ঢাকা, শনিবার   ০৫ অক্টোবর ২০২৪,   আশ্বিন ২০ ১৪৩১

গবিতে ভুঁইফোড় সংগঠন ও নেতাদের উৎপাতে বিপাকে শিক্ষার্থীরা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:০১ পিএম, ২ মার্চ ২০২০ সোমবার

একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা যেন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের সাথে যুক্ত থেকে সুরুচিশীল, সচেতন ও সামাজিক দায়িত্ববোধ নাগরিক হয়ে গড়ে উঠতে পারে তারই লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোতে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন পরিচালনার প্রতি জোর দেওয়া হয়। তবে সম্প্রতি এই সুযোগের অপব্যবহার করে কিছু সুবিধাভোগী শিক্ষার্থীরা নামে –বেনামে বিভিন্ন  সংগঠন তৈরী করে রাতারাতি নেতা বনে যাওয়ার সহজ পন্থা বেছে নিচ্ছে বলে অভিযোগের আঙ্গুল তুলেছে সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।  

নামে বেনামে সম্প্রতি গড়ে উঠা সংগঠনগুলোর প্রতি অভিযোগ তুলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ১ম সেমিষ্টারের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষার্থীরা বলেন , “ ক্যাম্পাসে প্রতিদিন বিভিন্ন সংগঠন সদস্য আহ্বান করে। এতএত সংগঠনের ভিড়ে কোন সংগঠনে যে আমাদের যাওয়া উচিৎ সেটাই বুঝতে পারিনা। আবার অনেক সময় এমন  হয় যে কোনো একটা সংগঠনে গিয়ে দেখি তাদের শুধু নাম আছে কোনো কাজ নাই। আবার তারা আমাদের সামনেই  এক সংগঠন আরেক সংগঠনের নামে ঠিকই বদনাম করে। এখন আপনারাই বলেন আমরা নতুন হিসেবে কি করতে পারি ?”

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংগঠনের সাম্প্রতিক কার্যক্রমে উদ্বেক প্রকাশ করে ইংরেজী বিভাগের ৮ম সেমিষ্টারের শিক্ষার্থী সুজা উদ্দীন সুজন বলেন, “ আমাদের কাছে মনে হচ্ছে সম্প্রতি জন্ম নেওয়া অনেক সংগঠন ব্যক্তিস্বার্থ কে কেন্দ্র করে গড়ে উঠছে । যার ফলে  জন্ম নিতে না নিতেই  পদত্যাগ করতে দেখা যাচ্ছে সংগঠনের একটা বড় অংশকে । যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে আমাদের  নবীণ শিক্ষার্থীদের উপর। এমনকি নবীণরা ক্যাম্পাসে এসেই  সংগঠনে যুক্ত হওয়ার ব্যাপারে উৎসাহ হারিয়ে ফেলছে । যদি এভাবে চলতে থাকে তবে একটা খারাপ সময় অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য ।”

একের পর অনিয়ন্রিত ভাবে জন্ম নেওয়া সংগঠন সম্পর্কে গণ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয়  ছাত্র সংসদ (গাকসু)  কি ভাবছে ? এবিষয়ে  জানতে চাইলে  গাকসুর সাধারণ সম্পাদক মোঃ নজরুল ইসলাম রলিফ বলেন , “সংগঠন গুলো যদি বিশ্ববিদ্যালয়  প্রশাসনের অনুমোদিত হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে  কার্যক্রম তাদেরই পর্যালোচনা করার  বিষয় । যে কোন সংঘটনের কার্যক্রমই হচ্ছে তার পরিচয়।  সবাই দেখবে কার কার্যক্রম কি? কারা বিশ্ববিদ্যালয়ের নামকে ব্যাবহার করে নিজ স্বার্থ হাসিল করছে আর কারা সংগঠনকে সাংগঠনিক গঠনতন্ত্র অনুযায়ী চালাচ্ছে। আমরা কখনোই চাইবো না কোন সংগঠনের জন্য খারাপভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম কোন পত্রিকার মাঝে আসুক। আর সংগঠন এর অনুমোদন এর বিষয়টা সম্পূর্নভাবে নির্ভর করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ওপর। এখানে ছাত্র সংসদের কিছু করার এখতিয়ার আছে বলে আমার মনে হয় না। হ্যা তবে প্রশাসন যদি চায় সেক্ষেত্রে আমরা সংগঠনের কার্যক্রম সম্পর্কে অবগত করতে পারি। আর নতুনদের সংগঠনে যুক্ত হওয়ার ব্যাপারে এতটুকুই বলবো,  যে সংগঠনগুলো ইউনিভার্সিটিকে আরো সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে তাদের সাথে আপনারা  কাজ করতে থাকেন।”

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত সংগঠনকে একটি কাঠামোর মধ্যে আনতে গত ফেব্রুয়ারি মাসের ৩ তারিখের মধ্যে  বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সমস্ত সংগঠনকে তাদের কার্য বিবরণী, অনুমোদন পত্র  ও গঠনতন্ত্র  জমা দিতে বলা হয়। তবে নিদির্ষ্ট সময় শেষ হয়ে গেলেও মাত্র ১৫ টি সংগঠন তাদের বিবরণী জমা দিতে সক্ষম হয়েছে  সেই সাথে  সময় শেষ হলেও এই তালিকায়  বিশ্ববিদ্যালয়  প্রশাসনের ইচ্ছায় আরো নাম সংযোজন- বিয়োজন হতে পারে  বলেছে জানিয়েছে  বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের একটি দায়িত্বশীল মাধ্যম।

উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর থেকে ২০১৮ সাল অবধি এই বিশ বছর ক্যাম্পাসে সংগঠন ছিল মাত্র ৯ টি। যা ২০১৯-২০২০ এর বর্তমান সময় পর্যন্ত  এসে দাড়িয়েছে ২৫ টিরও বেশিতে । 

কেআই/আরকে