ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ২০ ১৪৩১

সন্দ্বীপে কোস্টগার্ড জাল পোড়ানোয় জেলেদের বিক্ষোভ 

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:১৭ পিএম, ১২ জানুয়ারি ২০২০ রবিবার | আপডেট: ১০:২৪ পিএম, ১২ জানুয়ারি ২০২০ রবিবার

সন্দ্বীপে মেঘনার মোহনায় মাছ ধরা অবস্থায় কোস্টগার্ড কর্তৃক জেলেদের জাল পোড়ানো ও শারীরিকভাবে নির্যাতনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে স্থানীয় জেলেরা। সন্দ্বীপ সারিকাইত ইউনিয়নের নির্যাতিত জেলেরা আজ রোববার প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ করে। 

মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ঘোষণা অনুযায়ী বেহুন্দি বা বিন্দি জাল ও অন্যান্য অবৈধ জাল অপসারণের জন্য রোববার কোষ্টগার্ডসহ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার নেতৃত্বে সারিকাইত ইউনিয়নের পাশের নদীতে কোন প্রচারনা বিহীন হঠাৎ অভিযান চালানো হয়। অভিযানে কয়েকটি বেহুন্দি জাল আটক করে তা পোড়াতে চাইলে স্থানীয় জেলেরা মৎস কর্মকর্তার কাছে জাল না পোড়ানোর অনুরোধ করেন। কিন্তু তাদের অনুরোধ রক্ষা না করায় পরে জেলেরা একত্রিত হয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে  অভিযানের টিম সারিকাইত ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের অস্থায়ী কন্টিনজেন্ট অফিসে অবস্থান নেন।

বিক্ষোভ মিছিলে প্রায় পাঁচ শতাধিক জেলে একত্রিত হয়ে এই বিক্ষোভ করে। সংবাদ পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিদর্শী সম্বৌধী চাকমা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন এবং তাৎক্ষণিক বিশৃঙ্খলা এড়াতে ইউনিয়ন পরিষদের সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেন।

জেলেদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফখরুল ইসলাম পনির উপস্থিত জেলে ও পরে জেলে পাড়ায় গিয়ে ভুক্তভোগী জেলেদের কথা শুনেন। পরে বিক্ষোভকারী জেলেদের প্রতিনিধিদের সাথে বৈঠক করেন। বৈঠকে জেলেরা প্রচারনা বিহীন অভিযানে বিচার দাবী সহ সরকার ঘোষিত মাছ ধরা বন্ধের মৌসুমে পর্যাপ্ত সরকারি সুবিধা এবং মৎসজীবী কার্ডের দাবী তোলেন। একইসাথে প্রকৃত জেলেদের বাদ দিয়ে ভুয়া জেলে কার্ড প্রদান বন্ধ করাসহ বিভিন্ন সময় কোষ্টগার্ড কর্তৃক শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ তোলেন। 

সারিকাইতের জেলে সর্দার শংকর জলদাশ বলেন, আমরা লোনের টাকা নিয়ে নদীতে জাল ফেলেছি। অবরোধের সময় আমরা সরকারের আদেশ মেনে মাছ ধরা বন্ধ রাখি কিন্তু বন্ধের সময় সরকারি সুযোগ সুবিধা পাইনা। তখন আমাদের না খেয়ে থাকতে হয়। লোনের টাকার জন্য বিভিন্ন ঋন দানকারী সংস্থা বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো মামলা দিয়ে জেলে পুরে দেয়। এছাড়াও সন্দ্বীপের বেশীরভাগ মৎসজীবী কার্ড ভুয়া। চেয়ারম্যান মেম্বাররা জেলেদের বাদ দিয়ে তাদের অনুসারী লোকজনকে কার্ড করে দিয়েছে। আবার অনেকসময় কোষ্টগার্ডের লোকজন আমাদের জেলেদের থেকে জোর করে মাছ নিয়ে যায়, চাঁদা দাবী করে। টাকা না দিলে আমাদের মেরে নদীতে ফেলে দেয়। 

বৈঠকে উপস্থিত কোষ্টগার্ডের কন্টিনজেন্ট কমান্ডার অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, কোষ্টগার্ডের কেউ যদি অন্যায় ভাবে জেলেদের উপর কোন অপরাধ করে তবে তার অভিযোগ পেলে সাথে সাথে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জানানো হবে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।  

উপজেলা মৎস কর্মকর্তা মো. এমদাদুল হক ভু্য়া কার্ড বন্ধ করে বাদ যাওয়া মৎসজীবীদের কার্ডের আওতায় আনার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস প্রদান করেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিদর্শী সম্বৌধী চাকমা বলেন, আমরা জেলেদের বুঝিয়ে তাদের বিক্ষোভ বন্ধ করেছি। সবাইকে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে হবে। সরকার যেসব জাল গুলো নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে জেলেরা তা ব্যাবহার বন্ধ করে মাছের প্রজনন ব্যাহত হবেনা এমন জাল দিয়ে মাছ শিকার করতে হবে।

কেআই/এসি