নিউজিল্যান্ডকে ফের ধোঁকা দিল ভারত!
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৭:১৬ পিএম, ৩১ জানুয়ারি ২০২০ শুক্রবার
নিউজিল্যান্ডকে ফের ধোঁকা দিল ভারত!
ক্রিকেট বিশ্বকে অনেক কিছুই দিয়েছে নিউজিল্যান্ড, কিন্তু বিস্ময়কর এই খেলাটা যেন বারবারই ধোঁকা দিয়েছে দলটিকে। প্রায় প্রতিটি বিশ্বকাপেই অন্যতম ফেভারিট ধরা হয় কিউইদের, কিন্ত বিশ্বকাপ জেতা হয়নি একবারও। দুবার ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলেও শিরোপার স্বাদ পায়নি তারা।
এমনকি, দীর্ঘদিন ধরে টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে থাকা দলটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালেও যেতে পারেনি একবারও। ভাগ্যই যেন তাদের বড় বাধা!
এই যেমন, গত ইংল্যান্ড বিশ্বকাপেই তো শিরোপা জয়ের কথা ছিল কিউইদের। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ফাইনাল ম্যাচে সব দিক থেকেই এগিয়ে ছিলো কিউইরা। কিন্তু সুপার ওভারের অদ্ভুত এক নিয়মের কাছে হেরে বিশ্বকাপ জেতা হয়নি কেন উইলিয়ামসনদের।
এরপর আরও তিনবার সুপার ওভারে গিয়ে তিনবারই হেরেছে নিউজিল্যান্ড। অথচ বিশ্বকাপের ফাইনাল এবং এই তিন ম্যাচে সুপার ওভারে যাওয়ার কথাই ছিল না কিউইদের। নির্ধারিত ওভারেই ম্যাচ জেতার কথা ছিল লড়াকু দল খ্যাত নিউজিল্যান্ডের।
সম্প্রতি ঘরের মাটিতে ভারতের বিপক্ষে সিরিজের দুটি ম্যাচেই ঘটেছে এমন দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। প্রথম দুই ম্যাচ হেরে সিরিজে ঘুরে দাঁড়ানোর তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে শেষ ওভারে স্বাগতিকদের প্রয়োজন ছিল মাত্র ৯ রান। উইকেটে তখন নিউজিল্যান্ড দলের সবচেয়ে বড় দুই তারকা ব্যাটসম্যান কেন উইলিয়ামসন (৯৫) ও রস টেইলর (১০)।
টেইলর তো প্রথম দুই বলে ৭ রান তুলে জয়টা একেবারেই হাতের নাগালে নিয়ে আসেন। পাঁচ বলে তখন কিউইদের দরকার মাত্র ২ রান। কিন্তু তারপরও শেষ পর্যন্ত টাই হলও ম্যাচটি! সুপার ওভারে গিয়ে ম্যাচ হারতে হয়েছে নিউজিল্যান্ডকে।
মন্দ ভাগ্যের যেন এখানেই শেষ নয়! আজ শুক্রবারও ঘটেছে একই ঘটনা। নিশ্চিত, অনায়াস জেতা ম্যাচ হাতছাড়া করেন ক্রিজে নির্ভার থাকা সেইফার্ট ও সেই টেইলর। চতুর্থ টি-টোয়েন্টি খেলতে নেমে কিউইরা যেভাবে হারল সেটা আরও অদ্ভুতুড়ে।
ভারতের করা ১৬৫ রানের জবাব দিতে নেমে শেষ ১৮ বলে নিউজিল্যান্ডের প্রয়োজন ছিল ১৭ রান, হাতে তখনও সাত উইকেট। এমনকি শেষ ওভারে এসেও হাতে ছিল সেই সাত উইকেটই, আর রান দরকার ছিল মাত্র ৭ রান। তারপরও ম্যাচটা জিততে পারেনি কিউইরা। অবিশ্বাস্যভাবে এ ম্যাচটিও টাই করে ভাগ্যাহত নিউজিল্যান্ড।
শার্দুল ঠাকুরের করা ওই শেষ ওভারের প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ডীপ মিড উইকেটে ধরা পড়ে মাঠ ছাড়েন ১৭ বলে ২৪ করা রস টেইলর। অনেকগুলো ম্যাচ জয়ের যেমন নায়কও তিনি, তেমনি খল নায়কও হয়েছেন বহু ম্যাচের।
যাইহোক, পরের বলে চার হাঁকিয়ে ডাগ আউটে থাকা দল ও মাঠ ও মাঠের বাইরের সমর্থকদের মাঝে স্বস্তি ও প্রাণ সঞ্চার করেন সেইফার্ট। পাঁচ বলে দরকার মাত্র তিন রান। এমন সহজ সমীকরণের ক্ষণে রান নিতে মরীয়া হয়ে রান আউট হয়ে দলকে ফের হতাশায় ডোবান ওই সেইফার্ট (৩৯ বলে ৫৭)।
যাইহোক, পরের বলে এক রান নিয়ে সমীকরণ দুই বলে দুই রান করে ফেলেন ক্রিজে নতুন আসা মিচেল স্যান্টনার। কিন্তু পরের বলেই তুলে মারতে গিয়ে নিজেই মাঠ ছাড়া হন আরেক নিউ কামার ডেরিল মিচেল। অর্থাৎ শেষ বলে যখন দুই রান দরকার, কি আর করা, ঠাকুরের বলকে ঠেলে দিয়েই প্রয়োজনীয় দুই রানের জন্য ছুটতে থাকেন স্যান্টনার।
কিন্তু ভারতীয় ফিল্ডাররা যে এখন বিশ্বমানের। তাদেরকে বিট করে দুই রান আদায় করে নেয়া খুবই কষ্টসাধ্য। হলোও তাই। দ্বিতীয় রান পূরণ করতে পরলেন না স্যান্টনার। ফলে টাই করেই ক্ষান্ত হলো নিউজিল্যান্ড।
নিশ্চিত জেতা ম্যাচ টাই করে হেরে যাওয়া দেখে হতাশ নিউজিল্যান্ডের ড্রেসিং রুম
পরে সুপার ওভারে গিয়ে আবারও সেই হার! জাসপ্রিত বুমরাহর করা সুপার ওভারে দুই চারে ১৩ রান তোলে স্বাগতিকরা। জবাবে লোকেশ রাহুল প্রথম দুই বলে ১০ রান তুলে পরের বলে আউট হলেও ভারতকে পৌঁছে দেন জয়ের দ্বারপ্রান্তে। যেখান থেকে দারুণভাবে ভারতের জয়ের আনুষ্ঠানিকতা সেরেছেন অধিনায়ক বিরাট কোহলি। ফলে ৪-০ তেই সিরিজ বগলদাবা করে নিয়েছে ভারত।
কিন্তু এখন প্রশ্ন উঠেছে যে- আর কতো, আর কতোবার এভাবে তীরে এসে তরী ডুববে নিউজিল্যান্ডের? কতোবার এভাবে পোড়া ভাগ্যের শিকার হতে হবে বিশ্ব ক্রিকেটের সবচেয়ে ভদ্র এই দলটির!
এনএস/