ঢাকা, বুধবার   ২৭ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১২ ১৪৩১

৭ দফা দাবিতে আন্দোলনে শেখ হাসিনা আইসিটি ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:২০ পিএম, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ বুধবার

সাত দফা দাবি নিয়ে এবার আন্দোলনে নেমেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ হাসিনা আইসিটি ইনস্টিটিউট এর শিক্ষার্থীরা। গতকাল (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে নিজস্ব শিক্ষক, নিজস্ব গভর্নিং বডি, ল্যাব সুবিধা নিশ্চিতকরণ এবং পরবর্তী শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তি অব্যাহত রাখাসহ সাত দফা দাবিতে মানববন্ধন করেন ইনস্টিটিউটটির শিক্ষার্থীরা। 

মানববন্ধন শেষে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করে। দ্বিতীয় দিনের মতো তাদের এই অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। এতে ইনস্টিটিউটের অধীন সিএসই বিভাগের ৫৯ জন ও ইইই বিভাগের ২৭জন শিক্ষার্থী টানা অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন।

ইনস্টিটিউটটিতে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, ভর্তির সময় সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিন আশ্বাস দিয়েছিলেন ইনিস্টিটিউটের অধীনে হলেও তারা সকল সুযোগ সুবিধা পাবেন। কিন্তু একবছর পার হলেও তাঁরা তেমন কোনো সুযোগ সুবিধা পাননি। বিভাগটির নিজস্ব শিক্ষক, ক্লাসরুম ,ল্যাবরুম কিছুই নেই। তাছাড়া বর্তমানে কেউ ইনিস্টিটিউটটির পরিচালকের দায়িত্বও গ্রহণ করতে চান না। এদিকে সুযোগ-সুবিধার অভাবে চলতি শিক্ষাবর্ষে ইনস্টিটিউটে ভর্তি কার্যক্রম ও বন্ধ রাখেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আরো জানান, প্রতিটি সেমিস্টার ৬ মাসে শেষ করার কথা থাকলেও শিক্ষকের অভাবে তাদের ১ম সেমিস্টার শেষ করতে প্রায় ১০ মাস সময় লেগেছে।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থী সাগর দে হতাশা ব্যক্ত করে জানান, “বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষপ্রান্তে একটা পরিত্যক্ত ভবনে আমরা ক্লাস করি। আমাদের কোনো ক্লাসরুম নেই, ল্যাবরুম নেই; এমন কি নিজস্ব শিক্ষকও নেই। ক্লাসের হোয়াইট বোর্ড থেকে শুরু করে মার্কার,ডাস্টার সবকিছু নিজেদের কিনতে হয়েছে। অন্যান্য বিভাগের শিক্ষকরা সময় পেলে সপ্তাহে একদিন অথবা দুদিন ক্লাস নেন এবং অন্য বিভাগগুলো আমাদেরকে তাদের ল্যাবে প্রবেশের সুযোগ দিলে আমরা ল্যাবে কাজ করার সুযোগ পাই। তাছাড়া আমাদের কেউ দায়িত্ব নিতে চায় না। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মানুযায়ী ভর্তি হয়েও নিজ বিশ্ববিদ্যালয়েই শরণার্থীর মত আছি আমরা। এব্যাপারে আমরা  ইউজিসি, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করছি।"

কতদিন ধরে এ আন্দোলন চলবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, 'যতদিন পর্যন্ত আমাদের দাবি দাওয়া পূরণ না হবে, ততদিন আমাদের এই আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।'

বশেমুরবিপ্রবির ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ড. মো. শাহজাহান জানান,”অবকাঠামো সহ পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত হওয়ার পর শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হবে এমন শর্তে ইনিস্টিটিউটটির অনুমোদন দিয়েছিলো বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন। কিন্তু সাবেক উপাচার্য নূন্যতম সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত না করেই ইনিস্টিটিউটের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করে যার ফলে এধরণের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এসব সমস্যা নিরসনে যেসকল পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন সেগুলো চলতি উপাচার্য হিসেবে আমার ক্ষমতার বাইরে।”

প্রসঙ্গত, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) অধীনে তৃতীয় ইনিস্টিটিউট হিসেবে ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ থেকে কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইন্জিনিয়ারিং (বিভাগ) এবং ইলেকট্রনিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইন্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগ নিয়ে শিবচরে যাত্রা শুরু করে শেখ হাসিনা আইসিটি ইনস্টিটিউট। এদিকে শিবচরে কোনো ধরনের অবকাঠামো না থাকায় ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে শিক্ষার্থীদের মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তর করা হয়।

আরকে//