সাংবিধানিক পরির্বতন: রুশ সরকারের পদত্যাগ
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১০:২৭ পিএম, ১৫ জানুয়ারি ২০২০ বুধবার | আপডেট: ১০:৪৯ পিএম, ১৫ জানুয়ারি ২০২০ বুধবার
সংবাদ সম্মেলনে দিমিত্রি মেদভেদেভ (বাঁ দিকে) ও ভ্লাদিমির পুতিন- এপি
রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিন পার্লামেন্টে সংবিধান পরিবর্তনের পরিকল্পনা ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছে রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদেভ।
বুধবার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি বলেন, প্রেসিডেন্টের প্রস্তাবিত পরিকল্পনা দেশের ক্ষমতার ভারসাম্যে ব্যাপক পরিবর্তন আনবে। আর সেকারণেই বর্তমান কাঠামোর পুরো সরকার পদত্যাগ করছে। তবে নতুন সরকার নিয়োগের আগে নিজের দীর্ঘদিনের মিত্র মেদভেদেভকে সরকার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছেন পুতিন। খবর আল জাজিরা’র।
পুতিন বুধবার জাতির উদ্দেশে এক ভাষণে বলেন, ‘রাশিয়ায় বড় ধরনের সাংবিধানিক পরিবর্তনের প্রয়োজন। প্রধানমন্ত্রীসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদের নির্বাচনে পার্লামেন্টকে ক্ষমতা দেয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। দেশের সাংবিধানিক পরিবর্তনের জন্য গণভোটেরও প্রস্তাব করা হয়েছে।’
প্রস্তাবে প্রেসিডেন্টের থেকে প্রধানমন্ত্রীকে বেশি ক্ষমতা দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। এই প্রস্তাব বাস্তবায়নে প্রয়োজনে দেশব্যাপী গণভোটও চেয়েছেন পুতিন। তবে সমালোচকদের দাবি ২০২৪ সালে বর্তমান মেয়াদ শেষের পরেও ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকতেই এই পরিবর্তন আনার পরিকল্পনা নিয়েছেন তিনি। ঐ প্রস্তাবের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদেভের সঙ্গে এক বৈঠকে অংশ নেন পুতিন।
টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ওই বৈঠকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়ে মেদভেদেভ বলেন, ‘পরিবর্তন বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় সব ধরনের পদক্ষেপ নিতে আমাদের দেশের প্রেসিডেন্টকে সুযোগ দেওয়া উচিত। পরবর্তী সব সিদ্ধান্ত প্রেসিডেন্ট নেবেন।’
রাশিয়ার সংবিধান অনুযায়ী, দেশটিতে কেউ দুই মেয়াদের বেশি প্রেসিডেন্ট থাকতে পারবেন না। ফলে ২০২৪ সালে মেয়াদ শেষ হওয়ার পর পুতিন বর্তমান সংবিধানের অধীনে আর রাশিয়ার নেতা থাকতে পারবেন না। তাই সংবিধান পরিবর্তনের এমন প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি।
রাশিয়ার স্থানীয় দৈনিক দ্য মস্কো টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, সংবিধানের এই আমূল পরিবর্তনের মাধ্যমে পুতিন ভবিষ্যতে আবার রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় আসছেন। পুতিনের সমালোচকদের দাবি, অতীতের মতো সংবিধান সংশোধন করে ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকতেই এ পরিবর্তন আনার পরিকল্পনা তার।
প্রসঙ্গত, ২০০৮ সাল পর্যন্ত রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট থাকার পর সংবিধান সংশোধন করে প্রেসিডেন্টের চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা বাড়িয়ে একই বছর রুশ প্রধানমন্ত্রী হন পুতিন। প্রেসিডেন্ট করেন দিমিত্রি মেদভেদেভকে। তারপর ২০১২ ও ২০১৮ সালে পুনরায় প্রেসিডেন্ট হন যার মেয়াদ শেষ হবে ২০২৪ সালে। ১৯৯৯ সালে তৎকালীন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট বরিস ইয়েলৎসিন পুতিনকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত করেন। অনেক রুশ তখন জানত না কে এই পুতিন। তার কয়েক মাস পর ইয়েলৎসিন অনেকটা নাটকীয়ভাবে পুতিনকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে স্থলাভিষিক্ত করেন।
তারপর থেকে প্রায় দুই দশক ধরে পুতিন রাশিয়ার নেতা। ২০২৪ সালে মেয়াদ শেষ হতে যাওয়া পুতিনের প্রেসিডেন্ট পদে থাকা না থাকা নিয়ে খোদ রাশিয়া এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নানা রকম গুঞ্জন চলছে। তবে নতুন সরকার গঠন না হওয়া পর্যন্ত বর্তমান সরকারই ক্ষমতায় থাকবে।
এমএস/এসি