শান্ত পারলেও হতাশ করলেন তামিম
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০২:২৫ পিএম, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ রবিবার
লং ভার্সনে সময় ধরে খেলার খ্যাতি পাওয়া সাইফ হাসান ফিরেছেন শুরুতেই। করেছেন মাত্র ৮ রান। এবার হতাশ করলেন অভিজ্ঞ ওপেনার তামিম ইকবালও।
দারুণ ইনিংস খেলার প্রতিশ্রুতি দেয়া বাম হাতি এ ব্যাটসম্যান দলীয় ৯৬ রানের মাথায় অর্ধশতক থেকে ৯ রান দূরে থেকে ৪১ রান করে ত্রিপানোর বলে সাজঘরে ফেরেন। তাকে তালুবন্দি করেন সেই চাকাবভা।
এদিন তামিম ইকবালের ক্যারিয়ারে তথা বাংলাদেশে ক্রিকেটের ইতিহাসে এক মাইলফলকে পৌঁছান তিনি। প্রথম কোনো বাংলাদেশি হিসেবে ১৩ হাজারি রানের ঘরে নাম লেখান এ বামহাতি ওপেনার।
সংখ্যা বিবেচনা থেকে শুরু করে দেশের ইতিহাসে সর্বকালের সেরা ব্যাটসম্যানে পরিণত হয়েছেন তামিম ইকবাল। বাংলাদেশের আর কোনো ব্যাটসম্যানেরই নেই এমন কৃতিত্ব। এমনকি তের হাজার তো দূরে থাক, ১২ হাজারেই নেই কেউ। তার পেছনে আছেন আইসিসির কর্তৃক সবধরণের ক্রিকেট থেকে এক বছরের জন্য নিষেধাজ্ঞায় থাকা সাকিব আল হাসান। তার রান ১১ হাজার ৭৫২।
এছাড়া, দশ হাজারের বেশি আন্তর্জাতিক ম্যাচে রান করা অন্য ব্যাটসম্যান হলেন মি.ডিপেন্ড্যাবল খ্যাত মুশফিকুর রহিম (১১৫৭৫)।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চলতি টেস্টে নামার আগে তামিমের রান ছিল ১২ হাজার ৯৭৩। আজ রোববার ম্যাচে দ্বিতীয় দিনের দ্বিতীয় সেশনে ব্যক্তিগত ২৭ রানে পৌঁছলেই তার পূরণ হয়ে যায় ১৩ হাজার রান।
কিন্তু মাইলফলকের এ দিনে খুব বেশিদূর যেতে পারেননি তিনি। অর্ধশতক পূরণের আগে ৪১ রানে আউট হন অভিজ্ঞ এ ওপেনার। এখন পর্যন্ত সব ফরম্যাট মিলে তার রান বেড়ে হয়েছে ১৩০১৪।
এর আগে মিরপুর টেস্টের দ্বিতীয় দিনে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই হোচট খায় স্বাগতিকরা। দলীয় ১৮ রানের মাথায় নায়াউসির বলে চাকাবভার হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন সাইফ হাসান (৮)।
তবে তামিম বিদায় নিলেও ঠিকই অর্ধশতকে পৌঁছেছেন দুইয়ে নামা নাজমুল হাসান শান্ত। ৬ চারে ১১১ বল খেলে অর্ধশতক পূরণ করেন তিনি।
এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বাংলাদেশের সংগ্রহ ২ উইকেটে ১২০ রান। ক্রিজে নাজমুল হাসান শান্ত ৫৫ ও অধিনায়ক মোমিনুল হক ১২ রান নিয়ে ব্যাট করছেন।
এর আগে আবু জায়েদ রাহী ও তাইজুল ইসলামের অসাধারণ বোলিংয়ে দ্বিতীয় দিনের শুরুতেই লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় জিম্বাবুয়ে। এদিন মাত্র ৩৯ রান যোগ করে ২৬৫ রানে থেমে যায় তাদের প্রথম ইনিংস।
গতকালের ৬ উইকেটে ২২৬ রান নিয়ে আজ রোববার দ্বিতীয় দিনে মাঠে নামে সফরকারীরা। বাংলাদেশি পেসারদের আক্রমণ একের পর এক ঠেকাতে থাকেন সফরকারী ব্যাটসম্যানরা। তবে দলীয় ২৪০ রানের মাথায় লক্ষ্যভেদ করতে সক্ষম হন রাহী। তার শিকার হন ডোনাল্ড ত্রিপানো (৮)।
তার বিদায়ের খানিক পরেই আবারও জায়েদের আঘাত। এবার তার বলে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়েন আনিসলে এন্দোলভু। তাকে শূন্য রানে ফেরান এ পেসার।
সেখান থেকে কোমড় সোজা করে দাঁড়ানোর আগেই আঘাত হানেন স্পিনার তাইজুল ইসলাম। চার্ল্টন টিসুমাকে এলবিডব্লিউয়ে সাজঘরে ফেরান তিনি।
সেখান থেকে রেগিস চাকাভা বড় সংগ্রহের লক্ষ্যে লড়াই চালিয়ে যান। তবে তাকে আর বেশিদূর যেতে দেননি স্পিনার তাইজুল। বাউন্ডারি মারতে গিয়ে নাঈম হাসানের হাতে ক্যাচ দিয়ে দলের শেষ ব্যাটসম্যান হিসেব আউট হন তিনি। মাঠ ছাড়ার আগে সফরকারীদের মূল্যবান ৩০টি রান উপহার দেন এ ব্যাটসম্যান।
ফলে, দ্বিতীয় দিনে প্রথম সেশনের আগেই ২৬৫ রানে অলআউট হতে হয় জিম্বাবুয়কে। স্বাগতিকদের পক্ষে পেসার আবু জায়েদ রাহী ও স্পিনার নাঈম হাসান ৪টি করে উইকেট লাভ করেন। আর বাকি দুটি নেন বাম হাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম।
এর আগে গতকাল শনিবার প্রথমদিনে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুতেই হোচট খায় সফরকারীরা। তবে ঘুরে দাঁড়িয়ে উল্টো বাংলাদেশকে চাপে ফেলে দিয়েছিল তারা। পরে একে একে চারটি উইকেট তুলে নিয়ে বাংলাদেশকে স্বস্তি এনে দিয়েছেন তরুণ স্পিনার নাঈম হাসান। তাতে সঙ্গী হন আজকের ২টিসহ চার উইকেট নেয়া আবু জায়েদ রাহীও।
যাতে প্রথম দিন শেষে জিম্বাবুয়ের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৬ উইকেটে ২২৮ রান। দিনের একবারে শেষ বেলায় এসে নাঈমের অসাধারণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক ক্রেইগ আরভিন। তবে তার আগে কাজের কাজটিই করে গেছেন এই বাঁহাতি। ষষ্ট ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়ার আগে খেলেন ১০৭ রানের এক অনবদ্য ইনিংস। ২২৭ বলের সে ইনিংসে ছিল ১৩টি দর্শণীয় চারের মার।
জিম্বাবুয়ের ইনিংসে সেঞ্চুরি করে দিনের সেরা যেমন ছিলেন আরভিন। তেমনি এই তারকাকে ফেরানো নাঈমও দিনের সেরা ছিলেন বাংলাদেশ শিবিরে। সর্বোচ্চ চারটি উইকেট তুলে নিয়ে প্রথম দিনের সফল বোলার ছিলেন টাইগার এই তরুণ স্পিনার।
এআই/