ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১৪ ১৪৩১

বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক উৎসবের ১৬তম দিনে পালা গান 

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:৪৪ পিএম, ১৮ জানুয়ারি ২০২০ শনিবার

জাতীয় সংস্কৃতি ও কৃষ্টির উন্নয়ন, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও প্রসারের মাধ্যমে শিল্প-সংস্কৃতি ঋদ্ধ সৃজনশীল মানবিক বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি বহুমূখী সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করে চলেছে। তারই ধারাবাহিকতায় ৩ থেকে ২৩ জানুয়ারি ২০২০ দ্বিতীয়বারের মতো ‘বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক উৎসব ২০২০’ আয়োজন করেছে। দেশের ৬৪টি জেলা, ৬৪টি উপজেলা এবং জাতীয় পর্যায়ের পাঁচ হাজারের অধিক শিল্পী ও শতাধিক সংগঠনের অংশগ্রহণে ২১ দিনব্যাপী একাডেমির নন্দনমঞ্চে এই শিল্পযজ্ঞ পরিচালিত হবে। ঐহিত্যবাহী লোকজ খেলা, লোকনাট্য ও সারাদেশের শিল্পীদের বিভিন্ন নান্দনিক পরিবেশনার মাধ্যমে সাজানো হয়েছে এই উৎসবের অনুষ্ঠানমালা। উৎসবে প্রতিদিন ৩টি জেলা, ৩টি উপজেলা, জাতীয় পর্যায়ের শিল্পী ও সংগঠনের পরিবেশনা থাকবে। এছাড়াও একাডেমি প্রাঙ্গণে প্রতিদিন রাত ৮টা থেকে একটি লোকনাট্য পরিবেশিত হবে।

১৮ জানুয়ারি উৎসবের ১৬তম দিন বিকাল ৪টায় নন্দনমঞ্চে সাংস্কৃতিক পরিবেশনার শুরুতেই জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশিত হয়। এরপরে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির পরিবেশনায় অ্যাক্রোবেটিক প্রদর্শনী, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের পরিবেশনা। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি উচ্চাঙ্গ সংগীত শিল্পীদের পরিবেশনায় সমবেত উচ্চাঙ্গ সংগীত, একক আবৃত্তি পরিবেশন করে শিল্পী এস এম মহসিন, সমবেত সংগীত পরিবেশন করে বাংলাদেশ রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী সংস্থা, গোলাম সারোয়ার এবং মীর বরকত এর পরিচালনায় বৃন্দ আবৃত্তি পরিবেশন করে কন্ঠশীলন এবং অন্তর দেওয়ান এর পরিচালনায় সমবেত নৃত্য পরিবেশিত হয়।

সিলেট জেলার পরিবেশনায় জেলা ব্রান্ডিং ভিডিও তথ্যচিত্র প্রদর্শনী, পার্থ প্রতিম দাস এর নৃত্য পরিচালনায় ‘আবার আসিব ফিরে’ নৃত্যালেখ্য পরিবেশন করে শিল্পী মিথিলা চৌধুরী শৈলী, জ্যোতি সোম নুপুর, উপাসনা চৌধুরী মেধা, প্রিয়া চন্দ, সুপ্রিয়া সরকার, জাওয়াতা আফনান রোজা, অনন্যা মনির লামিয়া, সারাফ ওয়ামিয়া রহমান, নিঝুম রায় সুইটি এবং ডেইজী ঘোষ। পূর্ণিমা দত্ত রায় এবং প্রতীক এন্দ এর পরিচালনায় শাহ আব্দুল করিমের গান ‘কোন মেস্তরী নাও বানাইলো এবং রাধারমণ দত্তের গান ‘জলে যাইওনা গো’ ২টি সমবেত সংগীত পরিবেশন করে শিল্পী বিপ্লব দেবনাথ, সজীব কান্তি দাস, সিমন সায়ন চৌধুরী, সুমাইয়া ইসলাম শোভা, তাসনোভা জহির মেঘলা, তন্নী রায়, শ্রাবন্তী ধর, অনুপমা বনিক, প্রিতম সুত্রধর এবং অয়ন পাল অপু। যন্ত্রে আঞ্চলিক লোকগানের সুর তোলেন শিল্পী প্রতীক এন্দ, নৃপন্দ্র দেব লনু, কৃতি সুন্দর দাস এবং প্রণয় দাস। একক সংগীত পরিবেশন করে জাতীয় পর্যায়ের শিল্পী আকরামুল ইসলাম এবং উপজেলা পর্যায়ের শিল্পী পংকজ দেব।

