ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

বেইজিং, সাংহাই, উহান এখন ভুতুড়ে শহর

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৫:৩৭ পিএম, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ রবিবার

সাংহাই ও উহান শহর। ছবি: রয়টার্স

সাংহাই ও উহান শহর। ছবি: রয়টার্স

করোনাভাইরাস আতঙ্কে চীনের বড় বড় শহরগুলো এখন ফাঁকা। বেইজিং, সাংহাই ও উহান এখন ভুতুড়ে নগরীতে পরিণত হয়েছে। করোনার ধাক্কায় কমে গেছে পর্যটক।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, ভাইরাস আতঙ্কে ধস নেমেছে ব্যবসায়। এই বছরের বিরল তুষারপাতের মধ্যেও বেইজিংয়ের রাস্তাগুলোতে হাতেগোণা অল্প কিছু লোকের দেখা মিলছে।

সাধারণত, তুষারপাতের সময়ে ২ কোটি ১৫ লাখ মানুষের এ রাজধানীর রাস্তা ও পার্কগুলোতে লাখ লাখ লোক খেলতে ও ছবি তুলতে নেমে আসে।

করোনাভাইরাসের শঙ্কায় সেসব স্থান এখন খা খা করছে। রাস্তাগুলো খালি, পার্কগুলো এতটাই নীরব যে কেবল পাখির কিচিরমিচিরই শোনা যাচ্ছে।

কেবল বেইজিং-ই নয়, চীনের অর্থনৈতিক কেন্দ্র সাংহাইসহ অন্যান্য শহরেরও পরিস্থিতি এখন অনেকটাই এরকম। করোনাভাইরাসের কারণে ছুটির পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়া এবং বাসিন্দাদের ঘরের বাইরে যেতে নিষেধ করার পর থেকে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যার দেশের শহরগুলো পরিণত হয়েছে এক একটা ভুতুড়ে নগরীতে।

চীনের উহান শহরে ছয় সপ্তাহ আগে ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী এ ভাইরাসটি এরই মধ্যে ৮০০র বেশি মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে, আক্রান্তের সংখ্যা পেরিয়ে গেছে ৩৭ হাজার। মৃত ও আক্রান্তদের সংখ্যাগরিষ্ঠই উহান ও এর আশপাশের এলাকার, বেইজিং থেকে যা প্রায় হাজার কিলোমিটার দূরে।

বেইজিংয়ের নিষিদ্ধ নগরীর কাছে রাজকীয় অভয়ারণ্য জিংশান পার্ক ঘুরতে আসা কিয়াও বলেন, আমরা জানি, করোনাভাইরাসের পরিস্থিতি খুবই গুরুতর। কাজ নেই, উপদ্রুত এলাকা এখান থেকে অনেক দূরে হওয়ায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে তুষার উপভোগের সাহস করেছি।   

অবশ্য প্রস্তুতি ছাড়া আসেননি; সবার মুখে মাস্ক এবং হাতে স্যানিটাইজারের বিষয়টি নিশ্চিত করেই পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বেরিয়েছেন তিনি।

কিয়াওয়ের মতো সাহসী কয়েকজন ছাড়া চীনের রাজধানীর ব্যস্ত এলাকাগুলোও এখন কেউই মাড়াচ্ছেন না।

জিংশান পার্কের এক নিরাপত্তা কর্মী জানিয়েছেন, এমনকী আকর্ষণীয় এ তুষারপাতের সময়ও তাদের অভয়ারণ্যে পর্যটক আসছেন স্বাভাবিক সময়ের তিনভাগের একভাগ।

নিষিদ্ধ নগরীর বাইরে বরফ আচ্ছাদিত বেইজিংয়ে ছবি তোলার ভালো ভালো স্পটগুলোতে এবার জনসমাগম নেই বললেও চলে। অন্যান্য বছর এই সময়ে এলাকাটিতে থাকে ট্যুর বাসের ছড়াছড়ি। এখন পর্যটকদের আলাদা আলাদা ভাষার সেই কলতান একদমই নেই।

ইয়াং নামের একজন বলেন, ‘গত বছর যখন বরফ পড়েছিল, তখন একটা ছবি তোলার জন্য কাজ থেকে ছুটি নিয়ে কিছু সময়ের জন্য এখানে এসেছিলাম, ব্যাপক ভিড় ছিল। আর এ বছর, ছবি তোলার জায়গা নিয়ে আমার একদমই দুশ্চিন্তা করতে হচ্ছে না। ভাইরাস লোকজনকে ঘরের ভেতর আটকে রেখেছে।

চীন সরকারের পক্ষ থেকে জমায়েত হতে নিষেধ করায় মার্কেটগুলো এখন খালি পড়ে আছে। একসময় যেসব দোকানে ভিড় লেগে থাকতো এখন সেগুরো খালি পড়ে আছে। পরিণত হয়েছে জনমানবহীন শহর।

এসি