মুশফিককে বাদ দেয়া নিয়ে যা বললেন প্রধান নির্বাচক
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১০:২৩ এএম, ৪ মার্চ ২০২০ বুধবার
পাকিস্তান সফরে যেতে অস্বীকৃতি জানানো বাংলাদেশ মুশফিকুর রহিমকে জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে তৃতীয় ওয়ান ডে স্কোয়াড থেকে বাদ দেয়া হয়েছে।
তবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু বলেছেন, মুশফিকুর রহিমের ওপর পাকিস্তান সফরে চাপ সৃষ্টি করার জন্য এটা করা হয়নি।
সোমবার বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের বাইরের গণমাধ্যমে খবর দেওয়া হয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান নির্বাচকের সাথে বৈঠকে বসেছেন মুশফিকুর রহিম এবং ঐ বৈঠকের উদ্দেশ্য ছিল মুশফিকুর রহিমকে পাকিস্তান সফরে অবশিষ্ট একটি ওয়ানডে ও টেস্ট ম্যাচ খেলতে ‘চাপ’ দেবার বিষয়টি।
গতকাল মঙ্গলবার সিলেটের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এ নিয়ে কথা বলার সময় প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন মুশফিককে চাপ বা কোনো হুমকি দেবার বিষয়টি অস্বীকার করেন।
গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছিল পাকিস্তান সফরে যেতে রাজি না হলে মুশফিককে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বাদ দেয়া হবে। কিন্তু দ্বিতীয় ওয়ানডেতে মাঠে নেমেছেন মুশফিক।
মিনহাজুল আবেদীন বলেন, ‘আমরা মুশফিকের সাথে বসি, যেখানে টিম ম্যানেজমেন্টের সাথে হেড কোচও ছিলেন। আমরা জানতে চাই মুশফিক পাকিস্তানে যাবেন কি না।’
‘নানা সময়ে মিডিয়ায় একবার দেখেছি মুশফিক যাবেন না, আবার দেখলাম যাবেন পাকিস্তান, তাই আমরা নিশ্চিত হতে বসি।’
আবেদীন জানান, মুশফিক বোর্ডকে জানিয়ে দিয়েছেন তিনি পাকিস্তান সফরে যাচ্ছেন না।
তবে বিসিবির প্রধান নির্বাচক নিশ্চিত করেছেন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তৃতীয় ওয়ানডেতে মুশফিক থাকবেন না।
বোর্ড জানিয়েছে তৃতীয় ওয়ানডেতে খেলানো হবে পাকিস্তান সফরের সম্ভাব্য দলকে। সেক্ষেত্রে ওই ম্যাচে মুশফিককে বাদ দেয়া হবে।
এর আগে কী হয়েছিল
বাংলাদেশ ক্রিকেট দল টেস্ট খেলার জন্য পাকিস্তান সফর করবে কি করবে না এ নিয়ে প্রায় মাসব্যাপী বিসিবি ও পিসিবির মধ্যে আলোচনা চলে।
তখন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান নির্বাহী নিজামুদ্দিন চৌধুরী বলেন, ক্রিকেটারদের সাথে কথা বলা হচ্ছে। পাকিস্তান যাওয়া বা না যাওয়ার সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ ক্রিকেটারের ব্যক্তিগত।
এরপর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান নাজমুল হাসানও বলেন ক্রিকেটারদের সাথে কথা বলেই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে যে পাকিস্তানে কারা যাবেন।
বাংলাদেশের পাকিস্তান সফর নিশ্চিত হবার পর মুশফিকুর রহিম ঘোষণা দেন তিনি পাকিস্তান যাওয়ার ব্যাপারে এখনই প্রস্তুত নন, তবে পরিস্থিতি উন্নতি হলে এক বছর বা দুই বছর পর তিনি ভেবে দেখবেন।
এরপর বাংলাদেশ ক্রিকেট দল পাকিস্তানে তিনটি টি টোয়েন্টি ও একটি টেস্ট ম্যাচ খেলে দুটো পৃথক সফরে।
বৃষ্টির কারণে একটি টি টোয়েন্টি ম্যাচ হয়নি, এছাড়া বাকি সব ম্যাচেই হারে বাংলাদেশ।
এরপর মুশফিকুর রহিম জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ডাবল সেঞ্চুরি করেন টেস্টে।
২৬ ফেব্রুয়ারি বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান বলেন, শুধু পরিবারের কথা না ভেবে দেশের কথা ভেবে মুশফিকুর রহিমের পাকিস্তান যাওয়া উচিৎ।
তার বক্তব্য ছিলো এমন, ‘আমরা আশা করছি ও যাবে। শুধু সেই না, প্রতিটি চুক্তিবদ্ধ খেলোয়াড়ের যাওয়া উচিত। এটা আমরা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি। দেশের কথাও চিন্তা করতে হবে। সবসময় নিজের কথা চিন্তা করলে হবে না। যেটি আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি।’
‘প্রত্যেকের কাছেই নিজের কথা, পরিবারের কথা গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু দেশটা তার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। পাকিস্তান একটা ভিন্ন ইস্যু। আগে নিজে থেকেই মুশফিক বলেছে, কাউকে আমরা জোর করিনি। আমি মনে করি সবার সাথে কথাবার্তা বলে ওর যাওয়া উচিত,’ জানান নাজমুল হাসান।
সূত্র: বিবিসি