ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১৪ ১৪৩১

বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক উৎসবের ১৫তম দিনে কাবাডি খেলা 

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:৫৩ পিএম, ১৭ জানুয়ারি ২০২০ শুক্রবার

জাতীয় সংস্কৃতি ও কৃষ্টির উন্নয়ন, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও প্রসারের মাধ্যমে শিল্প-সংস্কৃতি ঋদ্ধ সৃজনশীল মানবিক বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি বহুমূখী সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করে চলেছে। তারই ধারাবাহিকতায় ৩ থেকে ২৩ জানুয়ারি ২০২০ দ্বিতীয়বারের মতো ‘বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক উৎসব ২০২০’ আয়োজন করেছে।

দেশের ৬৪টি জেলা, ৬৪টি উপজেলা এবং জাতীয় পর্যায়ের পাঁচ হাজারের অধিক শিল্পী ও শতাধিক সংগঠনের অংশগ্রহণে ২১ দিনব্যাপী একাডেমির নন্দনমঞ্চে এই শিল্পযজ্ঞ পরিচালিত হবে। ঐহিত্যবাহী লোকজ খেলা, লোকনাট্য ও সারাদেশের শিল্পীদের বিভিন্ন নান্দনিক পরিবেশনার মাধ্যমে সাজানো হয়েছে এই উৎসবের অনুষ্ঠানমালা। উৎসবে প্রতিদিন ৩টি জেলা, ৩টি উপজেলা, জাতীয় পর্যায়ের শিল্পী ও সংগঠনের পরিবেশনা থাকবে। এছাড়াও একাডেমি প্রাঙ্গণে প্রতিদিন রাত ৮টা থেকে একটি লোকনাট্য পরিবেশিত হবে। লোকনাট্য উপভোগ করতে টিকিটি বুকিংয়ের জন্য ভিজিট করুন facebook.com/shilpakalaPage

১৭ জানুয়ারি উৎসবের 15তম দিন বিকাল 3টায় একাডেমি প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয় নারায়নগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী কাবাডি খেলা, বিকাল 4টায় নন্দনমঞ্চে সাংস্কৃতিক পরিবেশনার শুরুতেই জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশিত হয়। এরপরে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির পরিবেশনায় অ্যাক্রোবেটিক প্রদর্শনী, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের পরিবেশনা। একক সঙ্গীত পরিবেশন করে শিল্পী প্রিয়াংকা রবি দাস, সমবেত সঙ্গীত পরিবেশন করে বাংলাদেশ সঙ্গীত সংগঠন সমন্বয় পরিষদ। কাজী হাবলুর পরিচালনায় স্পন্দন ব্যান্ড দল পরিবেশন করে স্কুল খুইলাছেরে মাওলা এবং মন তুই চিনলিনারে। 

হবিগঞ্জ জেলার পরিবেশনায় জেলা ব্রান্ডিং ভিডিও তথ্যচিত্র প্রদর্শনী, শোন একটি মুজিবরের থেকে এবং অধর মারিলো তোরে 2টি সমবেত সঙ্গীত পরিবেশন করে শিল্পী জয় দাস, পলাশ চৌধুরী, শুভ ভট্টাচায্য, নির্জন দাস, তিতু মিয়া, মেরিন, জয়শ্রী, শতাব্দী, প্রিয়শী ও স্বর্ণা। কোন মিস্ত্রী নাও বানাইলো এবং বাজেরে বাজে বাংলাদেশের ঢোল ২টি সমবেত নৃত্য পরিবেশন করে শিল্পী প্রবীর, ঐশী, রিধি, জীবন, কাশেম, জয়, গৌতম, মুন্নি, সাইফ ও জুঁই। একক সঙ্গীত পরিবেশন করে জাতীয় পর্যায়ের শিল্পী ঐশি মৃত্তিকা পর্না এবং উপজেলা পর্যায়ের শিল্পী প্রিয়ন্তী মোদক। এক সাগর রক্তের মিনিময়ে যন্ত্রে সুর তোলেন শিল্পী বিল্লাল আহমেদ, সুবির কান্ত রায় এবং হরিপদ দাস।

খুলনা জেলার পরিবেশনার শুরুতে জেলা ব্রান্ডিং ভিডিও তথ্যচিত্র প্রদর্শনী, ২টি সমবেত সঙ্গীত পরিবেশন করে শিল্পী অয়ন মজুমদার, চন্দন রায়, জয়কৃষ্ণ রায়, ইমন শাহরিয়ার, সুদীপ্ত সহলী, রকিবা খান লুবা, তাসফিয়া জামান, তিথি তরফদার, উর্মি আক্তার ও অরণি সরকার। 2টি সমবেত নৃত্য পরিবেশন করে শিল্পী রিফাত আকাশ, শরিফ মাসনুন, প্রিতিশ কুমার, অক্ষয় সাহা, এনামুল হক বাচ্চু, লিজা, রোদশী, নুপুর, মনিয়া ও ডলি। একক সঙ্গীত পরিবেশন করে জেলার জাতীয় পর্যায়ের শিল্পী এবং উপজেলা পর্যায়ের শিল্পী গুরুপদ গুপ্ত। যন্ত্রসঙ্গীত পরিবেশন করে শিল্পী সজল বিশ্বাস, অপূর্ব রায়, রতন বিশ্বাস, বুবুল বিশ্বাস, রুবেল মোড়ল এবং অনুপ ঘোষ।

