ঋণে সুদহার ৯ শতাংশের বাস্তবায়ন চায় ডিসিসিআই
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৫:৫২ পিএম, ২০ জানুয়ারি ২০২০ সোমবার | আপডেট: ০৬:০৫ পিএম, ২০ জানুয়ারি ২০২০ সোমবার
ব্যাংক ঋণে সুদহার ৯ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন দেখতে চায় ঢাকা চেম্বার অব কমার্স (ডিসিসিআই)। সংগঠনের সভাপতি শামস মাহমুদ বলেন, ৯ শতাংশ ব্যাংক ঋণের সুদহার বাস্তবায়ন এর আগেও বেশ কয়েকবার পিছিয়েছে। এটি নিয়ে দেশের সর্বোচ্চ মহল পদক্ষেপ নিয়েছে। আমরা চাই এবার সঠিক সময়ে ৯ শতাংশ ব্যাংক ঋণের বিষয়টি বাস্তবায়ন হবে।
সোমবার ডিসিসিআই কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সংগঠনটির সভাপতি। দেশের সমসাময়িক অর্থনীতির সার্বিক পরিস্থিতি এবং ২০২০ সালে ডিসিসিআই’র বর্ষব্যাপী কর্মপরিকল্পনা জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিসিসিআইয়েল ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি এন কে এ মবিন, সহ-সভাপতি মোহাম্মদ বাশির উদ্দিনসহ সংগঠনের পরিচালকরা।
সম্মেলনে ডিসিসিআই সভাপতি শামস মাহমুদ বলেন, ব্যাংক খাতে বিপুল অংকের খেলাপি ঋণ নিয়ে বিভিন্ন মহলের উদ্বেগ রয়েছে। কিন্তু এটি কোনো সমস্যা নয়। একই সঙ্গে তিনি দাবি করেন, বাজেটের ঘাটতি মেটাতে সরকার অস্বাভাবিক হারে যে ঋণ নিচ্ছে তা বেসরকারি খাতের ঋণপ্রবাহের জন্যও কোনো সমস্যা নয়।
তার দাবি, সরকার ব্যাংক থেকে ঋণ নিচ্ছে দেশের অবকাঠামো খাতের উন্নয়নের জন্য। এ খাতের উন্নয়ন হলে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়বে। এতে বেসরকারি খাতে তেমন প্রভাব পড়বে না। কারণ বিদেশে বেসরকারি খাতের ঋণ নেয়ার অনেক সুযোগ রয়েছে।
খোলাপি ঋণ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘অনেকে ঋণ নিয়ে কারখানা স্থাপন করেন। কিন্তু গ্যাস-বিদ্যুতের সমস্যার কারণে উৎপাদনে যেতে পারেন না। ফলে সঠিক সময়ে ঋণ পরিশোধ করতে পারেন না। খেলাপি বাড়ে। এছাড়া জাপান, ভারতসহ অনেক দেশে নন-পারফর্মিং লোন বেশি রয়েছে; এটি তেমন সমস্যা নয়।’
সম্প্রতি ব্যাংকের নির্বাহীরা এসএমই খাত নয় শতাংশ ঋণের আওতার বাইরে রাখার দাবি করেন। এর বিরোধিতা করে শামস মাহমুদ বলেন, ‘এসএমই ঋণ যেন নয় শতাংশ সুদহারের আওতার বাইরে না থাকে এটি নিশ্চিত করতে হবে।’
পুঁজিবাজার নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের বিষয়টি ‘ইতিবাচক’ উল্লেখ করে ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘সম্প্রতি পুঁজিবাজারের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী হস্তক্ষেপ করেছেন। আমরা বিশ্বাস করি এতে সমস্যার সমাধান হবে।’
তিনি আরও বলেন, ২০২০ সালে ডিসিসিআই যে ক’টি খাতের ওপর অগ্রাধিকার দেবে তার মধ্যে পুঁজিবাজার রয়েছে। বছরটিতে বন্ড মার্কেটের পলিসি উন্নয়নের জন্য পদক্ষেপ নেয়া হবে। এতে একদিকে উদ্যোক্তাদের দীর্ঘমেয়াদি অর্থের জোগান হবে, অন্যদিকে বন্ডে বিনিয়োগ করে বিনিয়োগকারীরা ৫ শতাংশ হারে মুনাফা পাবেন।
পুঁজিবাজারের সমস্যার কারণও তুলে ধরেন ডিসিসিআই সভাপতি। বলেন, ‘প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যক্তি বিনিয়োগকারী উভয়ের মধ্যে ডে-ট্রেডিং মানসিকতা রয়েছে। বন্ড মার্কেটের অভাব রয়েছে। এর সঙ্গে ভালো কোম্পানিরও অভাব রয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে চলতি বছরে দেশের অর্থনীতির অগ্রগতির জন্য ১১ খাতকে বিশেষ অগ্রাধিকার দেয়ার কথা জানায় ডিসিসিআই। এর মধ্যে রফতানি বহুমুখীকরণ, জনশক্তি উন্নয়ন, অর্থনীতির অগ্রগতির জন্য কূটনৈতিক সম্পর্ক বাড়ানো, পুঁজিবাজার পুনঃগঠন, জ্বালানি নিরাপত্তা, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব, ইজ অব ডুইং বিজনেসে অগ্রগতি, গবেষণা ও উন্নয়ন, অবকাঠামো ও এসএমই খাতে জোর দেয়।
আরকে//