নরেন্দ্র মোদিকে ঢাকায় সর্বোচ্চ সম্মান দেয়া হবে: মোমেন
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১০:৪৪ পিএম, ১ মার্চ ২০২০ রবিবার
মুজিববর্ষ উপলক্ষে ১৭ মার্চ আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হয়ে ঢাকায় আসছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেসময় নরেন্দ্র মোদিকে অতিথি হিসেবে সর্বোচ্চ সম্মান দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে মোমেন।
আজ রোববার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন ‘পদ্মা’য় ‘ঢাকা ওআইসি ইয়ুথ ক্যাপিটাল- ২০২০’-এর ওয়েবসাইট উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে তিনি এ কথা বলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ মোদিকে আমরা দাওয়াত দিয়েছি। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমাদের নিশ্চিত করেছেন যে, তিনি আসবেন। সোমবার (২ মার্চ) ভারতের পররাষ্ট্র সচিব আসবেন এ নিয়ে আলাপ করার জন্য। তার সফরে অনেককিছু নিয়েই আলাপ হবে।’
ভারতের প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা সফর নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেন আরও বলেন, ‘আমাদের নিয়ম অনুযায়ী মেহমানদের যেসব সম্মান করার কথা, আমরা তার সবকিছুই করব। তবে আমরা এটাও আশা করি যে, আমাদের মেহমানরা বাংলাদেশের জনগণের প্রত্যাশা ও ইচ্ছার বিষয়ে তারা যেন একটা ভালো অবস্থান নেয়।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ নিজেকে সুযোগসুবিধা এবং সম্ভাবনার দেশ হিসাবে তুলে ধরে মুসলিম বিশ্বের দেশগুলোর মধ্যে নেতৃত্বের ভূমিকা নিতে পারে। আমরা আর্থিকভাবে অতোটা ধনী না হতে পারি, তবে আমাদের হৃদয় ও সংস্কৃতি নিয়ে আমরা অনেক দেশ থেকে এগিয়ে রয়েছি।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী শান্তি ও স্থিতিশীলতার অন্যতম পদক্ষেপ হিসাবে সংলাপ ও মীমাংসার ওপর বাংলাদেশের জোর দেওয়াকে তুলে ধরার ওপর জোর দেন।
ইসলামী সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি)’র অঙ্গ সংগঠন ইসলামিক কো-অপারেশন ইয়ুথ ফোরাম (আইসিওয়াইএফ) গত ডিসেম্বরে ঢাকাকে ‘ওআইসির যুব রাজধানী ২০২০’ ঘোষণা করে, যা যুব খাতে দেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ স্বীকৃতি। বাংলাদেশ যুবসমাজের জন্য যে শক্তি ও সুযোগ-সুবিধা প্রদান করে তা তুলে ধরে পররাষ্ট্র এবং যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক বছরব্যাপী সম্মিলিত প্রচেষ্টার পর এ স্বীকৃতি আসে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ১২ এপ্রিল আইওসির ৫৭ সদস্য রাষ্ট্রের ১৫০ টিরও বেশি যুব প্রতিনিধির অংশগ্রহণে বছরব্যাপী ‘ওআইসির যুব রাজধানী ২০২০’ উদযাপন অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ওআইসির বেশ কয়েকটি সদস্য রাষ্ট্রের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রী আমন্ত্রিত হবেন।
মোমেন বলেন, বঙ্গবন্ধু জন্মশতবর্ষ উদযাপনের একই সাথে বছরব্যাপী এ অনুষ্ঠানের আয়োজন এর তাৎপর্যকে অনেকাংশে বাড়িয়ে দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের যুবসমাজের রাজধানী উদযাপন অনুষ্ঠানটিকে ওআইসি দেশগুলোর মধ্যে একটি রোল মডেল হিসাবে তুলে ধরতে চেষ্টা করবো।’
‘ওআইসির যুব রাজধানী ২০২০’ উদযাপনের জন্য দশটি মেগা ইভেন্টের পরিকল্পনা করা হয়েছে। ১০ জন অংশগ্রহণকারীকে ‘বঙ্গবন্ধু যুব পুরস্কার’ প্রদান করা হবে, যারা পরবর্তীতে কক্সবাজার রোহিঙ্গা শিবিরে একটি মানবিক বুট ক্যাম্পে যোগ দেবেন।
ইভেন্টের মধ্যে পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত প্রতিযোগিতা, ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল, চিত্র প্রদর্শনী, বিতর্ক প্রতিযোগিতা, স্বেচ্ছাসেবক শিবির, যুব সম্মেলন, ব্যবসায় হাব বুট ক্যাম্প, ফুটবল ক্যাম্প, রোভার মুট এবং একটি জমকালো সমাপনী অনুষ্ঠান অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী রাসেল বলেন, ‘ওআইসির যুব রাজধানী ২০২০’ হিসেবে ঢাকার নির্বাচন বিশ্বব্যাপী বিশেষত তরুণদের মধ্যে বাংলাদেশের একটি ইতিবাচক ব্র্যান্ডের চিত্র প্রতিফলিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে এ অনুষ্ঠান বাংলাদেশের বিশাল তরুণ জনগোষ্ঠী এবং ওআইসির সদস্য রাষ্ট্রগুলোতে ব্যাপক গতি, অনুপ্রেরণা ও উদ্দীপনার সঞ্চার করবে।
বাংলাদেশ গত বছরের মে থেকে বহুল-কাক্সিক্ষত ‘ওআইসি ইয়ুথ ক্যাপিটাল ২০২০’ খেতাব অর্জনের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় বাছাই প্রক্রিয়ার জন্য বাংলাদেশের ব্যাপক কার্যক্রম উপস্থাপন করে। পরবর্তীতে আইসিওয়াইএফ কাজাখস্তান ও তিউনিসিয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশকে শর্টলিস্টভুক্ত করে।
পরে অক্টোবরে আইসিওয়াইএফ প্রেসিডেন্ট তাহা আয়হানের নেতৃত্বে আইসিওয়াইএফের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশের সামগ্রিক প্রস্তুতি পরিদর্শন করতে বাংলাদেশ সফর করে। অবশেষে ২২ ডিসেম্বর যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং আইসিওয়াইএফ-এর মধ্যে একটি
‘অঙ্গীকারনামা’ স্বাক্ষরিত হয়, যার ফলে বাংলাদেশকে ‘আইসির যুব রাজধানী ২০২০’ ঘোষণা করা হয়।
এসি