দু`বছর পর হিলি প্লাটফর্মের কার্যক্রম শুরু
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৯:৫৯ পিএম, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ শনিবার | আপডেট: ১০:০৩ পিএম, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ শনিবার
জনবল সংকটের অজুহাতে দু'বছর ধরে ক্লোজিং ডাউন অবস্থায় বন্ধ থাকার পর দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরের একমাত্র রেলস্টেশনটিতে প্লাটফর্মে ট্রেন দাড়ানোর লক্ষ্যে রেললাইন, সিগন্যালসহ সবকিছু মেরামত করছে রেল কতৃপক্ষ। এদিকে দীর্ঘদিন পর আবারও প্লাটফর্মে ট্রেন দাড়ানোর খবরে স্বস্তি ফিরেছে এই পথ দিয়ে চলাচলরত ট্রেন যাত্রীদের।
গত ২০১৮ সালের ৮ জানুয়ারী জনবল সংকটের অজুহাত দেখিয়ে হিলি রেল স্টেশনটিকে ক্লোজিং ডাউন করে পার্শ্ববর্তী বিরামপুর ও পাঁচবিবি থেকে নিয়ন্ত্রনের মাধ্যমে ২নং লাইন দিয়ে ট্রেন চলাচল চালু করে রেলকৃতপক্ষ। এ কারণে হিলি স্টেশনে স্টপেজকৃত বরেন্দ্র, তিতুমির ও খুলনামেইল ট্রেনে অনেক কষ্ট করে উঠানামা করতে হতো, প্রায়ই ঘটতো দুর্ঘটনা, বয়স্ক ও নারী যাত্রীদের ভোগান্তি ছিল সবচেয়ে বেশি। একইভাবে ভোগান্তি পোহাতে হতো ভারতে চিকিৎসা ও ব্যবসাসহ বিভিন্ন কাজে আসা যাওয়া করা পাসপোর্ট যাত্রীদেরসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হিলি স্থলবন্দরে আসা ব্যবসায়ীদের। এদিকে শনিবার দুপুরে সরেজমিন স্টেশনের কার্যক্রম পরিদর্শন করেন হাকিমপুর (হিলি) পৌরসভার মেয়র জামিল হোসেন চলন্ত।
হিলি রেলস্টেশন দিয়ে চলাচলরত রাজশাহী বিশ্ব বিদ্যালয়ের ছাত্র ফারুক হোসেন ও ছাত্রী মনিরা ইয়াসমিন বলেন, একসময়ের ঐতিহ্যবাহী হিলি রেলস্টেশনটি কাঠের পুতুলের মতো দাড়িয়ে রয়েছে। এই পথ দিয়ে বেশ কিছু ট্রেন চলাচল করলেও সব ট্রেন এখানে দাড়ায় না এতে করে আমাদের বিশেষ করে যারা ট্রেনে যাতায়াত করে তাদের জন্য খুব সমস্যা হয়। হিলি থেকে রাজশাহী যাবার পথে বরেন্দ্র এক্সপ্রেস আবার রাজশাহী থেকে হিলি আসার পথে তিতুমির এক্সপ্রেস ট্রেনটি থাকে সাথে লোকাল খুলনা মেইল ট্রেনটির স্টপেজ হিলি রেলস্টেশনে রয়েছে। কিন্তু দুবছরের বেশি সময় ধরে হিলি স্টেশনে ট্রেন দাড়ালেও সেটি দাড়াতো ২ নং লাইনে, এতে করে ছেলেরা উঠতে পারলেও মেয়ে মানুষরা উঠতে গিয়ে বিপাকে পড়েন। সঙ্গে মালামাল থাকলে তো উঠাই সম্ভব হয়ে উঠতোনা, বেশ উচু হওয়ার কারনে হাতল ধরে উঠতে গিয়ে মাঝে মধ্যেই দুর্ঘটনায় পড়তো অনেকে। এর উপর এখানে কোন টিকিট পাওয়া যেতোনা, আমাদের পার্শ্ববর্তী স্টেশন বিরামপুর বা জয়পুরহাটে গিয়ে বাড়তি টাকা দিয়ে টিকিট কাটতে হতো সবকিছু মিলিয়ে নানা বিড়ম্বনার মধ্যে পড়তে হতো আমাদের। তবে শুনলাম এখানে স্টেশন মাস্টারসহ অন্যান্য জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এতে করে ট্রেন প্লাটফর্মে দাড়াবে ও টিকিট পাওয়া যাবে এতে করে আমাদের জন্য বেশ ভালো হবে।
হাকিমপুর (হিলি) পৌর মেয়র জামিল হোসেন চলন্ত বলেন, দীর্ঘদিন ধরে হিলি রেলস্টেশনটি ক্লোজিং ডাউন অবস্থায় রয়েছে এতে করে আমাদের সাধারন মানুষজন খুব ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। এবিষযটি নিয়ে মানবন্ধন, স্মারকলিপিসহ নানা কর্মসূচী পালন করা হয়েছিল। এর পাশাপাশি দিনাজপুর-৬ আসনের সংসদ সদস্য শিবলী সাদিক ১৮ সালের ১৭ জানুয়ারি মহান জাতীয় সংসদে বিষয়টি তুলে ধরেছিলেন, সেই প্রেক্ষিতে তৎকালীন রেলমন্ত্রী স্টেশনটি চালুর আশ্বাস দিয়েছিলেন এর পরও সেটি চালু হয়নি। এর পর থেকেই এমপি ও উপজেলা চেয়ারম্যানসহ আমাদের সকলের প্রচেষ্টায় অনেক স্থানে যোগাযোগের পর হিলি রেল স্টেশন চালুর বিষয়ে একটা সিন্ধান্ত এসেছে। সেই সাথে আমি সম্প্রতি বর্তমান রেলমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছি তিনি আমাকে আশ্বস্ত করেছেন হিলি স্টেশনে বর্তমানে স্টপেজ থাকা ট্রেনসহ অন্যান্য দুএকটি ট্রেন দাড়ানোর ব্যবস্থা করে দেবেন। এছাড়াও রেলস্টেশনে যাত্রীদের টয়লেট ও বাথরুম না থাকায় পৌরসভার অর্থায়ানে অচিরেই একটি ওয়াশরুম স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছি।
হিলিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত স্টেশন মাস্টার রুহুল আমিন জানান, ইতোমধ্যেই হিলি রেলস্টেশনটির কার্যক্রম চালুর লক্ষ্যে আমাকে মাস্টার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সেই সাথে পয়েন্টম্যান, বুকিং সহকারিও নিয়োদ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও প্লাটফর্মে ট্রেন দাড়ানোর লক্ষ্যে ১নং লাইনটি সংস্কার করা হচ্ছে, সিগন্যালসহ পয়েন্টগুলো ঠিক করা হয়েছে। উর্দ্ধতন কতৃপক্ষ আমাকে জানিয়েছে আগামী সোমবার সকাল থেকে হিলি রেলস্টেশনে ট্রেন দাড়ানোর মধ্য দিয়ে স্টেশনটির সকল কার্যক্রম শুরু হতে পারে বলে তিনি জানিয়েছেন।
কেআই/আরকে