ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

হাইকোর্টের রায় উপেক্ষা করে রাবিতে তিন শিক্ষককে নিয়োগ

রাজশাহী অফিস

প্রকাশিত : ০৭:৪৩ পিএম, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২০ সোমবার

হাইকোর্টের রায়কে উপেক্ষা করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ক্রপ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের তিন শিক্ষকের নিয়োগ বহাল রেখেছে বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন। সোমবার তারা বিভাগে যোগদান করে ক্লাস নিয়েছেন বলে জানা গেছে। ২৭ জানুয়ারি যোগদান দেখিয়ে ওই তিন শিক্ষককে বিভাগে যোগদান করানো হয়েছে বলে জানান বিভাগটির সভাপতি অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম। 

এর আগে, ২০১৬ সালে ওই বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হলে ৩৮ জন আবেদন করেন। এরপর অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান দ্বিতীয় মেয়াদে উপাচার্য হয়ে শিক্ষক নিয়োগের যোগ্যতা শিথিল করেন এবং ২০১৯ সালের ৩০ জুলাই বিজ্ঞপ্তি সংশোধন করে পুনঃপ্রকাশ করা হয়। এই ঘটনায় বিভাগের শিক্ষক ও প্ল্যানিং কমিটির সদস্য অধ্যাপক মু. আলী আসগর নিয়োগ প্রক্রিয়ার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন। যার প্রেক্ষিতে গত বছরের ২১ আগস্ট নিয়োগ প্রক্রিয়া কেন অবৈধ হবে না জানতে চেয়ে হাইকোর্ট রুল জারি করেন। 

সংশোধিত বিজ্ঞপ্তিতে আদালতে রুল বিচারাধীন থাকা অবস্থায় গত ২৬ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৯৭তম সিন্ডিকেট সভায় রেজভী আহমেদ ভূঁইয়া, শামসুন্নাহার ও মোক্তার হোসেন নামের ওই তিন শিক্ষককে নিয়োগ দেওয়া হয়। ২৮ জানুয়ারি তাদের নিয়োগ অবৈধ ঘোষণা করে নিয়োগ বাতিল করে রায় দেন হাইকোর্ট। এছাড়াও পরবর্তী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে ২০১৬ সালে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির আলোকে পুনরায় শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

এই বিষয়ে বিভাগটির সভাপতি অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ওই তিন শিক্ষককে বিভাগে যোগদান করানো হয়েছে। তারা এখন বিভাগে নিয়মিত ক্লাস নিচ্ছেন। কিন্তু হাইকোর্টের রায়কে উপেক্ষা করে তাদের বিভাগে যোগদান করানোর বিষয়ে তিনি বলেন, এটা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিষয়। আমি এবিষয়ে কিছু বলতে পারব না। 

তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের একটি সূত্র জানিয়েছে, ২৬ তারিখের সিন্ডিকেট সভায় ওই তিন শিক্ষককে নিয়োগ দেয়া হলেও পরবর্তীতে হাইকোর্টের রায়ের ভিত্তিতে তাদের নিয়োগ স্থগিত রাখা হয়েছিল। 

এদিকে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক সামসুন্নাহার বলেন, আমার নিয়োগ বাতিল হবে নাকি বহাল থাকবে সেটা বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসনের ওপর নির্ভর করছে। বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন যা সিদ্ধান্ত নিবে, তাই মেনে চলব।

এবিষয়ে বক্তব্য নেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এমএ বারীর সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি ফোন ধরেননি। পরে তার দফতরে গিয়ে দেখা করতে গিয়ে সাংবাদিক পরিচয় দিলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি। এরপর এই প্রতিবেদক দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করে দফতরের বাইরে তার দেখা পেলেও তখনও তিনি কোনও কথা বলতে চাননি। 

বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি সাড়া দেননি। পরে তার দপ্তরে যোগাযোগ করলে তিনি দেখা করতে পারবেন না বলে দপ্তর থেকে জানানো হয়।

আরকে//