বাচ্চার খাবার আনতে গিয়ে দিল্লির সংঘর্ষে প্রাণ গেল ফুরকানের
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৫:১৭ পিএম, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ মঙ্গলবার | আপডেট: ০৫:৩৮ পিএম, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ মঙ্গলবার
নিহত মুহম্মদ ফুরকান। ছবি: সংগৃহীত
দিল্লির বিক্ষোভে গতকাল থেকেই দোকানপাট বন্ধ । কিন্তু ছেলেমেয়ের মুখে খাবার তুলে দিতে রাতে বাইরে বেরিয়েছিলেন বাবা। আর খাবারের জন্য অপেক্ষায় ছিল সন্তানরা, কিন্তু বাবা যে ফিরছে না। এমন অপেক্ষার মাঝে বাবা ফিরলেন, তবে লাশ হয়ে।
ভারতের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) বিরোধী ও সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের কারণে সোমবার জাফরাবাদসহ দিল্লির উত্তর-পূর্ব একাধিক জায়গায় বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। জাফরাবাদ সেতুর পাশেই কদমপুরী এলাকার বাসিন্দা ছিলেন মুহম্মদ ফুরকান। হস্তশিল্প ব্যবসায়ী ছিলেন তিনি।
ভাইয়ের কথা বলতে গিয়ে সংবাদমাধ্যমে কেঁদে ফেলেন ফুরকানের বড় ভাই ইমরান। তিনি জানান, ভাইয়ের মতো তারও হস্তশিল্পের ব্যবসা রয়েছে। বিক্ষোভের জেরে গতকাল বাজার বন্ধ ছিল। কাজ না থাকায় দুপুর আড়াইটা নাগাদ ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করতে যান তিনি। সেই সময় বাড়িতেই ছিলেন ফুরকান। সন্ধ্যা নাগাদ ফিরে আসেন তিনি। তারপরই তাঁর কাছে ফোন আসে।
ইমরান বলেন, বাড়ি ফিরে একটি ফোন পাই আমি। একজন জানান, ভাইয়ের পায়ে গুলি লেগেছে। প্রথমে বিশ্বাসই হয়নি। ভাবলাম, একটু আগে যাকে দেখে এলাম, মুহূর্তের মধ্যে এমন কী হল? সঙ্গে সঙ্গে ওর নম্বরে ফোন করি। কিন্তু কেউ ধরেনি। তাতেই দুশ্চিন্তা বাড়ে আমার। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই একের পর এক ফোন আসতে শুরু করে আমার কাছে। জানতে পারি, গুরু তেগ বাহাদুর হাসপাতালে ভাইকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
দেড়ি না করে হাসপাতালে ছুটে যান ইমরান, কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ হয়ে যায় বলে জানান তিনি। ইমরান বলেন, ‘তড়িঘড়ি হাসপাতালে ছুটে যাই আমি। ডাক্তারদের হাতেপায়ে ধরি আমি। অন্য কোথাও নিয়ে গেলে ওকে বাঁচানো যাবে কি না জানতে চাই। কিন্তু চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন, সব শেষ।’
এই বলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন ইমরান। তিনি বলেন, ‘চোখের সামনে অন্ধকার দেখছি। কিছুই রইল না। ছোট ছোট দুটি ছেলেমেয়ে রয়েছে ওর।’
গত ২৪ ঘণ্টায় সংঘাত-সংঘর্ষে দিল্লিতে এক পুলিশ সদস্য ও ছয় বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ৫০ জনেরও বেশি লোক। পরিস্থিতি সামাল দিতে উত্তর-পূর্ব দিল্লির ১০টি অঞ্চলে ১৪৪ ধারা জারি করে পুলিশ।
সূত্র : আনন্দবাজার
এএইচ/