বরিশাল জেলার পরিবেশনার শুরুতে জেলা ব্রান্ডিং ভিডিও তথ্যচিত্র প্রদর্শনী, ‘বাংলার হিন্দু বাংলার বৌদ্ধ, এবং বরিশালের আঞ্চলিক গান ‘বরিশালে আইয়ো বন্ধু আইয়ো মোগো বাড়ি’ ২টি সমবেত সংগীত পরিবেশন করে শিল্পী মৈত্রী ঘরাই, রিমি সাব্বীর, রফিকুল ইসলাম, কাজী মামুন, জহুরুল হাসান, তরিকুল ইসলাম, কমল ঘোষ, রিয়া বর্মণ, সুপ্রভা সরদার, দেবপ্রিয় কুন্ড এবং নিক্কন বিশ্বাস। এস আই শফিক এর নৃত্য পরিচালনায় ‘ধান নদী খাল, এই তিন মিলে বরিশাল এবং পলাশী থেকে অগ্রযাত্রা’ ২টি সমবেত নৃত্য পরিবেশন করে শিল্পী শফিক সুজন, গোপাল, অনামিকা, অনন্যা, তুলি, রূপকথা, ফারজানা, ঐশি ও ফারাবি। একক সংগীত পরিবেশন করে জাতীয় পর্যায়ের শিল্পী জহুরুল হাসান সোহেল এবং উপজেলা পর্যায়ের শিল্পী মৈত্রী ঘরাই। যন্ত্রসংগীত পরিবেশন করে শিল্পী নিক্কন চৌধুরী।

নাটোর জেলার পরিবেশনার শুরুতে জেলা ব্রান্ডিং ভিডিও তথ্যচিত্র প্রদর্শনী, ‘নাটোর আমাদের ঐতিহাসিক স্মৃতির প্রিয় আবাসভূমি এবং আমৃত্যু সংগ্রামী চেতনার ব্যক্তিত্ব’ ২টি সমবেত সংগীত পরিবেশন করে শিল্পী মাসমিয়া রহমান উপমা, পদ্ম ইয়াসমিন, রুকাইয়া জাহান, অন্বেষা কর্মকার, পিয়ালী ধর, সজল রায়, ইশতিয়াক মাহমুদ, রনী দে, সাদমান সাকিব এবং শাহরিয়ার হোসেন সিমান্ত। ‘পুবের আকাশে সূযের হাসি এবং মানবো না বন্ধনে, মানবো না শৃক্ষলে’ ২টি সমবেত নৃত্য পরিবেশন করে শিল্পী সৌরভ, মাহফুজ, শান্ত, ইন্না, বৃষ্টি, পপি, নিতু, পূজা,  তোওফা এবং মৌ। একক সংগীত পরিবেশন করে জাতীয় পর্যায়ের শিল্পী মোঃ ফরিদুল ইসলাম এবং উপজেলা পর্যায়ের শিল্পী মোঃ আব্দুল আওয়াল। যন্ত্রসঙ্গীত পরিবেশন করে শিল্পী মোঃ আব্দুল আওয়াল, মোঃ জাহিদুল ইসলাম, মোঃ জাহাঙ্গীর আলম মিলন এবং শ্রী বাবুল দাস। 

একাডেমি প্রাঙ্গণে রাত ৮টায় দর্শনীর বিনিমেয়ে মঞ্চস্থ হয় কিশোরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী ‘পালা গান’। আগামীকাল ১৯ জানুয়ারি ২০২০ বিকেল ৪টা থেকে একাডেমির নন্দনমঞ্চে পরিবেশিত হবে ফরিদুপুর, নোয়াখালী ও শেরপুর জেলার সাংস্কৃতিক পরিবেশনা এবং রাত ৮টায় একাডেমি প্রাঙ্গণে দর্শনির মিনিময়ে অনুষ্ঠিত হবে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী লোকনাট্য ‘ঝান্ডির গান’।

বাংলাদেশ হাজার বছরের বর্ণিল ও বিচিত্র সংস্কৃতির অপরূপ লীলাভূমি। হাজার বছরের সেই ঐতিহ্যকে অবলম্বন করে আজও নিবিড় পরিচর্যার মাধ্যমে দেশব্যাপী পরিচালিত হচ্ছে আমাদের সাংস্কৃতিক কর্মযজ্ঞ। লোকজ সংস্কৃতি আমাদের অন্যতম শক্তি যা বিশ্বব্যাপী আমাদের স্বাতন্ত্রকে জানান দেয়। বাঙালি সংস্কৃতির রূপ, নির্মিত ও পরিবেশনা কৌশল আসলে মিশ্র প্রকৃতির; বিভিন্ন সময়ে পরিচালিত বিভিন্ন শাসনব্যবস্থা, ভাষা ও প্রকরণের সমন্বয় ঘটে আমাদের সংস্কৃতি আজকের জায়গায় পৌঁছেছে।

২১ দিনব্যাপী বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক উৎসবের পরিবেশনার মধ্যে রয়েছে সমবেত সংগীত, যন্ত্রসংগীত, ঐতিহ্যবাহী লোকজ খেলা, পালা, একক সংগীত, বাউল সংগীত, ঐতিহ্যবাহী লোকনাট্য, যাত্রা, সমবেত নৃত্য, অ্যাক্রোবেটিক, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের পরিবেশনা, পুতুল নাট্য, একক আবৃত্তি, শিশুদের পরিবেশনা, বঙ্গবন্ধু এবং মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সংগীত ও নৃত্য, নাটকের কোরিওগ্রাফি, বৃন্দ আবৃত্তি, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠি সম্প্রদায়ের পরিবেশনা, আঞ্চলিক ও জেলা ব্রান্ডিং বিষয়ক সংগীত ও নৃত্য এবং জেলার ঐতিহ্যবাহী ভিডিও চিত্র প্রদর্শনী।’

আরকে//