ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

কুড়িগ্রামে পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়াই ১৮টি অবৈধ ইটভাটা

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: 

প্রকাশিত : ১০:১৫ পিএম, ১৬ জানুয়ারি ২০২০ বৃহস্পতিবার

কুড়িগ্রামের উলিপুরে ২৬টি ইটভাটার মধ্যে ১৮টি অবৈধ, ৩টি উচ্চ আদালতে রিট করে টিকে আছে। এর মধ্যে বৈধতা রয়েছে মাত্র ৫টির। কৃষিজমি ডোবা বানিয়ে লাইসেন্স ও পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়াই যত্রতত্রভাবে গড়ে উঠেছে এসব ইটভাটা। ভাটা আইনের সকল নিয়মনীতিকে তোয়াক্কা না করে দেদারসে পোড়ানো হচ্ছে ইট। 

ভাটা নির্মাণের কারণে কমেছে কৃষিজমি, হ্রাস পেয়েছে উৎপাদন এবং সেই সঙ্গে পরিবেশ বিপর্যয়সহ বৈচিত্র্য মারাত্মক হুমকিতে পড়েছে। তবে ভাটাগুলো অবৈধভাবে বছরের পর পরিচালিত হয়ে আসলেও অজ্ঞাত কারণে স্থানীয় প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছেন। 

গত মঙ্গলবার এসব অনুমোদনহীন ইটভাটায় ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের জানজায়গীর এলাকায় আতাউর রহমানের এফ বি ব্রিকসে ১ লাখ টাকা, ধরনীবাড়ী ইউনিয়নের জাহিদুল ইসলাম জুয়েলের জেএমএইচ ব্রিকসে ৫০ হাজার টাকা ও ধামশ্রেনী ইউনিয়নের মফিজল হক জর্দার এইচ এম ব্রিকসে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। 

এ সময় ৩টি ইটভাটার মালিক পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র এবং জেলা প্রশাসন কর্তৃক প্রদেয় সনদসহ ইট পোড়ানোর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখাতে ব্যর্থ হওয়ায় ভাটাগুলোতে জরিমানাসহ প্রস্তুতকৃত কাঁচা ইট পানি দিয়ে নষ্ট করে দেওয়া হয়। নীতিমালায় অকৃষি, পতিত, ডোবা ও জনবসতিহীন ফাঁকা জমিতে ইটভাটা তৈরির নিয়ম থাকলেও সকল আইন ভঙ্গ করে কৃষিজমি, জনবসতিপূর্ণ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাশেই এ সব ইটভাটা গড়ে উঠেছে। 

ভূমি অফিস কৃষিজমিকে বানাাচ্ছে ডোবা, কৃষি বিভাগ ফসলি জমিকে দেখাচ্ছে অকৃষি জমি, স্বাস্থ্য বিভাগ জনবসতিপূর্ণ এলাকা হলেও প্রত্যয়ন দিচ্ছে স্বাস্থ্যহানী হবে না, চেয়ারম্যান প্রত্যয়ন করছে পরিবেশের ক্ষতি হবে না। এভাবে অনৈতিক পদ্ধতিতে যত্রতত্র ইটভাটার সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। সূত্র জানায়, অনুমোদনহীন ভাটাগুলো হচ্ছে মেসার্স মোল্লা ব্রিকস, মেসার্স জেএইচ ব্রিকস, মেসার্স এইচএম ব্রিকস, মেসার্স এমএনবি ব্রিকস, এমএফবি ব্রিকস ১, এমএফবি ব্রিকস ২, এমএফবি ব্রিকস ৩, এমএফবি ব্রিকস, এইচএফবি ব্রিকস, মেসার্স একেএম ব্রিকস, মেসার্স এসএন ব্রিকস, এ আর ব্রিকস, এসএফ ব্রিকস, মেসার্স এসএমবি ব্রিকস, মেসার্স ডিএস ব্রিকস, মেসার্স কেডিএস ব্রিকস, মেসার্স স্টার ব্রিকস, মেসার্স আর এমবি ব্রিকস। 

এ ছাড়াও সর্বশেষ উপজেলার ধামশ্রেনী কুড়ারপাড়ে এমএনবি ইটভাটা গড়ে ওঠে। উচ্চ আদালতে রিট করে টিকে আছে মেসার্স এইচএম ব্রিকস, মেসার্স এইচ বি ইউ ব্রিকস, মেসার্স এস এ ব্রিকস। এর মধ্যে বৈধতা রয়েছে মাত্র ৫টির। সেগুলো হলো মেসার্স এসএ ব্রিকস, মেসার্স এ এস ব্রিকস, মেসার্স জেএমএইচ ব্রিকস, মেসার্স এম এস ব্রিকস, মেসার্স এসএম ব্রিকস। এমএনবি ইটভাটার পরিচালক রফিকুল ইসলাম বলেন, পরিবেশ ছাড়পত্র ও লাইসেন্স এর জন্য আবেদন করা হয়েছে। 

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাকিগুলো যেভাবে চলছে, এটাও সেভাবে চলছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুল কাদের বলেন, ভাটাগুলোর ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। রংপুর পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক কাজী সাইফুদ্দিন জানান, অবৈধভাবে যে সব ইটভাটা গড়ে উঠেছে। সেগুলোতে আমরা অভিযান চালাচ্ছি। এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।
    
আরকে//