করোনা আতঙ্ক
জাহাজবন্দি ২৬০০, ফিরতে করুণ আকুতি যুবকের
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৮:১৫ পিএম, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ শনিবার
এই জাহাজেই ৬২ জন আক্রান্তের সঙ্গে বন্দি ২৬০০ যাত্রী
মরণঘাতী করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের সঙ্গে আটকে পড়েছেন সমুদ্রে। সেই অবস্থায় জাপান উপকূল থেকে ভারত সরকারের উদ্দেশে ফের বার্তা পাঠালেন এক বাঙালি যুবক। তার দাবি, রোজই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। এমন পরিস্থিতিতে ভারতীয়দের উদ্ধার করতে যেন দ্রুত ব্যবস্থা নেয় ভারত সরকার।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুর জেলার চাকুলিয়ার কানকির হাতিপার এলাকার বাসিন্দা ওই যুবকের নাম বিনয়কুমার সরকার। জাপানের ডায়মন্ড প্রিন্সেস নামে একটি জাহাজের কেবিন ক্রু তিনি। শুক্রবার জাহাজ থেকেই ফেসবুকে একটি ভিডিও বার্তা পোস্ট করেন তিনি।
ওই ভিডিওতে বিনয় বলেন, ‘এই মুহূর্তে ইয়োকোহামা বন্দরে জাহাজের মধ্যে আটকে রয়েছি আমরা। ডেঞ্জার জোনে রয়েছি। গতকাল ২১ জন করোনা ভাইরাস পজিটিভ ছিলেন। মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে, আজ তা ৬২-তে গিয়ে ঠেকেছে। তাদের মধ্যে দু’জন ক্রু সমেত ৪১ জনকে আজ অ্যাম্বুল্যান্সে চাপিয়ে বাইরে পাঠানো হয়েছে। ওদের আইসোলেটেড করে রাখা হবে।’
ফেরার আকুতি জানানো যুবক বিনয় সরকার
এই মুহূর্তে জাহাজে ১৬০ জন ভারতীয় ক্রু রয়েছেন বলে জানান বিনয়। যেভাবে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে, তাতে তাদের অবিলম্বে সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হোক বলে ভারত সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন তিনি।
বিনয় বলেন, ‘জাহাজে আমরা ১৬০ জন ভারতীয় ক্রু রয়েছি। দিনের পর দিন যেভাবে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে, তাতে আতঙ্ক বাড়ছে। তাই ভারত সরকারের কাছে অনুরোধ, আমাদের অন্য জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হোক। সেখানে পরীক্ষা করে দেখা হোক, কার শরীরে ভাইরাস রয়েছে, আর কার শরীরে নেই। আক্রান্তদের থেকে বাকিদের আলাদা রাখা হোক। আমার পরিবারের সকলে খুব চিন্তিত। আমিও খুব ভয়ে রয়েছি।’
এর আগে, গত বৃহস্পতিবারও জাহাজের কেবিন থেকে ফেসবুকে একটি ভিডিও আপলোড করেন বিনয়। তাতে তিনি জানান, ২৬০০ জন যাত্রীর সঙ্গে তিন দিন ধরে জাহাজে বন্দি তিনিও। সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কায় বন্দরে তাদের নামতে দেয়া হচ্ছে না। উহান থেকে ভারতীয়দের উদ্ধারে মোদী সরকার যেভাবে সক্রিয় হয়েছে, তাদের নিয়েও ভাবনা-চিন্তা করুক।
এদিকে, বিষয়টি সামনে আসতেই নড়েচড়ে বসেছে বাংলার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। মানবিকতার দিক থেকে বিষয়টি বিবেচনা করে মুখ্যমন্ত্রী দিল্লিতে তার সংসদীয় দলের নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলেছেন। লোকসভা অথবা রাজ্যসভায় প্রসঙ্গটি তুলতে নির্দেশ দিয়েছেন মমতা।
বিনয় জানান, ২০ জানুয়ারি জাপানের ইয়োকোহামা থেকে তারা রওনা দেন। ২৫ জানুয়ারি হংকংয়ে পৌঁছন। সেখান থেকে এক জন যাত্রী উঠেছিলেন। তিনি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন বলে সন্দেহ। হংকং থেকে ফের ২৮ জানুয়ারি রওনা হয়েছিলেন তারা। গন্তব্য ছিল ভিয়েতনাম। কিন্তু ২ ফেব্রুয়ারি সংক্রমণের কথা জানতে পেরে দ্রুত টোকিওর কাছে জাহাজ ফেরানো হয়। ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে সেখানেই আটকে রয়েছেন তারা।
এদিকে আজ শনিবার ওই জাহাজে আরও তিন জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে সংবাদ সংস্থা এএফপি-র তরফে জানানো হয়েছে।
এনএস/