ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

ভারতের রান বন্যা, ছুটছে অস্ট্রেলিয়া

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৭:৫৯ পিএম, ১৭ জানুয়ারি ২০২০ শুক্রবার

শিখর ধাওয়ান ও রোহিত শর্মা

শিখর ধাওয়ান ও রোহিত শর্মা

শিখর ধাওয়ান, লোকেশ রাহুল, বিরাট কোহলির দাপটে রান বন্যা বইয়ে দিয়ে বিশাল স্কোর গড়েছে ভারত। আজ রাজকোটে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সিরিজ বাঁচানোর ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে ভারত ছয় উইকেট হারিয়ে তুলল ৩৪০ রান। সিরিজ জিততে অ্যারন ফিঞ্চের দলকে করতে হবে ৩৪১ রান। 

এক কথায় রানের পাহাড় গড়েছে ভারত। আর সেই পাহাড়ে চড়তে গিয়ে শুরুতেই ডেভিড ওয়ার্নারের ক্যাচ এক হাতে নিয়ে বিধ্বংসী বাঁহাতিকে ফিরিয়েছেন মণীষ পাণ্ডে। প্রথম ওয়ানডেতে ওয়ার্নারের ব্যাট ঝলসে উঠেছিল। তিনি ও অ্যারন ফিঞ্চ সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে ম্যাচ জিতিয়েছিলেন। 

এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ২৩ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার রান ২ উইকেটে ১৩৮। ফিফটি করা স্মিথের সঙ্গে ২৯ রানে ক্রিজে রয়েছেন লাবুশানে।ফিঞ্চ ৩৩ রানে এবং ওয়ার্নার ১৫ রানে আউট হন। 

এদিন টস হেরে ব্যাট করতে নেমে রোহিত শর্মা ও শিখর ধাওয়ানের ব্যাটে বড় রানের ভিত গড়েছিল ভারত। প্রথম পাওয়ার প্লে-র ১০ ওভারে বিনা উইকেটে ৫৫ রান তুলেছিলেন দু’জনে। কিন্তু বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি রোহিত। ছয়টি চারে ৪৪ বলে ৪২ করে অ্যাডাম জাম্পার বলে হলেন এলবিডব্লিউ। রিভিউ নিয়েও রক্ষা পাননি হিটম্যান।

রোহিত ফেরেন পঞ্চাশের দোরগোড়া থেকে আর শিখর ফিরলেন সেঞ্চুরির দরজা থেকে। কেন রিচার্ডসনের বলে ৯৬ রানে ফাইন-লেগে সহজ ক্যাচ দিলেন মিচেল স্টার্ককে। ৯০ বলের ইনিংসে মারলেন ১৩টি চার ও একটি ছয়। এর আগে বিরাটের সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেটে ধাওয়ান যোগ করেন ১০৩ রান। 

তার আগেই অবশ্য মুম্বাইয়ের পর রাজকোটেও টানা দ্বিতীয় হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন শিখর ধাওয়ান। ৬০ বলে পঞ্চাশে পৌঁছান তিনি। ক্রমশ আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছিলেন এরপর। শতরান নিশ্চিতই দেখাচ্ছিল তার। কিন্তু তা ফেলে দিয়ে এলেন বাঁ-হাতি ওপেনার।

আগের ম্যাচের থেকে শিক্ষা নিয়ে এদিন তিন নম্বরে নেমেছিলেন বিরাট কোহলি। তাকেও দেখা গেল চেনা ছন্দে। সারাক্ষণ সচল রাখলেন স্কোরবোর্ড। ৫০ বলে পৌঁছলেন পঞ্চাশেই। অবশ্য এর কিছুক্ষণ পর ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে সীমানায় ক্যাচ দিয়ে আউট হলেন ৭৮ রানে। হলেন ফের অ্যাডাম জাম্পার শিকার। অ্যাশটন আগার লং-অফে ক্যাচ ধরে ভারসাম্য হারানোর সময় ছুড়ে দিলেন মিচেল স্টার্ককে। তার ৭৬ বলের ইনিংসে ছিল ছয়টি চার।