দিনাজপুর জেলার পরিবেশনার শুরুতে জেলা ব্রান্ডিং ভিডিও তথ্যচিত্র প্রদর্শনী, আঞ্চলিক গান ‘বাংলাদেশের মানুষগুলো’ এবং ‘বাংলার হিন্দু বাংলার বৌদ্ধ’ ২টি সমবেত সঙ্গীত পরিবেশন করে শিল্পী সুজন কুমার, লক্ষী রায়, সরোয়ার হোসেন, দিপ্ত সরকার, চিন্ময় রায় ও ফাল্গুনি বিশ্বাস, মিতুল, সাবিত্রী, তন্নি ও স্বপ্না। নৃত্য আলেখ্য (ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠী ও মুক্তিযুদ্ধ) পরিবেশন করে শিল্পী ইতি, ইম্মাকুলতা কুহেলী, রুমী, খ্রীস্টিনা, পিংকি, প্লাবন, জিগার, পল্লব, হেলাল ও আলম। একক সঙ্গীত পরিবেশন করে জাতীয় পর্যায়ের শিল্পী এটি এম জাহাঙ্গীর এবং উপজেলা পর্যায়ের শিল্পী দুলাল বসাক। যদি বন্ধু যাবার চাও গানের কথায় যন্ত্রে সুর তোলেন শিল্পী পলাশ দাস, বিষ্ণু, রানা পন্ডিত ও মহাবি দাস।

সবশেষে নেত্রকোনা জেলার পরিবেশনায় জেলা ব্রান্ডিং ভিডিও তথ্যচিত্র প্রদর্শনী, সমবেত সঙ্গীত, সমবেত নৃত্য, একক সঙ্গীত এবং যন্ত্র সঙ্গীত পরিবেশিত হয়।

একাডেমি প্রাঙ্গণে রাত 8টায় দর্শনীর বিনিমেয়ে মঞ্চস্থ হয় মিলন পালাকার এর পরিচালনায় ‘গাজী কালুর কিচ্ছা’। বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন মিলন বয়াতি, মোয়াজ্জল, ফয়সাল, হরজত ও আলতু মিয়া।

আগামীকাল ১৮ জানুয়ারি ২০২০ বিকেল ৪টা থেকে একাডেমির নন্দনমঞ্চে পরিবেশিত হবে সিলেট, বরিশাল ও নাটোর জেলার সাংস্কৃতিক পরিবেশনা এবং রাত ৮টায় একাডেমি প্রাঙ্গণে দর্শনির মিনিময়ে অনুষ্ঠিত হবে ঐতিহ্যবাহী লোকনাট্য ‘কিশোরগঞ্জের পালা গান’।

বাংলাদেশ হাজার বছরের বর্ণিল ও বিচিত্র সংস্কৃতির অপরূপ লীলাভূমি। হাজার বছরের সেই ঐতিহ্যকে অবলম্বন করে আজও নিবিড় পরিচর্যার মাধ্যমে দেশব্যাপী পরিচালিত হচ্ছে আমাদের সাংস্কৃতিক কর্মযজ্ঞ। লোকজ সংস্কৃতি আমাদের অন্যতম শক্তি যা বিশ্বব্যাপী আমাদের স্বাতন্ত্রকে জানান দেয়। বাঙালি সংস্কৃতির রূপ, নির্মিত ও পরিবেশনা কৌশল আসলে মিশ্র প্রকৃতির; বিভিন্ন সময়ে পরিচালিত বিভিন্ন শাসনব্যবস্থা, ভাষা ও প্রকরণের সমন্বয় ঘটে আমাদের সংস্কৃতি আজকের জায়গায় পৌঁছেছে।

২১ দিনব্যাপী বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক উৎসবের পরিবেশনার মধ্যে রয়েছে সমবেত সংগীত, যন্ত্রসংগীত, ঐতিহ্যবাহী লোকজ খেলা, পালা, একক সংগীত, বাউল সংগীত, ঐতিহ্যবাহী লোকনাট্য, যাত্রা, সমবেত নৃত্য, অ্যাক্রোবেটিক, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের পরিবেশনা, পুতুল নাট্য, একক আবৃত্তি, শিশুদের পরিবেশনা, বঙ্গবন্ধু এবং মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সংগীত ও নৃত্য, নাটকের কোরিওগ্রাফি, বৃন্দ আবৃত্তি, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠি সম্প্রদায়ের পরিবেশনা, আঞ্চলিক ও জেলা ব্রান্ডিং বিষয়ক সংগীত ও নৃত্য এবং জেলার ঐতিহ্যবাহী ভিডিও চিত্র প্রদর্শনী।’

আরকে//