ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

চবিতে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপে সংঘর্ষ: ২০ নেতাকর্মী আটক

চবি সংবাদদাতা

প্রকাশিত : ০২:২৫ পিএম, ২৩ জানুয়ারি ২০২০ বৃহস্পতিবার

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের পর দুইটি আবাসিক হলে তল্লাশি চালিয়ে ২০ নেতা-কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। 

গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ১১টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত শাহ আমানত ও সোহরাওয়ার্দী হলে তল্লাশি চালিয়ে তাঁদের আটক করা হয়। এদের মধ্যে চুজ ফ্রেন্ডস উইথ কেয়ারের ১২ জন ও বিজয়ের ৮ নেতা-কর্মী রয়েছেন।

আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এস এম মনিরুল হাসান বলেন, ‘প্রক্টরের গাড়ি ভেঙেছে, পুলিশের গাড়ি ভেঙেছে, অনেক ছাড় দেওয়া হয়েছে। এখন অপরাধীদের বিরুদ্ধে শান্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া দুই হল থেকে সন্দেহভাজন হিসেবে ২০ জনকে আটক করা হয়েছে। যাচাই বাছাই শেষে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এর আগে বুধবার বিকেলে নিজেদের তিন কর্মীকে মারধর ও কুপিয়ে জখম করার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সন্ধ্যায় অবরোধের ডাক দেয় ছাত্রলীগের উপপক্ষ ‘বিজয়’। এ ঘটনার জেরে ক্যাম্পাসের সোহরাওয়ার্দী ও শাহ আমানত হলের সামনে সংঘর্ষে জড়ান বিজয় ও চুজ ফ্রেন্ডস উইথ কেয়ারের (সিএফসি) নেতা-কর্মীরা।

মারামারিতে জড়িত সিএফসি ও বিজয় দুই উপপক্ষই শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত। বর্তমানে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের দুটি পক্ষ রয়েছে। একটি সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন এবং অন্যটি শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর অনুসারী।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বুধবার বিকেল চারটার দিকে ক্যাম্পাসের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে সিএফসির এক কর্মীকে মারধর করেন বিজয়ের কর্মীরা। এর জের ধরে বিকেল পাঁচটার দিকে সোহরাওয়ার্দী হলে গিয়ে বিজয়ের দুই কর্মীকে মারধর ও একজনকে কুপিয়ে জখম করেন সিএফসির নেতা-কর্মীরা। ঘটনা জানাজানি হলে বিজয়ের নেতা-কর্মীরা সোহরাওয়ার্দী হল এবং সিএফসির নেতা-কর্মীরা শাহ আমানত হলের সামনে জড়ো হন। তাঁদের হাতে লোহার রড, লাঠিসোঁটা ও রামদা দেখা যায়।

এ সময় দুই পক্ষই একে অপরকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পরে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্য ও পুলিশ এসে তাঁদের ছাত্রভঙ্গ করে দেয়। পাশাপাশি সোহরাওয়ার্দী ও শাহ আমানত হলে তল্লাশি চালিয়ে লোহার রড ও কাচের বোতল নিয়ে যায়।

সিএফসির হামলায় আহত অবস্থায় আবু বকর নামের বিজয়ের এক কর্মীকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বাকিদের বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। এদিকে বিজয়ের কর্মীদের মারধরের প্রতিবাদে ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হকের পদত্যাগের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের অবরোধের ডাক দেওয়া হয়েছে। 

অবরোধের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিজয়ের নেতা ও সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ ইলিয়াস। তিনি বলেন, অতর্কিতভাবে তাঁদের কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে সিএফসি। সিএফসির নেতা রেজাউল হকের নির্দেশে এই হামলা চালানো হয়। তাই রেজাউল হক রুবেলকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সভাপতির পদ থেকে বহিষ্কার ও হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তি না দেওয়া পর্যন্ত অবরোধ চলবে।