কবি ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত’র জন্মদিন আজ
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৯:৪০ এএম, ৬ মার্চ ২০২০ শুক্রবার
কবি, সাহিত্যিক এবং সাংবাদিক ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত’র জন্মদিন আজ। তিনি ১৮১২ সালের আজকের এই দিনে চব্বিশ পরগনা জেলার কাঞ্চনপল্লী (বর্তমানে কাঁচড়াপাড়া) গ্রামের (যা বর্তমান পশ্চিমবঙ্গে অবস্থিত) এক সম্ভ্রান্ত বৈদ্য পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
ঊনবিংশ শতাব্দীর এ সাহিত্যিকের হাত ধরেই মধ্যযুগের গণ্ডি পেড়িয়ে বাংলা কবিতা আধুনিকতার পথে নাগরিক রূপ পেয়েছিল। তিনি ‘গুপ্ত কবি’ নামে সমধিক পরিচিত। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের মতো তার পরবর্তী সাহিত্যিকরা ঈশ্বর গুপ্তকে ‘গুরু’ পদে বরণ করেছিলেন। তার ছদ্মনাম ‘ভ্রমণকারী বন্ধু’। এছাড়া বহুবিধ পত্র-পত্রিকা তিনি সম্পাদনা করেছেন।
দশ বছর বয়সে মাতৃবিয়োগের পর ঈশ্বরচন্দ্র জোড়াসাঁকোয় মাতুলালয়ে আশ্রয় নেন। শৈশবে লেখাপড়ায় অমনোযোগী হওয়ার কারণে তার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা বেশিদূর এগোয়নি, তবে অসাধারণ মেধা ও স্মৃতিশক্তির অধিকারী ঈশ্বরচন্দ্র নিজ চেষ্টায় বাংলা, সংস্কৃত ও ইংরেজি ভাষা শেখেন এবং বেদান্তদর্শনে পারদর্শিতা লাভ করেন।
সংস্কৃত কলেজের অধ্যাপক প্রেমচন্দ্র তর্কবাগীশের প্রেরণায় এবং বন্ধু যোগেন্দ্রমোহন ঠাকুরের আনুকূল্যে ১৮৩১ খ্রিষ্টাব্দে তিনি সংবাদ প্রভাকর পত্রিকার সম্পাদনায় নিযুক্ত হয়েছিলেন। ১৮৩২ খ্রিষ্টাব্দে তিনি তিনি সংবাদ রত্নাবলী পত্রিকার সম্পাদনার দায়িত্ব পালন করেন। সংবাদ প্রভাকর ছিল একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা, তিনি এটিকে দৈনিকে রূপান্তর করেন ১৮৩৬ খ্রিষ্টাব্দে। ১৮৪৬ খ্রিষ্টাব্দে সাপ্তাহিক পাষণ্ড পত্রিকার সঙ্গে সম্পাদক হিসাবে সংযুক্ত। পরবতী বৎসর তিনি সংবাদ সাধুরঞ্জন পত্রিকার দায়িত্বভার পালন করেন। তিনি গ্রাম গ্রামে ঘুরে বেড়াতেন এবং কবিগান বাঁধতেন।
ঈশ্বরচন্দ্র বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে যুগসন্ধির কবি হিসেবে পরিচিত, কারণ তিনি সমকালের সামাজিক ও ঐতিহাসিক বিষয় নিয়ে কবিতা রচনা করলেও তার ভাষা, ছন্দ ও অলঙ্কার ছিল মধ্যযুগীয়।
বাংলা সাহিত্যে তার চিরস্থায়ী আসনলাভ সম্ভব হয়েছে কারণ একদিকে মধ্যযুগের দেবমাহাত্ম্য ব্যঞ্জক বিষয় থেকে বাংলা কবিতাকে মুক্ত করে তিনি যেমন অনায়াসে ‘পাঁঠ ‘, ‘আনারস’, ‘তোপসে মাছ’ ইত্যাদি বিষয় অবলম্বনে কবিতা লেখেন। তার কবিতায় নিজের দৃষ্টিভঙ্গি অনুসারে উঠে আসে সমসাময়িক রাজনৈতিক ও সামাজিক ঘটনাবলির চিত্ররূপ।
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় তাকে ‘খাঁটি বাঙালি কবি’ বলে অবহিত করেছেন।
এসএ/