মার্কিন নারীকে বিয়ে করে আলোচিত বাংলাদেশি জাহরা!
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৭:৩৮ পিএম, ২৬ জানুয়ারি ২০২০ রবিবার
বিয়ের পোশাকে ইয়াশরিকা জাহরা হক ও এলিকা
সম্প্রতি এক বাংলাদেশি মুসলিম নারী বিয়ে করেছেন এক মার্কিন নারীকে। তাদের বিয়েতে খরচ করা হয়েছে প্রায় পাঁচ কোটি টাকা। এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে নিউইয়র্ক টাইমস। প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশি ওই নারীর নাম ইয়াশরিকা জাহরা হক (৩৪)। নিজের পছন্দে তিনি যে নারীকে স্বামী হিসেবে বেছে নিয়েছেন তার নাম এলিকা রুথ কুকলি (৩১)।
ইয়াশরিকাই প্রথম বাংলাদেশি সমকামী নারী, যিনি বিয়ে করলেন উত্তর আমেরিকার আরেক সমকামী নারীকে। মুসলিম পরিবারের সন্তান ইয়াশরিকা জাহরা হকের বাবার নাম ইয়ামিন হক। আর মায়ের নাম ইয়াসমিন হক। তারা যুক্তরাষ্ট্রের সাউথ ডেকটার র্যাপিড সিটিতে বসবাস করেন। ইয়াশরিকা ওয়াশিংটনের জর্জটাউন ইউনিভার্সিটি থেকে গ্রাজুয়েশন শেষ করেছেন। তারপর নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটি থেকে আইন বিষয়ে ডিগ্রি নেন। বর্তমানে নিউইয়র্ক সিটির ম্যানহাটনের একটি ল’ ফার্মে কাজ করছেন।
ইয়াশরিকা জাহরা যে তরুণীকে বিয়ে করেছেন তিনি একজন মার্কিন নাগরিক। তিনি কাজ করছেন ম্যানহাটনের একটি অডিওলজিক্যাল সার্ভিস কোম্পানিতে। জানা যায়, ২০১৯ সালের ৬ জুন ব্রুকলিনে একটি পার্টি হলে দুই নারী ইয়াশরিকা ও এলিকা রুথ কুকলির বিয়ে অনুষ্ঠান হয়। যা হয় পুরোপুরি বাঙালি আমেজে এবং বাঙালি সংস্কৃতির প্রায় সব কিছুই ছিলো এই বিয়েতে। অতিথিরা প্রায় সকলেই ছিলেন সমকামী।
বিয়ের অনুষ্ঠানে ইয়াশরিকার পরনে ছিল লাল রঙের বেনারসি শাড়ি। ছিল সোনার গহনা। দুহাতে ছিল মেহেদি। অপরদিকে এলিকা রুথের পরনে ছিল শেরওয়ানি। এই বিয়েতে খরচ হয়েছে প্রায় ৫ কোটি টাকা। এর আগে ২০১৯ সালের ৭ জুন নিউইয়র্ক সিটির ম্যারিজ রেজিস্টার অফিসে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করেন ইয়াশরিকা।
গত বছর বিয়ে হলেও তাদের প্রথমবার দেখা হয় ২০১৫ সালে একটি এলজিবিটি মার্চে। সেখান থেকেই ধীরে ধীরে প্রেম-ভালোবাসা। আর সেই ভালোবাসা থেকেই তাদের বিয়ে।
এ বিষয়ে ইয়াশরিকা বলেন, ২০১৫ সালে ব্রুকলিনের একটি এপার্টমেন্টে পার্টি দিয়েছিলাম। সেখানেই টেক্সাস থেকে এসেছিলেন এলিকা রুথ কুকলি। সে সময় আমার মনে হয়েছে, কুকলি আমাকে তার নিজের মধ্যে চুম্বকের মতো আকৃষ্ট করেছেন। তখন আমার মনে হয়েছিল, তার কাছেই নিজেকে সঁপে দেওয়া যায়। সে সময় আমি সিঙ্গেল ছিলাম। এলিকাও সিঙ্গেল ছিল।
নিজেদের প্রেমের কথা জানাতে গিয়ে ইয়াশরিকা বলেন, কুকলিকে প্রথম দেখার পর আমার যে কেমন লেগেছিল তা বলতে পারব না। তখন সে একা ছিল। আমিও তার প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছিলাম। পরেরবার দেখা হবার পর আমাদের কথা হয়।
কয়েকমাস পর তাদের আবার দেখা হয় এক বন্ধুর পার্টিতে। কুকলি বলেন, আমি ততদিনে বুঝতে পেরেছিলাম যে আমাকে ইয়াশরিকা পছন্দ করে। সেদিন আমরা সারারাত একসঙ্গে গল্প করেছিলাম। কুকলি আরও বলেন, সে খুবই মায়াবী আর যত্মশীল একটি মেয়ে। যা-ই হোক না কেন সে আমার পাশেই থাকবে।
ইয়াশরিকা বলেন, এই বিয়ের মাধ্যমে আমার তো মনে হয় যে এতদিনে দুটো চুম্বক জোড়া লাগল। আমি খুবই খুশি।
কুকলি বলেন, পার্টিতে সেই রাতে আমরা এক সঙ্গে ছিলাম। আমার মনে হয়েছে ইয়াশরিকা খুবই মেধাবি। আমি আশা করি, সে আমার পাশে থাকবে।
এনএস/