বায়ুদূষণে দেশে একজন মানুষ ২২ মাস আগে মারা যায়
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৩:২৯ পিএম, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ সোমবার
ঢাকায় বায়ুদূষণ- সংগৃহীত
বাংলাদেশে বায়ুদূষণ এখন ভয়াবহ মাত্রায় পৌঁছেছে। কোন কোন সময় বায়ুদূষণের মাত্রা বিপদসীমাকেও অতিক্রম করে। এতে মানবদেহের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। কমছে আয়ুষ্কাল। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) বলছে, বায়ুদূষণের কারণে বাংলাদেশে একজন মানুষ ২২ মাস আগে মারা যায়। এমন খবরে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন দেশের নাগরিকরা।
প্রতিষ্ঠানটির জরিপ বলছে, ঢাকায় বসবাসরত মোট জনসংখ্যার ১১ শতাংশ বায়ুদূষণজনিত রোগে ভুগছে। এরই মধ্যে শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত ৮ শতাংশ। এছাড়া সরাসরি বায়ুদূষণজনিত কারণ নয়, কার্ডিয়াক সমস্যায় ভুগছে ৮ শতাংশ, আর ক্যানসার আক্রান্তের হার ১.৩ শতাংশ। বায়ুদূষণ পরোক্ষে এ দুটি রোগে আক্রান্ত হতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। কিন্তু কেন এ পরিণতি হল। কারণ ঢাকা যেভাবে বেড়ে উঠেছে সেভাবে পরিবেশ সুরক্ষার বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দেয়া হয়নি।
জরিপে বলা হয়, আমরা জানি, ৪০০ বছরের এ রাজধানী ঢাকা শহরের একটা বড় অংশজুড়ে ছিল বিভিন্ন গাছ। পরিকল্পনা করেই পিচ রাস্তার ধারে লাগানো হয়েছিল অনেক গাছ। এখনও যেখানে যেখানে গাছ বেশি, যেমন বিশ্ববিদ্যালয় ও রমনা এলাকায় দূষণ কিছুটা কম। ঢাকা সেনানিবাস এলাকায় অনেক গাছ এবং সেখানে দূষণ সম্ভবত সবচেয়ে কম। কিন্তু নতুন নতুন যেসব আবাসিক এলাকা গড়ে উঠছে সেভাবে প্রাকৃতিক পরিবেশ সৃষ্টির তেমন কোনো উদ্যোগই চোখে পড়ে না।
বিআইডিএস’র জরিপটি দ্বৈবচয়নের ভিত্তিতে। ঢাকার দুই সিটির ৯৩টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৩১টি ওয়ার্ডকে বাছাই করে বিআইডিএস। প্রতিটি ওয়ার্ডের ১০০টি খানা (পরিবার) থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
বাংলাদেশে পৃথিবীর বৃহত্তম বদ্বীপ। প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রবণ এ দেশে দুর্যোগ দিনে দিনে বাড়ছে। বাড়ছে জনসংখ্যার চাপও। সেই সঙ্গে নগরায়নের প্রতিযোগিতায় বাড়ছে বিষাক্ত ধোঁয়া, বাতাসে সিসার পরিমাণ। এতে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও পরিবেশগত বিরূপতায় খরা, বন্যা, ঝড়, সাইক্লোন, ঘূর্ণিঝড়, ভূমিকম্পসহ নানা ধরনের ভয়াবহ প্রতিকূলতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে এ দেশকে।
আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান-জার্নাল ‘সায়েন্স’এ প্রকাশিত সুইজারল্যান্ডের জুরিখে সুইস ফেডারাল ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজির (ইটিএইচ জুরিখ) একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, কমপক্ষে এক লাখ কোটি গাছ লাগালে বাতাসে কমবে বিষ। বায়ুমন্ডল ১০০ বছরের আগের মতো হবে।
গবেষকরা বলছেন- এক লাখ কোটি গাছ লাগাতে জমির অভাব হবে না। আন্তরিকতা থাকলে দ্রুততম সময়ে এ গাছ লাগানো সম্ভব। পৃথিবীর স্থলভাগের যতটা নিয়েছে শহর আর গ্রাম আর চাষাবাদের জন্য সেই জমিতে যতটা ভাগ বসানো হয়েছে এসবকে হিসাবের বাইরে রেখেও গাছ লাগানোর জন্য ৩৫ লাখ বর্গমাইল বা ৯০ লাখ বর্গকিলোমিটার এলাকা খালি পড়ে আছে বিশাল এ পৃথিবীতে।
এমএস/