ঢাকা, মঙ্গলবার   ০৮ অক্টোবর ২০২৪,   আশ্বিন ২২ ১৪৩১

হাজার ছাড়ালো করোনা ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:৫৫ এএম, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২০ মঙ্গলবার

সিভিয়ার একিউট রেসপিরেটরি সিন্ড্রোমের (সার্স) প্রাদুর্ভাবকে অতিক্রমের পর এবার হাজার ছাড়িয়েছে প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাসে মৃত্যুযাত্রীদের সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় মরণ এ ব্যাধিতে নতুন করে ১০৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। যাদের মধ্যে ১০৩ জনই হুবেই প্রদেশ ও ৬৭ জন উহান শহরের। বাকিরা জিনজিয়াং, আনহুই, হুনান, তিনজিন ও রাজধানী বেইজিংয়ের। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০১৬ জনে।

অপরদিকে, সোমবার পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যায় আজ সকাল পর্যন্ত নতুন করে ২ হাজার ৪৭৩ জন যোগ হয়েছে। এ নিয়ে ভয়াবহ আকার ধারণ করা করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৪২ হাজার ৬৩৮ জনে পৌঁছে।

দেশটির জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের বরাত দিয়ে আজ মঙ্গলবার কাতার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।

এদিকে, নতুন এ ভাইরাসটিতে প্রথমবারের মতো একদিনে মৃতের সংখ্যা শতক ছাড়িয়েছে। দিন যত যাচ্ছে মৃতের সারি যেন বেড়েই চলেছে। এর আগে গত রোববারই ২০০৩ সালের ভাইরাস সিভিয়ার একিউট রেসপিরেটরি সিন্ড্রোমের (সার্স) প্রাদুর্ভাবে নিহতের সংখ্যাকে ছাড়িয়ে যায় করোনা।

মরণ এ ব্যাধিতে শুধু হুবেই প্রদেশেরই ৩৮ হাজারের বেশি নাগরিক আক্রান্ত। এর মধ্যে গোটা চীনে ৪২ হাজার ১৭০ জন আর বেইজিংসহ বিশ্ব মিলে এ ভাইরাস ছড়িয়েছে ৪৩ হাজার ০৯০ জনের বেশি মানবদেহে।

এদিকে, ছুটির দিনেও হাসপাতালে কর্মরত সকল কর্মকর্তা-কর্মচারিদের দায়িত্বে পালন করতে দেখা যায়। সোমবারের এক বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দেশজুড়ে প্রায় ২০ হাজারের বেশি মেডিকেল কর্মীকে উহানে পাঠানো হয়।

চলমান পরিস্থিতিতেও সোমবার দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং মহামারী শুরুর পর প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে হাসপাতাল পরিদর্শন করেন।

করোনার উৎপত্তিস্থল হুবেই প্রদেশের উহানে এর আগে ২০০৩ সালে ভাইরাস সিভিয়ার একিউট রেসপিরেটরি সিন্ড্রোমের (সার্স) প্রাদুর্ভাবে ৭৭৪ জন মারা গিয়েছিল। এবার সে রেকর্ডকেও ছাড়িয়ে যায় করোনা।

ফলে প্রতিদিন আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা লাফিলে লাফিরে বাড়ছে। সময় যত ঘনিয়ে আসছে ভয়াবহ অবস্থার দিকে যাচ্ছে চীন। আক্রান্তদের অবস্থা অনেকেরই সংকটাপন্ন। এ যেন মৃত্যুকূপে পরিণত হচ্ছে এশিয়ার এ সমৃদ্ধ দেশটি। শুধু যে মানুষের দেহে তা নয়, এর প্রভাব পড়েছে দেশটির অর্থনীতিতেও। কার্যত এখন অচল চীন।

চীনে এই ভাইরাসে মৃতদের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের একজন করে নাগরিক রয়েছে। এছাড়া ফিলিপাইন এবং হংকংয়ে একজন করে মৃত্যু হয়েছে। পাশাপাশি বিশ্বের প্রায় ২৫টি দেশে করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়া, থাইল্যান্ড, জাপান ও ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা উল্লেখ করার মত। তাদের হাসপাতালে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশি কারো দেহে করোনার সন্ধান মিলেনি।  

ইতিমধ্যে বাংলাদেশসহ অনেক দেশই তাদের নাগরিকদের চীন ভ্রমণের ওপর অনেকটা নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। চীনও অন্য দেশকে আসা কোনো নাগরিককে আপাতত বেইজিংয়ে প্রবেশ করতে দিচ্ছেনা। ফলে, চীনে বসবাসরত অন্যান্য দেশের নাগরিকদের আপাতত নিজ দেশে ফেরা হচ্ছে না।

এ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ায়, বেলজিয়াম, কম্বোডিয়া, কানাডা, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, হংকং, ভারত, ইতালি, জাপান, ম্যাকাও, মালয়েশিয়া, নেপাল, রাশিয়া, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া, স্পেন, শ্রীলঙ্কা, সুইডেন, তাইওয়ান, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন, আরব আমিরাত, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র এবং ভিয়েতনামে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

এআই/