ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১২ ১৪৩১

এবার একাদশে ভর্তির আবেদন অনলাইনে

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৩:৪৬ পিএম, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ শুক্রবার

এসএমএসে নয়, এবার উচ্চমাধ্যমিকে ভর্তির আবেদন করতে হবে অনলাইনে। এছাড়া ভর্তিতে মুক্তিযোদ্ধা ছাড়া কোনো কোটা থাকবে না। ৯৫ শতাংশ আসন পূরণ করা হবে মেধায়। প্রবাসীর সন্তান ও প্রতিবন্ধীরা ভর্তি হতে পারবে। তবে কোটায় নয়, শিক্ষা বোর্ডের সুপারিশে বিশেষ বিবেচনায়। 

উল্লিখিত বিধান যুক্ত করে চূড়ান্ত করা হয়েছে উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তির খসড়া নীতিমালা। 

বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে এ সংক্রান্ত বৈঠকে এ নীতিমালা অনুমোদন দেয়া হয়েছে। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

এছাড়াও বৈঠকে আরও ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন, মাদ্রাসা বিভাগের সচিব মুন্সি শাহাবুদ্দিন আহমেদ, অতিরিক্ত সচিব নাজমুল হক খান প্রমুখ। এতে একাদশ শ্রেণির খসড়া নীতিমালা-২০২০ ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পক্ষ থেকে তুলে ধরা হয়।

খসড়া নীতিমালা অনুযায়ী, এ বছর একাদশ শ্রেণিতে ভর্তিতে শুধু ৫ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা রাখা হয়েছে। বাতিল করা হয়েছে শিক্ষা বিভাগীয়, প্রবাসী ও বিকেএসপি এবং বিভাগীয় বা জেলা কোটা। তবে প্রবাসী ও বিকেএসপির শিক্ষার্থী ও প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীকে বিশেষ বিবেচনায় ভর্তি করা হবে। প্রতিবন্ধী হিসেবে যারা এসএসসি পাস করেছে তারা এ সুবিধা পাবে। প্রবাসী বা বিকেএসপি শিক্ষার্থীরাও সুবিধা পাবে। এই তিন গোষ্ঠীকে উপযুক্ত প্রমাণসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট বোর্ডে আবেদন করতে হবে।

আবেদনে এবার পাঁচ টাকা ফি বেড়েছে। এটি নেয়া হবে শিক্ষা বোর্ডের রেজিস্ট্রেশন খাতে। গত বছর এটি ছিল ১৩০ টাকা, এবার ১৩৫ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব পাস হয়েছে।

চূড়ান্ত হওয়া নীতিমালায় আছে- অনলাইনে ১০টি কলেজ বা মাদ্রাসায় আবেদন করা যাবে। এর জন্য নেয়া হবে ১৫০ টাকা। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আর এসএমএস করে ভর্তির জন্য আবেদন করা যাবে না। ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি ফি ৫ হাজার টাকা।

এ ছাড়া আংশিক এমপিওভুক্ত ও এমপিওবিহীন প্রতিষ্ঠানের জন্য ভর্তি ফি ৯ হাজার (বাংলা মাধ্যম) ও ১০ হাজার টাকা (ইংরেজি মাধ্যম)। সব প্রতিষ্ঠানের জন্য উন্নয়ন ফি ৩ হাজার টাকার বেশি নেয়া যাবে না। প্রতিটি খাতে অর্থ আদায়ের ক্ষেত্রে রসিদ দিতে হবে।

এ ছাড়া মফস্বল ও পৌর এলাকার জন্য ভর্তি ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার টাকা, পৌর জেলা সদরে ২ হাজার টাকা, ঢাকা ব্যতীত অন্যান্য মেট্রোপলিটন এলাকায় ৩ হাজার টাকার বেশি নেয়া যাবে না।

নীতিমালা অনুযায়ী, একাদশ শ্রেণির অনলাইনে প্রথম ধাপের ভর্তি আবেদন গ্রহণ করা হবে আগামী ১০ থেকে ২০ মে। যাচাই-বাছাই, আপত্তি ও নিষ্পত্তি কার্যক্রম চলবে ২৭ থেকে ৩১ মে। ৮ জুন প্রথম ধাপের ফল প্রকাশ করা হবে। তবে পুনঃনিরীক্ষায় এসএসসি পরীক্ষার ফল পরিবর্তনকারীরা ১ থেকে ৩ জুন পর্যন্ত আবেদন করার সুযোগ পাবেন।

দ্বিতীয় ধাপে আবেদন শুরু হবে ১৭ জুন, ২০ জুন শেষ হয়ে সেদিন রাত ৮টার পর এ ধাপের ফল প্রকাশ করা হবে। তৃতীয় ধাপে ২৩ জুন আবেদন শুরু হয়ে ২৫ জুন পর্যন্ত চলবে। ২৫ জুন রাত ৮টার পর এ ধাপের ফল প্রকাশ করা হবে।

এ প্রসঙ্গে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক বলেন, শিক্ষার্থীর স্বার্থ সামনে রেখে এবার নীতিমালায় বেশকিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। সবচেয়ে বড় পরিবর্তন হচ্ছে এসএমএসে কোনো আবেদন নেয়া হবে না। ঢাকা বাদে অন্য মেট্রোপলিটন ও পৌর শহরের প্রতিষ্ঠানের জন্যও ফি আদায়ের সর্বোচ্চ সীমা বেঁধে দেয়া হয়েছে। আসনের ৯৫ শতাংশ ভর্তি করা হবে মেধায়। বাকি ৫ শতাংশ আসন বরাদ্দ থাকবে মুক্তিযোদ্ধা বা তাদের সন্তান বা সন্তানের সন্তানের জন্য।

তিনি বলেন, সনাতনী পদ্ধতি বাতিলের পর থেকে অনলাইন ও এসএমএস- উভয় পদ্ধতিতে ভর্তির আবেদন নেয়া হচ্ছিল। এর মধ্যে এসএমএসে আবেদন প্রক্রিয়ায় নানা অনিয়ম ও ভোগান্তি তৈরি হয়। বোর্ডগুলো অনুসন্ধানে জানতে পেরেছে, একশ্রেণির স্কুল অ্যান্ড কলেজ নিজ প্রতিষ্ঠানের এসএসসি পাস করা শিক্ষার্থীদের আবেদন এসএমএসে পূরণ করে দিচ্ছে।

মু. জিয়াউল হক বলেন, আবার কারও সঙ্গে শত্রুতা থাকলে শিক্ষার্থীদের বিপাকে ফেলতে সেও (শত্রু) এ ধরনের অপকর্ম করে থাকে। এভাবে অনেকে পছন্দের কলেজে ভর্তি হতে পারে না। আবার এ ধরনের ঘটনায় অনেক সময় মোটা অঙ্কের টাকা গচ্চা দিয়ে এরপর অন্য প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে হয়। শিক্ষার্থীদের এমন জিম্মিদশা থেকে উদ্ধারে বোর্ড এসএমএসে আবেদন প্রক্রিয়া বাতিল করে দিয়েছে।