাভাবিক অবস্থায় আসেন। বিজ্ঞানের ভাষায় একে বলে 'স্লিপ অ্যাপনিয়া'। এই অবস্থাটি অনেকের জন্য ভয়াবহ একটি অভিজ্ঞতা।
গবেষকরা বলছেন, ঘুমন্ত অবস্থায় নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ার সমস্যা বা স্লিপ অ্যাপনিয়ার কারণ হতে পারে জিহ্বায় বাড়তি চর্বি বা মোটা জিহ্বা। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এমন ধারণা পাওয়া যাচ্ছে।
নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়া ছাড়াও স্লিপ অ্যাপনিয়ায় ভোগা ব্যক্তিরা ঘুমের মধ্যে জোরে নাক ডাকেন বেশি। তাদের নিঃশ্বাসে উঁচু শব্দ যুক্ত হতে পারে এবং অনেক সময় নিঃশ্বাস না নিতে পারার কারণে ঘুমের মধ্যে তাদের শরীর ঝাঁকুনি দিয়ে ওঠে। এসব কারণে তাদের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে, পরবর্তীতে যা অনেক বড় সমস্যা তৈরি করতে পারে। এসব রোগীদের অনেকেরই তাই পরদিন ঘুম ঘুম ভাব থাকে।
গবেষকরা বলছেন, স্থূলকায় ব্যক্তিদের মধ্যে বাড়তি চর্বিযুক্ত জিহ্বা বেশি পাওয়া যায়। তবে স্লিপ অ্যাপনিয়ার রোগীরা শরীরের ওজন কমালে সেই সঙ্গে জিহ্বা থেকেও চর্বি কমে যায়। আর তাতে স্লিপ অ্যাপনিয়া রোগটি অনেকটাই কমে আসে।
তবে স্থূলকায় না হলেও অনেকের চর্বিযুক্ত জিহ্বা হতে পারে। তারাও এই সমস্যায় ভোগেন। গবেষকরা খোঁজার চেষ্টা করছেন এমন খাবার যা জিহ্বায় কম চর্বি যোগ করে।
গবেষকরা বলছেন, এটা হতে পারে জন্মগত অথবা পারিপার্শ্বিক কোন কারণে। তবে জিহ্বায় চর্বি যত কম হবে, ঘুমের মধ্যে সমস্যা তৈরি করার সম্ভাবনা তত কম হবে। স্লিপ অ্যাপনিয়ার অন্যতম একটি বিষয় হল ঘুমন্ত অবস্থায় শ্বাসনালীর উপরের দিক আংশিক অথবা পুরোটা আটকে যাওয়া। যাদের ওজন বেশি অথবা ঘাড় ও টনসিল বড় তাদের এতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
গবেষকরা ৬৭ জন স্থূলকায় লোকের উপর গবেষণা করে দেখেছেন, তারা শরীরের ওজন ১০ শতাংশ কমানোর পর তাদের স্লিপ অ্যাপনিয়ার লক্ষণগুলো ৩০ শতাংশ কমে গেছে। ওজন কমার পর তাদের শ্বাসনালীর উপরের অংশের আকার পরীক্ষা করে এই পরিবর্তনের ব্যাপারে বুঝতে সক্ষম হয়েছেন গবেষকরা।
ওজন কমার কারণে চোয়ালের মাংসপেশিও কমে যায়। চোয়ালের মাংসপেশি শ্বাসনালীর দুইপাশের অংশ নিয়ন্ত্রণ করে। তাই চোয়ালের মাংসপেশি কমে যাওয়াতেও উপকার পাওয়া যায়।
ব্রিটিশ লাঙ ফাউন্ডেশনের ড. নিক হপকিনস বলছেন, ওজন কমানোর মাধ্যমে শ্বাসনালীর উপরের অংশ সরু হয়ে যাওয়া ঠেকানো যায়। কিন্তু জিহ্বার চর্বি কমানোর তেমন সুনিশ্চিত কোন পদ্ধতি নেই। তাই এই সমস্যায় যারা ভোগেন তাদের জন্য এখনই কোন কার্যকর সমাধান এই গবেষণায় নেই।
সূত্র : বিবিসি
এএইচ/