ঠাকুরগাঁওয়ে অমুক্তিযোদ্ধাদের তালিকাভুক্ত করায় ক্ষোভ
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি:
প্রকাশিত : ০৭:৩৩ পিএম, ২৭ জানুয়ারি ২০২০ সোমবার
সদর উপজেলায় সর্বশেষ যাচাই বাছাইয়ে মুক্তিযোদ্ধার নতুন তালিকায় অমুক্তিযোদ্ধাদের নাম দেখে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে জেলার প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে। রনাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধা ব্যানের শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা রবিবার ঠাকুরগাঁও শহরের একটি হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে সম্প্রতি প্রকাশিত মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় বেশকিছু অমুক্তিযোদ্ধার নাম অন্তর্ভুক্তির অভিযোগ তুলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্তসহ বিতর্কিত ওই তালিকা প্রত্যাখান করেন এবং সেনাবাহিনীর মাধ্যমে পুন: যাচাই বাছাইয়ের দাবি জানিয়েছেন।
জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক সাংগঠনিক কমান্ডার আমিনুল ইসলাম বুলু সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করে বলেন, সর্বশেষ যাচাই বাছাইয়ে মুক্তিযোদ্ধার তালিকা নিয়ে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। তিনি বলেন, গত ২০১৭ সালে সদর উপজেলার ১৬৮জন মুক্তিযোদ্ধার নাম তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল। আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে এবং অনিয়মের মাধ্যমে ওই তালিকা প্রনয়ণের অভিযোগ উঠায় তা মন্ত্রণালয়ে ফেরত পাঠানো হয়েছিল। পরবর্তীতে গত বছরের ১৯ হতে ২১ নবেম্বর পর্যন্ত ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নেতৃত্বে পুনরায় মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই বাছাই কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। কিন্তু যাচাই বাছাইয়ে কতিপয় স্বার্থান্বেসী ব্যক্তি/মহল আগের তালিকা থেকে বেশকিছু প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার নাম বাদ দিয়ে বিতর্কিত বেশকিছু ব্যক্তির নাম মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে উল্লেখ করে ৭২ জনের নাম চুড়ান্ত করে একটি তালিকা মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করে।
অভিযোগে আরো বলা হয়, অন্যান্য উপজেলায় যাচাই বাছাইয়ের কয়েকদিনের মধ্যে চুড়ান্ত তালিকা প্রদর্শনের জন্য নোটিশ বোর্ডে ঝুলিয়ে দেওয়া হলেও ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নতুন তালিকা প্রকাশে টালবাহানা করা হয়। পরবর্তীতে মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রীর সুপারিশে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সে তালিকা সরবরাহ করেন । তাতে আব্দুল কুদ্দুস, আব্দুল আলী, বিনিতা দাস, রফিজ উদ্দীন মেম্বার, আইয়ুব আলী, আতিয়ার রহমানসহ বেশকিছু অমুক্তিযোদ্ধার নাম দেখা যায় এবং এদের মধ্যে আব্দুল কুদ্দুসের বয়স ’৭১ সালে ৪/৫ বছর ছিল বলে মুক্তিযোদ্ধাগন চ্যালেঞ্জ করেন।
অপরদিকে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস প্রর্দশনের পরেও নুরুল হক, রবি উড়াও, পুলিশ সদস্য নজরুল ইসলাম, তারাপদ সরকার, জয়নাল আবেদীন, দীনেশ চন্দ্র রায়, জুলফিকার হোসেন কান, মোয়জেদ আলী, মনীন্দ্র নাথ রায়, আশ্রাফ আলী বাটলা, আমজাদ হোসেন, লক্ষীন্দর বর্মন, সামিউল ইসলাম ও আব্দুর রবসহ অনেক প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা হতে বাদ দেওয়া হয়েছে বলে হতাশা ব্যক্ত করেন।
মুক্তিযোদ্ধা শংকর দে ধারার সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, মুক্তিযোদ্ধা শামীম হোসেন, সচিন্দ্র নাথ বর্মন প্রমূখ। এসময় শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সন্তানগন উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আব্দুল মান্নান জানান, ২০১৭ সালের ১৬৮ জনের তালিকা থাকলেও ভাতাভোগী ৭২৭ জনের মধ্যে শতকরা ১০ ভাগ নাম তালিকা করার নির্দেশনা থাকায় এবার ৭২ জনের নাম চুড়ান্ত করা হয়। এতে যাচাই বাছাইয়ে ৯৬ জন তালিকা হতে বাদ পড়ে।
একই বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, তালিকায় অমুক্তিযোদ্ধা অন্তুর্ভুক্তের অভিযোগ থাকলে পুনরায় যাচাই বাছাই করে অভিযুক্তদের বাদ দেওয়া হবে।
আরকে//