ঢাকা, বুধবার   ২৭ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১২ ১৪৩১

আন্দোলনে অনড় শিক্ষার্থীরা: কার্যত অচল বশেমুরবিপ্রবি

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৭:৪১ পিএম, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ রবিবার

বিভাগ অনুমোদনের দাবিতে টানা ১১ দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

আজ রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা থাকলেও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ভবনের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে রাখে। এরফলে টানা ষষ্ঠ দিনের মতো কার্যত বন্ধ রয়েছে বশেমুরবিপ্রবির একাডেমিক ও প্রশাসনিক সকল কার্যক্রম। এরফলে অচল হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম।

এদিকে বেলা ১১ টা থেকে শিক্ষকদের একটি প্রতিনিধি দল আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সাথে বৈঠক করে। দুই দিনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখার প্রস্তাব দেয় এবং তারা জানায় আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সাথে ইতিহাস বিভাগের অনুমোদন নিয়ে বৈঠক আছে। ওই বৈঠক পর্যন্ত অপেক্ষা করার জন্য তারা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের প্রতি আহবান জানায়। শিক্ষার্থীরা প্রতিনিধিদলের প্রস্তাব প্রত্যাখান করে তাদের আন্দোলন অব্যাহত রাখে।

এদিকে ইতিহাস বিভাগের আন্দোলন নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। অর্থনীতি চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান জানান,"ইতিহাস বিভাগের অনুমোদনের দাবীতে আন্দোলনের কারণে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।অনেকেই প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিতে পারছেন না। ফলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সমর্থন হারাবে ইতিহাস বিভাগ।" তিনি আরো বলেন,"ইউজিসিই এই সমস্যার জন্য দায়ী। তারা সবকিছু জানার পরও এতদিন চুপ ছিলো।"

কৃষি বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তাওহীদুল ইসলাম জানান, "বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্স প্রোগ্রামে ভর্তি হওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এই সপ্তাহের মধ্যে আমাদের  প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দরকার। কিন্তু আন্দোলনের কারণে প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ থাকায় আমরা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তুলতে পারছিনা। এমতাবস্থায় প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের অভাবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আমরা বাকৃতিতে মাস্টার্স প্রোগ্রামে ভর্তি হওয়া নিয়ে শংকিত। এতে করে আমরা ১ বছর পিছয়ে যেতে পারি।"

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মোঃ শাহজাহান বলেন, "আগামী ১৮ তারিখ ইউজিসি'র সাথে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের বৈঠক রয়েছে। সে পর্যন্ত অপেক্ষা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম চলতে দেয়ার জন্য তাদের প্রতি আহবান জানানো হয়েছিল। কিন্তু শিক্ষার্থীরা তা কর্ণপাত না করে আন্দোলনে অনড় রয়েছে।"

প্রসঙ্গত, ইউজিসির অনুমোদন ব্যতিত বশেমুরবিপ্রবির সাবেক উপাচার্য খোন্দকার নাসিরউদ্দিন ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ ইতিহাস বিভাগের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করেন। প্রায় তিন বছর পর গত ৬ ফেব্রুয়ারী বিভাগটিতে নতুন কোনো শিক্ষার্থী ভর্তি না করার নির্দেশ দেয় ইউজিসি।ইউজিসির সিদ্ধান্ত প্রত্যাখান করে ৬ ফেব্রুয়ারি রাত থেকেই প্রশাসনিক ভবনের সামনে আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা এবং ৮ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সব গুরুত্বপূর্ণ ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।বিভাগটিতে তিন ব্যাচে সর্বমোট ৪১৩ জন শিক্ষার্থী অধ্যায়নরত আছেন।

আরকে//