করোনার আশঙ্কায় রংপুরে হাসপাতালে ভর্তি চীনা নারী
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৬:৫২ পিএম, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ রবিবার
এবার করোনায় আক্রান্ত সন্দেহে রংপুরে এক চীনা নারীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নীলফামারীর সৈয়দপুরের উত্তরা ইপিজেডে কর্মরত জাংওয়াই নামের ওই নারী গত কয়েকদিন ধরে জ্বর ও সর্দিতে ভুগছিলেন। পরে তাকে করোনা আইসুলেশন বিভাগে নেয়া হয়।
আজ রোববার দুপুরের দিকে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন। তবে তার শরীরে এখন পর্যন্ত করোনা ভাইরাসের কোনো লক্ষণ পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে আইইডিসিআর।
এ নিয়ে গত কয়েকদিনে রংপুর মেডিকেলে করোনা আশঙ্কায় চারজনকে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে তিনজনই চীন ফেরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থী। তবে তাদের শরীরেও এখন পর্যন্ত করোনার সন্ধান মিলেনি।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত ৪ ফেব্রুয়ারি ওই নারী চীন থেকে বাংলাদেশে আসেন। সেখান থেকে সরাসরি নিজের কর্মস্থল সৈয়দপুরের উত্তরা ইপিজেডে যোগ দেন। গত দুই দিন ধরে সর্দি-জ্বর ও বুকে ব্যথা অনুভব করায় স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নেন তিনি। কিন্তু অবস্থা আরও খারাপ হলে রোববার দুপুরের দিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি করা হয়।
রংপুরের মেডিকেলের করোনা ইউনিটের মুখপাত্র ডা. নারায়ণ চন্দ্র জানান, এখানে তার চিকিৎসা চলছে। বিষয়টি সম্পর্কে জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানকে (আইইডিসিআর) জানানো হয়েছে। সেখান থেকে এসে বিশেষজ্ঞ দল নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় নিয়ে গেছে। প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করা যাবে না বলে জানান ওই চিকিৎসক।
প্রসঙ্গত, মরণঘাতী করোনা ভাইরাসে এখন পর্যন্ত চীনে ১ হাজার ৭শ জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৭০ হাজার। নিহত ও আক্রান্তদের অধিকাংশই উৎপত্তিস্থল হুবেই প্রদেশের।
আর চীনের বাহিরে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত জাপানে। সূর্য্যদয়ের দেশটিতে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৩শ’ ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে চলতি মাসের শুরুর দিকে উহানে এক জাপানি নাগরিক মারা গেলেও গত শুক্রবার প্রথমবারের মত জাপানে এ ভাইরাসে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এ নারীর মৃত্যু হয়।
এছাড়াও চলতি মাসের প্রথমদিকে হংকং ও ফিলিপাইনে একজন করে মারা যান। আর গতকাল শনিবার এশিয়ার বাইরের দেশ ফ্রান্সে এক চীনা পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে। ৮০ বছর বয়সী ওই চীনা পর্যটক সম্প্রতি হুবেই থেকে ফ্রান্সে বেড়াতে এসেছিলেন।
অপরদিকে আশকোনা হজ্ব ক্যাম্পে পর্যবেক্ষণে থাকা চীন ফেরত ৩১২ জনের মাঝে শরীরে করোনা ভাইরাসের সংক্রণ না পাওয়ায় তাদের বাড়িতে পাঠানো হয়েছে। গতকাল শনিবার ও আজ রোববার তারা বাড়িতে ফেরেন।
এদিকে করোনার প্রাণকেন্দ্র চীনের উহান শহরটি এখন কার্যত বন্ধ বা অচল হয় আছে। এর মধ্যেই জীবনের ঝুঁকি নিয়েই বহু স্বেচ্ছাসেবী আক্রান্তদের হাসপাতালে আনা-নেয়া করছেন। আবার অনেকে স্বাস্থ্য কর্মীদের যাদের পরিবহনের ব্যবস্থা নেই তাদের সহায়তার চেষ্টা করছেন। দেশটিতে সাধারণ রোগীর পাশাপাশি এখন পর্যন্ত ৬ চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে।
তবে চলমান পরিস্থিতেও সহসাই আসছে না প্রতিষেধক। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দেয়া তথ্যানুযায়ী অন্তত ১৮ মাস সময় লাগবে প্রতিষেধক হাতে আসতে। ফলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহতার দিকে যাবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এসি