ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

ভারতের ২০ কোটি মুসলমান আতঙ্কে: দ্য ইকনমিস্ট

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:০২ পিএম, ২৪ জানুয়ারি ২০২০ শুক্রবার | আপডেট: ১১:০৫ পিএম, ২৪ জানুয়ারি ২০২০ শুক্রবার

ভারতে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ‘সিএএ’ এবং জাতীয় নাগরিক পঞ্জি ‘এনআরসি’ ইস্যুতে নিয়ে লন্ডনের ‘দ্য ইকনমিস্ট’ পত্রিকা ভারতীয় জনতা পার্টি বা বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারের তীব্র সমালোচনা করার পাশাপাশি ভারতের ২০ কোটি মুসলিম আতঙ্কিত বলে মন্তব্য করেছে।

‘দ্য ইকনমিস্ট’ পত্রিকায় সাম্প্রতিক ইস্যুতে বলা হয়েছে, ‘ভারতের ২০ কোটি মুসলিম আতঙ্কিত! তাঁদের আশঙ্কা, নরেন্দ্র মোদি ‘হিন্দু রাষ্ট্র’ গঠনের দিকে এগোচ্ছেন। গত মাসে ভারত সরকার যে আইন এনেছে, তাতে মুসলিম বাদে বাকিদের নাগরিকত্ব পাওয়া সহজ করে দেওয়া হয়েছে। 

একই সঙ্গে ১৩০ কোটি মানুষের নাগরিকত্ব যাচাই করতে উদ্যত হয়েছে বিজেপি সরকার, যাতে বেআইনি অনুপ্রবেশকারীদের খুঁজে বের করা যায়। কিন্তু ২০ কোটি মুসলিমদের অধিকাংশেরই নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নেই। দেশ হারানোর পথে তারা। যারা জালে ধরা পড়বেন, তাদের জন্য ডিটেশন ক্যাম্প তৈরিরও নির্দেশ দিয়েছে সরকার।’

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘নির্বাচনে বিজেপির জন্য যা অমৃত সমান,  ভারতের জন্য তা রাজনৈতিক বিষ। সংবিধানের ধর্ম নিরপেক্ষ নীতি-নিয়ম বিসর্জন দিয়ে যে পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন মোদি, তা ভারতের গণতান্ত্রিক পরিকাঠামোর ক্ষতি সাধন করবে। আগামী কয়েক দশক ধরে এর ফল ভুগতে হবে ভারতকে।’

‘দ্য ইকনমিস্ট’ বলেছে, নরেন্দ্র মোদির সাম্প্রদায়িক পদক্ষেপ গ্রহণ ভারতের গণতান্ত্রিক ভিত্তিকে ভেঙে দিচ্ছে। দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এসে আত্মবিশ্বাস বেড়ে গিয়েছে নরেন্দ্র মোদির। তিনি জানেন জনসংখ্যার একটা অংশের সমর্থন রয়েছে তার কাছে। সেজন্য ‘হিন্দুত্বের হাওয়া’ আরও জোরদার করার পথে এগোচ্ছেন তিনি।

এদিকে ‘দ্য ইকনমিস্ট’র প্রতিবেদনে ক্ষুব্ধ বিজেপি নেতা বিজয়  চৌথাইওয়ালে বলেছেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম, ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশরা চলে গিয়েছে। কিন্তু দ্য ইকনমিস্টের সম্পাদকরা এখনও ঔপনিবেশিক যুগেই বাস করছেন। দেশের ৬০ কোটি মানুষ মোদিকে ভোট দিয়েছেন। তাতেই গোঁসা হয়েছে ওঁদের।’

অন্যদিকে আজ শুক্রবার গণমাধ্যমে প্রকাশ, দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকনমিক ফোরামের মঞ্চ থেকে ভারতের নরেন্দ্র মোদির সরকারকে তীব্র সমালোচনা করেছেন, মার্কিন-হাঙ্গেরীয় ধনকুবের জর্জ সোরস। ভারতকে ‘হিন্দু রাষ্ট্র’ হিসেবে গড়ে তোলার প্রচেষ্টায় গণতন্ত্রকে মোদি ‘ধ্বংসের মুখে’ ঠেলে দিচ্ছেন বলে জর্জ সোরস মন্তব্য করেছেন।

তিনি বলেন, ‘ভারতে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত নরেন্দ্র মোদী সরকার কাশ্মীরে শাস্তিমূলক পদক্ষেপের মধ্যে দিয়ে ‘হিন্দু রাষ্ট্র’ গঠনে উদ্যোগী। সরকারী পদক্ষেপের মাধ্যমে মুসলিমদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হচ্ছে। এটা ভারতে সব চেয়ে বড় এবং ভয়ঙ্কর ধাক্কা।’

জর্জ সোরস ভারতের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ‘সিএএ’ এবং জম্মু-কাশ্মীর থেকে সে রাজ্যের বাসিন্দাদের জন্য বিশেষ সুবিধা সম্বলিত ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের কথাই বলতে চেয়েছেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

এমএস/এসি