শিখর ফেরার পরই আউট হয়েছিলেন শ্রেয়াস আইয়ার। এই সিরিজটা ভাল গেল না তার। দুই ম্যাচেই ব্যর্থ হলেন শ্রেয়াস। লোকেশ রাহুলকে না নামিয়ে চারে এদিন তাকে সুযোগ দেয়া হয়েছিল তাকে। কিন্তু তিনি তা কাজে লাগাতে পারলেন না। ১৭ বলে মাত্র ৭ রান করে সেই অ্যাডাম জাম্পার বলেই বোল্ড হলেন। রান পেলেন না ছয়ে নামা মাণীশ পাণ্ডেও (২)। কোহলির আউটের পর কেন রিচার্ডসনের বলে অ্যাশটন আগারকে ক্যাচ দেন পাণ্ডে। 

এরপর পাঁচে নামা লোকেশ রাহুল অবশ্য আগ্রাসী ইনিংস উপহার দেন। ৩৮ বলে পৌঁছলেন পঞ্চাশে। শেষ ওভারে হলেন রানআউট। তার আগে ৫২ বলে ৮০ রানের ইনিংসে মারলেন ছয়টি চার ও তিনটি ছয়। সেইসঙ্গে একদিনের ক্রিকেট এদিন পেরিয়ে গেলেন হাজার রানের মাইলফলক। দুর্দান্ত ছন্দে আছেন রাহুল। 

একদিনের ক্রিকেট তার শেষ তিন ইনিংসের রান ছিল যথাক্রমে ১০২, ৭৭ ও ৪৭। সেই মেজাজেই ব্যাট করলেন এদিন। দেখিয়ে দিলেন, ওপেনিং না করলেও মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান হিসেবেও কতটা কার্যকরী হতে পারেন লোকেশ। ষষ্ঠ উইকেটে রবীন্দ্র জাদেজার সঙ্গে যোগ করলেন মূল্যবান ৫৮ রান। 
যা ভারতকে পৌঁছে দিল সাড়ে তিনশোর কাছাকাছি। যে পথে ১৬ বলে ২০ রানে অপরাজিত থাকলেন জাদেজা। অন্যদিকে, অস্ট্রেলিয়ার সফলতম বোলার জাম্পা (৩-৫০)। রিচার্ডসন নিলেন দুই উইকেট।

তার আগে, দুপুরে, মুম্বাইয়ের পর রাজকোটেও টস হেরেছিলেন বিরাট কোহলি। ফলে সিরিজের দ্বিতীয় একদিনের ম্যাচেও প্রথমে ব্যাটিং করতে হলো ভারতকে। যা চাপ বাড়াল দলের উপর। কারণ, রান তাড়া করতেই স্বচ্ছন্দ ভারত। 

এদিন প্রথম এগারোয় দুটো পরিবর্তন ঘটল ভারতীয় দলে। এলেন ব্যাটসম্যান মাণীশ পাণ্ডে ও পেসার নবদীপ সাইনি। দলে নেই মাথায় চোটের জন্য ছিটকে যাওয়া ঋষভ পন্ট ও পেসার শার্দুল ঠাকুর।

তিন ম্যাচের একদিনের সিরিজে ১-০ এগিয়ে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া। অ্যারন ফিঞ্চের দল আরব সাগরের পাড়ে সিরিজের প্রথম একদিনের ম্যাচে ১০ উইকেটে জিতেছিল। নিছক পরাজয় নয়, মঙ্গলবার কার্যত বিধ্বস্ত হয়েছিল টিম ইন্ডিয়া। শুক্রবার তাই ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াইয়ে নেমেছিলেন বিরাট কোহলিরা। 
কিন্তু কাজটা সোজা নয়। অস্ট্রেলিয়াকে অনেক তৈরি দেখাচ্ছে। তার উপর রাজকোটের নতুন স্টেডিয়ামে ভারতের পারফরম্যান্সও ভাল নয়। এই মাঠে এখনও পর্যন্ত ৫০ ওভারের ক্রিকেটে কখনও জেতেনি ভারত।

এনএস/