বাংলাদেশে ক্যান্সার প্রতিরোধে প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মেলন
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৩:১৩ পিএম, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০ শুক্রবার
বিশ্ব ক্যান্সার দিবস ২০২০ উপলক্ষে ৭ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর ইনস্টিটিউশনে অনুষ্ঠিত হল দেশের প্রথম আন্তর্জাতিক ক্যান্সার প্রতিরোধ সম্মেলন।
ক্যান্সার অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশন অফ বাংলাদেশ এর উদ্যোগে এ সম্মেলনে দেশি-বিদেশি প্রায় ২০০ জন ক্যান্সার চিকিৎসক প্রতিরোধ বিশেষজ্ঞ ও নবীন চিকিৎসক ও ক্যান্সার সার্ভাইভার অংশগ্রহণ করেন।
বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ হেল্থ সাইয়েন্সেস এর পাবলিক হেলথ ফ্যাকাল্টি ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অনকোলোজি বিভাগ এ আয়োজনের সহ আয়োজক।
সম্মেলনে মূল আয়োজক ক্যান্সার অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ এর সাধারণ সম্পাদক ডা. মোহাম্মদ মাসুমুল হক বলেন, সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও ক্যান্সার রোগের প্রাদুর্ভাব দিনদিন বেড়েই চলেছে। ক্যান্সার চিকিৎসার পাশাপাশি তাই দরকার প্রাথমিক পর্যায়ের প্রতিরোধ। আমাদের এ প্রতিষ্ঠান শুরু থেকেই ক্যান্সার সচেতনতা, স্ক্রিনিং এবং ক্যান্সার রোগী ও তার পরিবারের পুনর্বাসনে কাজ করে আসছে। আশা করছি এ সম্মেলনের মাধ্যমে দেশে ক্যান্সার প্রতিরোধ একটি নতুন মাত্রা পাবে।
এছাড়া বর্তমান সরকারও ক্যান্সার প্রতিরোধে যথেষ্ট আন্তরিক। বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে স্তন ও জরায়ু ক্যান্সার সচেতনতায় বিশেষ কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। যা আমাদের যথেষ্ঠ উৎসাহ দিয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব হেলথ সাইন্সেস এর উপাচার্য প্রফেসর ডা. ফরিদুল আলম। তিনি তার উদ্বোধনী বক্তব্যে বলেন, অসংক্রামক ব্যাধির মধ্যে ক্যান্সার অন্যতম।
আন্তর্জাতিক ক্যান্সার গবেষণা প্রতিষ্ঠানের এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী ধারণা করা হয়, বর্তমানে বাংলাদেশে প্রতিবছর গড়ে প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজারের অধিক মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন এবং গড়ে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। তবে প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হবে বলে ধারণা করা যায়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক হিসেব মতে আগামী ১০ বছরে এ সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ ছাড়িয়ে যাবে। তাই ক্যান্সার প্রতিরোধে সমাজের সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন দেশের বরেণ্য ক্যান্সার চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এম এ হাই। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, এক তৃতীয়াংশ ক্যান্সার প্রতিরোধযোগ্য এবং তা আমাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার কিছু ঝুঁকিপূর্ণ আচরণ পরিবর্তনের মাধ্যমেই করা সম্ভব। অথচ সচেতনতার অভাবে প্রতিরোধযোগ্য ক্যান্সারের হার ক্রমশ বেড়েই চলেছে। তাই তিনি সমাজের সর্বস্তরে ক্যান্সার সচেতনতার বার্তা পৌঁছে দেওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
এছাড়া অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন দেশ বরেণ্য ইউরো-অনকোলজিস্ট প্রফেসর ডা. এম এ সালাম, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ হেলথ সাইন্সেস এর নন কম্যুনিক্যাবল ডিজিসেস বিভাগের প্রধান ডা. মিথিলা ফারুকী এবং ক্যান্সার অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের ডা. মোহাম্মদ মাসুমুল হক।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাঢা মেমোরিয়ার সেন্টার মুম্বাহ এর ক্যান্সার প্রতিরোধ বিভাগের প্রধান প্রফেসর ডা. গোরভী মিশ্রা।
তিনি বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের ক্যান্সার রোগের চিত্র প্রায়ই একই ধরনের। আশা করছি ভবিষ্যতে ক্যান্সার প্রতিরোধে আমরা একসাথে কাজ করতে পারব। সম্মেলনে নবীন ও প্রবীন ৩০ জন ক্যান্সার প্রতিরোধ বিশেষজ্ঞ তাদের গবেষণাপত্র পাঠ করেন।
আরকে/