ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

ভাইরাসের ভয়ে চীনে ‘সিলগালা’ হচ্ছে সব

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৭:৪৪ পিএম, ২৪ জানুয়ারি ২০২০ শুক্রবার | আপডেট: ০৮:০১ পিএম, ২৪ জানুয়ারি ২০২০ শুক্রবার

রহস্যময় করোনা ভাইরাসের ভয়ে কাঁপছে চীন। শুক্রবার পর্যন্ত ১৮ জনের মৃত্যুর পরে দেশের পাঁচ শহরকে কার্যত ‘সিলগালা’ করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।

এদিকে সৌদি আরবে কর্মরত এক ভারতীয় নার্স এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। ভারতের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ভি মুরলীধরন খবরের সত্যতা স্বীকার করে জানিয়েছেন, আক্রান্ত নার্স জেদ্দার আসির ন্যাশনাল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। 

সতর্কতা হিসেবে চীনের পাঁচটি শহরের বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ উঠানামা বন্ধ করেছে বেইজিং। স্টেশন থেকে ছাড়া হচ্ছে না ট্রেন। প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের না হতে স্থানীয়দের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

বিশেষজ্ঞদের সন্দেহ, চীনের উহান শহরের সি-ফুড ও মাছ-মাংসের বাজার থেকে ভাইরাসটি ছড়িয়েছে। এই বাজারে বিভিন্ন ধরনের বন্য প্রাণীর মাংস বেআইনিভাবে বিক্রি হয়। দেশজুড়ে প্রায় এক সহস্র এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের বেশির ভাগ বিদেশ ফেরত চায়না নাগরিক। 

করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সর্বশেষ খবর পাওয়া যায় সিঙ্গাপুরে। এরপরেই ভাইরাসের ‘উৎস’ উহান, হুয়াংগ্যাং ও ইঝৌ শহরকে ‘লকডাউন’ ঘোষণা করা হয়েছে। 

হুবেই প্রদেশের বন্দর-শহর উহানে ১ কোটি ১০ লাখ মানুষের বাস করছে। অনির্দিষ্টকালের জন্য ট্রেন চলাচল, বিমান পরিবহণ বন্ধ করে দেওয়ায় শহরবন্দি মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। গতকাল উহানে এ নিয়ে সরকারি ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা পরে একই নির্দেশ আসে হুয়াংগ্যাংয়ের বাসিন্দাদের কাছেও। ৭৫ লাখ মানুষ এ শহর বাস করছে। গতকাল বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ট্রেনসহ সরকারি পরিবহণ ব্যবস্থা বন্ধ করে দেওয়া হয়। বন্ধ করা হয় সিনেমা হল, সাইবার ক্যাফে, শপিং মল। 

রয়টার্স জানিয়েছে, শুক্রবার ১০টি শহরে গণপরিবহন ও সংশ্লিষ্ট এলাকার মন্দির বন্ধের পাশাপাশি পর্যটন গন্তব্য ‘নিষিদ্ধ শহর’ ও গ্রেট ওয়ালের একটি অংশও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েছেন। আগামীকাল শনিবার চীনা নববর্ষ হওয়া উৎসবের মধ্যেই এমন পরিস্থিত সৃষ্টি হচ্ছে। তবে সব কিছু উপেক্ষা করে প্রবাসী চীনারা পরিবারের সঙ্গে নববর্ষ উদযাপনের জন্য দেশে ফিরছেন।

উল্লেখ্য, ভাইরাসটি শ্বাস-প্রশ্বাসে ছড়ায়। গেল ৩১ ডিসেম্বর এটি ধরা পড়ে। এরপর থেকে ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় এক সহস্র মানুষ। জাপান, হংকং, ম্যাকাউ, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান, থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব, ভিয়েতনাম ও সিঙ্গাপুরে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, তারা এখনও সিদ্ধান্ত নেয়নি যে ‘বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্য সঙ্কট’ ঘোষণা করা হবে কিনা। সংস্থার প্রধান বলেন, ‘চীন যে কঠিন পদক্ষেপ নিয়েছে তা সত্যিই প্রশংসনীয়।’ সূত্র: রয়টার্স, আনন্দবাজার

এমএস/এসি