বেরোবি মেডিকেলে ভোগান্তিতে শিক্ষার্থীরা
বেরোবি সংবাদদাতা
প্রকাশিত : ০৫:৩১ পিএম, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২০ সোমবার
চিকিৎসকদের স্বেচ্ছাচারিতায় প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসা নিতে আসা শিক্ষার্থীরা।
সঠিক সময়ে মেডিকেল সেন্টারে না আসা, নির্ধারিত সময়ের আগেই মেডিকেল সেন্টার বন্ধ করা, রোগীদের বসিয়ে রেখে ফেসবুক চালানো, বাসায় চলে যাওয়া, অ্যাম্বুলেন্স দিতে গড়িমসি, মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ দেওয়াসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারের দায়িত্বরত চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক-অনাবাসিক দশ হাজার শিক্ষার্থীর প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসক রয়েছেন পাঁচজন। তাদের মধ্যে একজন ফাউন্ডেশন ট্রেনিংয়ে আছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী, মেডিকেল সেন্টারের নিয়োগপ্রাপ্ত চিকিৎসকদের অফিস সময় ছুটি বাদে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। কিন্তু নিয়ম না মেনেই অফিস সময় শিফটে ভাগ করে তিন ঘণ্টা করে ডিউটি করেন তারা। প্রশাসনকে না জানিয়ে শিফট ভাগ করার পরও মাঝেমধ্যে ঘণ্টার পর ঘণ্টা একজন চিকিৎসককেও পাওয়া যায় না মেডিকেল সেন্টারে।
সকাল ৯টায় আসার কথা থাকলেও দুপুর ১২টায় এসে বিকেল ৪টার মধ্যেই চলে যান তারা। ফলে অসুস্থ শিক্ষার্থীরা সেবা না পেয়ে চার কিলোমিটার দূরে রংপুর মেডিকেল কলেজ বা বিভিন্ন বেসরকারি মেডিকেল সেন্টারে যেতে বাধ্য হন।
বিভিন্ন সময় ভোগান্তির শিকার হয়ে একাধিক শিক্ষার্থীকে চিকিৎসকদের অনিয়মের বিষয়ে পোস্ট দিতে দেখা যায় ফেসবুকে। কয়েকদিন আগে ফেসবুকে একটি ছবি ভাইরাল হয়। সেখানে দেখা যায়, চিকিৎসা নিতে আসা অসুস্থ শিক্ষার্থীকে বসিয়ে রেখে মোবাইলের স্ক্রিনে তাকিয়ে আছেন চিকিৎসক। ছবিটি ভাইরাল হলে চিকিৎসকদের নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
ভুক্তভোগী বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী রিপন জানান, ‘চিকিৎসকের কাছে অসুস্থতার কথা বলছিলাম আর তিনি ফেসবুক চালাচ্ছিলেন। তখন আমার বন্ধু ছবিটি তুলেছিল।’ তবে অভিযুক্ত চিকিৎসক অলক কুমার এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।
আরেক ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মুত্তাকিন বলেন, 'মেডিকেল সেন্টারে গিয়ে চিকিৎসক পাওয়া যায় না। কয়েকদিন আগে অসুস্থ অবস্থায় মেডিকেল সেন্টারে গেলে আমাকে অপেক্ষা করতে বলে ভিসি স্যারের বাংলোতে যান তিনি। দেড় ঘণ্টা বসে থাকার পর কর্মচারী বলেন, চিকিৎসক চলে গেছেন।'
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে মেডিকেল অফিসার শাহরিয়ার বলেন, 'নন স্টপ সেবা দেওয়ার লক্ষ্যেই আমাদের ডিউটি নিজেরা ভাগ করে নিয়েছি।’
অ্যাম্বুলেন্স দিতে গড়িমসির ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘অনেক সময় আমরা যাচাই করার জন্য বিভাগের স্যারের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে বলি। তারা বললে দিয়ে দিই।’
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ বলেন, ‘চিকিৎসকদের অফিস সময় শিফটে ভাগ করার বিষয়টি আমার জানা নেই। একজন চিকিৎসক ফাউন্ডেশন ট্রেনিংয়ে আছেন। তিনি অফিসে যোগ দিলেই সব সমাধান হবে।’
এআই/এসি