পাপিয়াকাণ্ডে ‘মনগড়া’ তথ্য প্রচার না করার আহ্বান
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১১:০৪ এএম, ৫ মার্চ ২০২০ বৃহস্পতিবার
রিমান্ডে থাকা আলোচিত বহিষ্কৃত নরসিংদীর যুব মহিলা লীগ নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়ার বিরুদ্ধে চলমান তদন্ত নিয়ে ‘মনগড়া’ তথ্য প্রচার না করার জন্য গণমাধ্যমের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
তদন্তাধীন বিষয় হওয়ায় পাপিয়ার আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতাদের নাম আরো সুক্ষ্মভাবে অনুসন্ধানের পর প্রকাশিত হবে বলে জানিয়েছে ডিএমপি। এরইমধ্যে পাপিয়া ছাড়াও আরো যারা এমন অবৈধ কর্মকাণ্ডে জড়িত তাদের তালিকা বের করতে অনুসন্ধান চালাচ্ছে গোয়েন্দা পুলিশ।
তদন্তাধীন মামলার বিষয়ে রিমান্ডে থাকা অভিযুক্তদের সম্পর্কে মনগড়া তথ্য প্রচারের ফলে তদন্তকারী কর্মকর্তার ওপর মনস্তাত্বিক ও সামাজিক চাপ তৈরি হয়। যার ফলে বস্তুনিষ্ঠ তদন্ত ব্যাহত ও বাধাগ্রস্ত হতে পারে। এ অবস্থার প্রেক্ষাপটে সংশ্লিষ্ট সবাইকে পেশাদারি ও দায়িত্বশীল আচরণ প্রদর্শনের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
ডিএমপির উপপুলিশ কমিশনার (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন) মাসুদুর রহমান প্রেরিত বিবৃতিতে এ আহ্বান জানানো হয়। এতে বলা হয়, পাপিয়া, তার স্বামী সুমন ও দুই সহযোগীকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করছে। তাদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যগুলো যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। বিচার্য বিষয়গুলোর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সাক্ষীদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সমগ্র বিষয় এখনও তদন্তের প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। তদন্ত প্রাথমিক পর্যায়ে থাকায় এ বিষয়ে গোয়েন্দা পুলিশের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমকে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য দেয়া হয়নি। কিন্তু উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পাশাপাশি কিছু গণমাধ্যমে তদন্ত সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কোনো রকম আলোচনা না করে তদন্ত সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য প্রচার ও প্রকাশ করা হচ্ছে। তদন্তে প্রাপ্ত কথিত তথ্য হিসেবে বিভিন্ন ব্যক্তির নাম-পরিচয় প্রকাশ ও প্রচার করছে।
যার সঙ্গে তদন্তকারী কর্মকর্তা ও তদন্ত সংশ্লিষ্টদের সম্পৃক্ততা নেই কিংবা তদন্তে প্রাপ্ত তথ্যের সঙ্গে কোনো সামঞ্জস্য নেই। তদন্তাধীন মামলার বিষয়ে রিমান্ডে থাকা অভিযুক্তদের সম্পর্কে মনগড়া তথ্য প্রচারে তদন্তকারী কর্মকর্তার ওপর মনস্তাত্ত্বিক ও সামাজিক চাপ তৈরি হয়। ফলে বস্তুনিষ্ঠ তদন্ত ব্যাহত ও বাধাগ্রস্ত হতে পারে। বর্ণিত অবস্থার প্রেক্ষাপটে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ সংশ্লিষ্ট সবাইকে পেশাদারি ও দায়িত্বশীল আচরণ প্রদর্শনের জন্য অনুরোধ করছে।
গত ২২ ফেব্রুয়ারি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে পাপিয়া ও তার স্বামীকে আটক করে র্যাব। পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী তারা আরও দু’জন সহযোগীসহ ভারতে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সে সময় বলা হয়, গুলশানের হোটেল ওয়েস্টিনে বিলাসবহুল কক্ষ ভাড়া করে সমাজের উঁচুতলার লোকদের জন্য ‘যৌনসেবার কারবার’ চালিয়ে আসছিলেন পাপিয়া।
পরে জাল মুদ্রা, অস্ত্র ও মদ উদ্ধারের ঘটনায় তিনটি মামলা হয় পাপিয়া ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে। প্রথমে থানা পুলিশ তদন্ত শুরু করে পাপিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নিলেও একদিন বাদে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি)।
সেই জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বরাতে বিভিন্ন তথ্য আসছে সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে। ওয়েস্টিনে পাপিয়ার কারবারে জড়িত হিসেবে কয়েকজন সচিব, সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দফতরের কর্মকর্তা, সংসদ সদস্য, টকশোর আলোচক, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ীর নাম এসেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
একে//