ঢাকা, শনিবার   ০৫ অক্টোবর ২০২৪,   আশ্বিন ২০ ১৪৩১

চীনা নাগরিকদের জন্য ‘অন অ্যারাইভাল ভিসা’ পুনর্বহালের অনুরোধ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৭:০৬ পিএম, ৪ মার্চ ২০২০ বুধবার

বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং- সংগৃহীত

বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং- সংগৃহীত

বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। প্রাণঘাতি ভাইরাসটি থেকে আক্রমন ঠেকাতে বিভিন্ন দেশের পাসর্পোটধারীদের জন্য ‘অন অ্যারাইভাল ভিসা’ বন্ধ করেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে করোনা ভাইরাসের উৎপত্তিস্থলও রয়েছে।

চীনা নাগরিকদের জন্য ‘অন অ্যারাইভাল ভিসা’ পুর্নবহালের জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং। 

আজ বুধবার কেরানীগঞ্জে পদ্মাসেতু রেল সংযোগ প্রকল্প কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘রোগটি ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষাপটে অন অ্যারাইভাল ভিসা বন্ধের সিদ্ধান্ত ছিল যৌক্তিক ও সুন্দর। অন অ্যারাইভাল ভিসা বন্ধের সময় বাংলাদেশের সিদ্ধান্তকে আমরা স্বাগত জনিয়েছিলাম। কারণ নিরাপত্তাই বাংলাদেশের প্রথম অগ্রাধিকার।’

তিনি আরও বলেন, ‘কিন্তু এখন পরিস্থিতির অনেকটাই উন্নতি হয়েছে। চীন সফলতার সঙ্গে করোনা ভাইরাস মোকাবেলা করছে। বাংলাদেশে চলমান প্রকল্পগুলোর গতিশীলতা ঠিক রাখতে চীনের নাগরিকদের আসা প্রয়োজন। এ কারণে বাংলাদেশ তাদের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে পারে।’

নভেল করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে পদ্মা সেতু প্রকল্পের কিছু কর্মকর্তা এই রোগের উৎসস্থল চীনের হুবেই প্রদেশে আটকা পড়েছেন বলে জানিয়েছেন চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিং। এর পাশাপাশি চীনের কিছু প্রতিষ্ঠান কার্যক্রম বন্ধ রাখায় বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এই অবকাঠামো প্রকল্পের কাজ কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি ।  

এখন এই প্রকল্পের কাজে গতি আনতে চীনের নাগরিকদের জন্য ‘অন অ্যারাইভাল ভিসা’ পুনরায় চালু করতে সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন রাষ্ট্রদূত লি জিমিং।

উল্লেখ্য, গেল বছরের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশে উহানে প্রথমবারের মতো প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাস ধরা পড়ে। এরই মধ্যে অন্তত ৮০টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস। এর মধ্যে সর্বোচ্চ আক্রান্ত ও মৃত্যু চীনে। দেশটির মূল ভূখণ্ডে এ পর্যন্ত ২ হাজার ৯৮১ জন মারা গেছেন, আক্রান্ত হয়েছেন অন্তত ৮০ হাজার ২৭০ জন। বিশ্বজুড়ে এ পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৯২ হাজার ৭৯৬ জন, আর মারা গেছেন অন্তত ৩ হাজার ২০১ জন।

চিকিৎসা বিজ্ঞানে রহস্য হয়ে থাকা নতুন এই করোনা ভাইরাস নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ‘বৈশ্বিক সতর্কতা’ জারি করার পর ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে চীনা নাগরিকদের অন অ্যারাইভাল ভিসা স্থগিত করে বাংলাদেশ সরকার।

গত ২ ফেব্রুয়ারি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন ওই ভিসা সুবিধা স্থগিতের কথা তুলে ধরে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, ‘চীনা রাষ্ট্রদূতকে এ ব্যাপারে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা থাকাকালে, বিশেষ করে আগামী এক মাসের মধ্যে ঢাকায় থাকা কোনো চীনা নাগরিক যেন ছুটিতে দেশে না যান। বাংলাদেশে চলমান চীনের বিভিন্ন প্রজেক্টে চীন থেকে নতুন করে যেন কোনো লোক না আনা হয়।’ ‘অন অ্যারাইভাল ভিসা’ সুবিধার আওতায় চীনা নাগরিকরা এতদিন বাংলাদেশের কোনো বিমানবন্দরে নেমেই ভিসা নিতে পারতেন।   

সেই সুবিধা স্থগিত করা হলেও তাদের ভিসা দেওয়া বন্ধ করা হয়নি। তবে তাদের ভিসার আবেদনে শারীরিকভাবে সুস্থ থাকার একটি সনদ যুক্ত করার বাধ্যবাধকতার শর্ত রাখার কথা জানিয়েছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। বুধবারের সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বর্তমানে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রকল্পে ১৪ থেকে ১৫ হাজার চীনা নাগরিক কাজ করছেন। তাদের মধ্যে প্রায় ৪০ শতাংশ এখন চীনে অবস্থান করছেন।

এমএস/এসি