ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে গান ‘গা রে গা তুই বঙ্গবন্ধুর গান’ 

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:০৫ পিএম, ৬ মার্চ ২০২০ শুক্রবার | আপডেট: ০৯:১১ পিএম, ৬ মার্চ ২০২০ শুক্রবার

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে গীতিকার শেখ মোহাম্মদ হাসানূর কবীরের গান 'গা রে গা তুই বঙ্গবন্ধুর গান'। গানটি দ্বৈতকণ্ঠে গেয়েছেন অণিমা মুক্তি গমেজ ও শিল্পী আবু বকর সিদ্দিক। 

সম্প্রতি এই গানটি নিয়ে মিউজিক ভিডিও নির্মাণ করা হয়েছে। গানের দৃশ্যধারণ করা হয়েছে ধানমণ্ডি-৩২ নাম্বারে ও জাতির জনকের বাড়ি এবং তাঁর প্রতিকৃতির সামনে। 

গানটি লিখেছেন শেখ মোহাম্মদ হাসানূর কবীর। তিনি বাঙলা সংগীত জগতে অখ্যাত হলেও তাঁর ‘গা রে গা তুই বঙ্গবন্ধুর গান’টি শ্রোতাদের মৌলিক ও ভিন্ন স্বাদের অনুভূতি জাগাবে। এই গানের সুর করেছেন আবু বকর সিদ্দিক। গানটির চিত্রায়ণে সার্বিক সহযোগিতা করেছেন সাংবাদিক কাজী ইফতেখারুল আলম তারেক।
   
গানটিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে যেমন নিয়ে যাওয়া হয়েছে অনন্য উচ্চতায়, তেমনি বঙ্গবন্ধুর প্রিয় এই বাংলাদেশের চিরায়ত প্রকৃতি ও রূপ সৌন্দর্যের দিকটিও ওঠে এসেছে চিত্রকল্পের মধ্য দিয়ে। বঙ্গবন্ধুর প্রিয় নৌকা, নদী, ধানের ক্ষেত নিয়ে গানের এসব শব্দ গুচ্ছ শ্রোতাদের নিয়ে যাবে আবহমান বাংলার মাটির কাছাকাছি। গানের শুরুটা হয়েছে এভাবে-

ও দখিনা বাতাস রে
ও উথাল হাওয়া রে,
            গা রে গা তুই বঙ্গবন্ধুর গান ।

ও নবীন পথিক রে
ও মাঠের বাউল রে,
             গা রে গা তুই বঙ্গবন্ধুর গান ।
             গা রে গা তুই বঙ্গবন্ধুর গান ।

বঙ্গবন্ধুর সোনার নৌকা
নদীর জলে ভাসে,
         মাঠের সবুজ ধানের খেতে
        ঝলমলাইয়া হাসে রে
        ঝলমলাইয়া হাসে।

শেখ মোহাম্মদ হাসানূর কবীর ১৫ অক্টোবর, ১৯৭৬ সালে টাংগাইল জেলার ঘাটাইল উপজেলার কুশারিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা মোহাম্মদ ইয়াদ আলী মিয়া ও মা আনোয়ারা বেগম। বাবা ছিলেন সরকারি চাকুরে। চার ভাই-বোনের মধ্যে তিনি তৃতীয়। পেশায় তিনি একজন শিক্ষক। সাভার ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজে বর্তমানে তিনি কর্মরত আছেন।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিষয়ে অনুপ্রেরণা তিনি শৈশবে মা ও নানার কাছ থেকে পেয়েছেন। নানা ছিলেন বঙ্গবন্ধুর একজন একনিষ্ঠ ভক্ত।

শেখ মোহাম্মদ হাসানূর কবীর বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে গান রচনার পাশাপাশি একাধিক কবিতাও লিখেছেন, যা কানাডার অটোয়া থেকে প্রকাশিত সাহিত্য পত্রিকা ‘আশ্রম’-এ প্রকাশিত হয়েছে। তাঁর লেখা ‘দহন’ কবিতায় বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডে মনের গহীনে ভীষণ ক্ষোভের প্রকাশ লক্ষ্য করা যায়।

  আমি কষ্ট পাই, খুব বেশি কষ্ট পাই
                   জনকের নিথর দেহ যখন পড়ে থাকে সিঁড়ির উপর
   পিশাচের নির্মম বুলেটের আঘাতে।
         তারপর একদিন দর্পভরে ওরা হেঁটে চলে
                       রাজপথে কিংবা দূরে কোনো লোকালয়; ব্যস্ত জনপদে
      তিপ্পান্ন হাজার বর্গমাইল পথ পেরিয়ে
                                               কেননা ওরা সূর্যসন্তান।

বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, দেশপ্রেম, বাঙালি জাতীয়তাবোধ আর বঞ্চিত মানুষের প্রতি অকৃত্রিম মমতা তাঁকে পারিবারিকভাবে বঙ্গবন্ধুকে ভালোবাসতে প্রভাবিত করেছে। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে মহাপুরুষের আসনে অধিষ্ঠিত করেছেন, যা তাঁর লেখা ‘পাঁজরের ফ্রেমে বাঁধা মহাপুরুষের ছবি’ কবিতায় ওঠে এসেছে।

 বাবা ছিলেন নিন্ম বেতনের সরকারি আমলা,
                                          মাটির দেয়াল ঘেরা একটি ছোট্ট বাড়িতে
                                          আমরা থাকতাম,
   আসবাব বলতে তেমন কিছু ছিল না আমাদের
          কেবল দেয়ালে শোভা পেত এক মহাপুরুষের ছবি ;
                       বাবাকে দেখতাম সারাদিনের হাড়ভাঙা খাটুনি শেষে বাড়ি ফিরে
                                          মহাপুরুষটির সামনে এসে দাঁড়াতেন,
                   কি আশ্চর্য ! মহাপুরুষটি যেন বাবার সমস্ত কষ্ট বেদনা ক্লান্তি
                                          নিমেষেই মুছে দিত।
                                          বাবা আজ নেই,
সুন্দরপুর ছেড়ে সাত সমুদ্দুর তেরনদী পেরিয়ে
আজ আমি ভিনদেশি এক মধ্যবয়সী যুবক,
বাবার স্মৃতি ভিটেমাটি ফেলে এসেছি গ্রামে ;
                                          প্রয়োজন ফুরিয়ে গেছে সব কিছুর।
                                          স্মৃতি কাতরতায় ভুগবো বলে
                          শুধু পাঁজরের ফ্রেমে বাঁধা মহাপুরুষের ছবিটি নিয়ে এসেছি প্রবাসে,
                                          যা আজও অক্ষত অমলিন।

                                          প্রিয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান
                                তুমি র’বে বাঙালির বুকে ধলেশ্বরী কিংবা ভাগীরথীসম, সতত প্রবাহমান।

কেআই/আরকে