ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

হাতির ভয়ে ১৩ বছর গাছে বসবাস!

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৩:৫২ পিএম, ২৮ জানুয়ারি ২০২০ মঙ্গলবার

প্রায় প্রতিদিনই হাতি এসে ঘর-বাড়ি ভাঙচুর করতো, আর প্রাণ বাঁচাতে আশ্রয় নিতে হতো গাছে। বার বার ঘর তৈরি করা, আর হাতির ভয়ে গাছে দীর্ঘ সময় কাটানো- এভাবে কতদিন পারা যায়? তাই এক সময় সিদ্ধান্ত নিল, যেহেতু দীর্ঘ সময় গাছেই কাটাতে হয়, তবে স্থায়ীভাবে থাকলে ক্ষতি কি? তাতে বার বার ঘর বানানোর কষ্টও হবে না, আবার হাতির ভয়ও পেতে হবে না। এভাবে ১৩টি বছর গাছের ওপরই কাটিয়ে দিয়েছেন বিজয় ব্রহ্ম।

ঘটনাটি ভারতের আসাম রাজ্যের। ভুটানের জঙ্গল থেকে নেমে আসা হাতির পাল গ্রাম তছনছ করত। হাতির ভয়ে বার বার পালিয়ে গাছে উঠতে হত। চোখের সামনে দেখতে হত, হাতে গড়া ঘর কী ভাবে ভেঙে চুরে তছনছ করছে হাতির পাল। এভাবে অনেক বছর কাটানোর পর আসামের বাক্সা জেলার মুসলপুরের বাসিন্দা বিজয় ব্রহ্মের বিতৃষ্ণা ধরে যায়। তাই গাছের উপরে স্থায়ীভাবে থাকা শুরু করেন তিনি। গত ১৩ বছর ধরে গাছের উপরে বাস করা বিজয়কে গ্রামের মানুষ এখন ‘বনমানুষ’ বলেই ডাকে। 

মানুষের সংস্পর্শে আসতে পছন্দ করেন না বিজয়। ছোটবেলায় অনাথ হওয়ার পরে তিনি অন্যের বাড়িতে কাজ করতেন। চৌকি বনাঞ্চলের কাছে তার বাড়ি ছিল। একলা মানুষ, তাই ছোট্ট ঘরই ছিল তার সম্বল। কিন্তু সেটাও প্রায়ই ভেঙে দিত হাতিরা। বিজয় বলেন, ‘বার বার এই ঘটনার পরে ভাবলাম রাত নামলে যখন হাতির ভয়ে গাছেই উঠতে হয়, তখন খামোকা মাটিতে ঘর গড়ে কী লাভ? তাই কাঠ, তক্তা জোগাড় করে বনে গাছের উপরেই ছোট্ট ঘর তৈরি করে ফেলি।’

এর পর অন্যের বাড়ির কাজও ছেড়ে দেন। জঙ্গলে যা পাওয়া যায় তাই খেয়ে জীবন বাঁচাতেন তিনি। বছর ছয়েক চৌকি বনাঞ্চলের ভেতরে থাকার পরে পাগলাদিয়া নদীর পারে খৈরানি পথারের কাছে নতুন একটি গাছে বাসা বেঁধেছেন বিজয়। সেখানেও প্রায় সাত বছর হতে চলল। 

বিজয় বললেন, ‘বনের আলু, কচু, শাক, নদীর মাছ, শামুক, কাঁকড়া— যা সামনে পাই তা খেয়েই দিব্যি দিন কেটে যাচ্ছে। একা মানুষের আর কি চাওয়ার থাকতে পারে?’

সূত্র : আনন্দবাজার
এএইচ/