পিপি হত্যায় ৫ জঙ্গির মৃত্যুদণ্ড হাইকোর্টে বহাল
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৬:৫১ পিএম, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২০ সোমবার
ফাইল ছবি
হাইকোর্ট ঝালকাঠির পিপি (সরকারী কৌঁসুলি) এডভোকেট হায়দার হোসেইন হত্যা মামলায় বিচারিক আদালতের প্রদত্ত রায় নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জেএমবির পাঁচ সদস্যের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন।
বিচারপতি সৌমেন্দ্র সরকার ও বিচারপতি শাহেদ নূর উদ্দিনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ আসামিদের আপিল খারিজ করে এ মামলার ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদন) গ্রহণ করে রায় দেন।
শুনানিতে আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ, সহকারী এটর্নি জেনারেল নির্মল কুমার দাস ও সৈয়দা শবনম মুশতারী। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী এসএম শাহজাহান, এসএম মাহবুবুল ইসলাম, মহিনুর রহমান। পলাতকদের পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী ছিলেন আসাদুর রহমান।
আদালত গত সোমবার ডেথ রেফারেন্স, আপিল ও জেল আপিলের শুনানি শেষে আজ রোববার রায়ের দিন ধার্য করেছিল। সে অনুযায়ী ডেথ রেফারেন্স গ্রহণ ও আসামিদের আপিল ও জেল আপিল খারিজ করে দিয়ে আজ রায়ের কার্যকরী অংশ (অপারেটিভ পার্ট) ঘোষণা করেন আদালত।
ডেপুটি এটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, দুই আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি, সাক্ষ্য পর্যালোচনা ও মামলার দালিলিক প্রমাণাদি বিবেচনায় নিয়ে হাইকোর্ট বিচারিক আদালতের দেয়া মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন।
২০১৫ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ঝালকাঠির অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আব্দুল হালিম পাঁচ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেন।
মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্তরা হলেন- রাজশাহীর আমিনুল ইসলাম ওরফে আমির হোসেন, বরগুনার আবু শাহাদাত তানভীর, খুলনার টুটপাড়ার মুরাদ হোসেন, বরগুনার তালতলার বেল্লাল হোসেন ও ঢাকার উত্তরখান এলাকার সগির হোসেন।
তাদের মধ্যে আসামি বেল্লাল হোসেন ও সগির হোসেন পলাতক রয়েছেন।
বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা হাইকোর্টে আপিল করে। অন্যদিকে, মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য (ডেথ রেফারেন্স) মামলার যাবতীয় নথি হাইকোর্টে পাঠানো হয়।
শুনানি শেষে আসামিদের আপিল খারিজ এবং ডেথ রেফারেন্স গ্রহণ করে আজ রায় দেন হাইকোর্ট।
২০০৫ সালের ১৪ নভেম্বর সকালে জেএমবির বোমা হামলায় ঝালকাঠি আদালতের বিচারক সোহেল আহম্মেদ এবং জগন্নাথ পাড়ে নিহত হন। এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন জেলা ও দায়রা জজ আদালতের তৎকালীন সরকারি কৌঁসুলি হায়দার হোসেন।
২০০৬ সালের ২৯ মে ঝালকাঠির অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ রেজা তারিক আহমদ সাত জঙ্গির ফাঁসির আদেশ দেন।
জেএমবি প্রধান শায়েখ আবদুর রহমান এবং সেকেন্ড ইন কমান্ড সিদ্দিকুর রহমান ওরফে বাংলা ভাইসহ শীর্ষ সাত জঙ্গির ফাঁসির আদেশ কার্যকর হয় ২০০৭ সালের ২১ মার্চ। শায়েখ আবদুর রহমানসহ জেএমবির শীর্ষ নেতাদের ফাঁসির আদেশ কার্যকর হওয়ার ২০ দিন পর ২০০৭ সালের ১১ এপ্রিল মামলা পরিচালনাকারী সরকারি কৌঁসুলি হায়দার হোসেইনকে গুলি করে হত্যা করে জেএমবি সদস্যরা। এ ঘটনার পরদিন নিহতের ছেলে তারিক বিন হায়দার বাদী হয়ে ঝালকাঠি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) উপ-পরিদর্শক মোশারেফ হোসেন হত্যার ঘটনার প্রায় তিন বছর পর ২০১০ সালের ১৭ জানুয়ারি জেএমবির পাঁচ সদস্য বেল্লাল, শাহাদাত, তানভীর, মুরাদ, ছগির ও আমিরের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
এসি