লিটন-তামিমের তাণ্ডবে ওলট-পালট রেকর্ড বই
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৯:৩৫ পিএম, ৬ মার্চ ২০২০ শুক্রবার
তামিম ইকবাল ও লিটন দাস
অবিশ্বাস্য, অভাবনীয়, অতুলনীয়, অকল্পনীয় কিংবা অনুনমেয়। আজ (৬ মার্চ) বাংলাদেশের দুই ওপেনার লিটন দাস ও তামিম ইকবাল মিলে যা করেছেন- তার বিশেষণ হতে পারে এমনই কিছু শব্দ। তবুও যেন শেষ হবে না প্রশংসাগাথা।
এদিন সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুজন মিলে গড়েছেন ২৯২ রানের এক অনবদ্য জুটি। এই জুটির ওপর দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ গড়েছে রানের পাহাড়। যাতে ওলট-পালট হয়ে গেছে রেকর্ড বই।
আসুন, এক নজরে দেখে নেয়া যাক সে রেকর্ডসমূহ-
আজ বৃষ্টি বিঘ্নিত ম্যাচে নির্ধারিত ৪৩ ওভারে তিন উইকেটে ৩২২ রান করেছে বাংলাদেশ। যা জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে টাইগারদের সর্বোচ্চ সংগ্রহের রেকর্ড। গেল মঙ্গলবার দ্বিতীয় ওয়ানডেতেও একই রান করেছিল স্বাগতিকরা। সেদিন অবশ্য পুরো ৫০ ওভারই ব্যাটিং করেছিল বাংলাদেশ।
এদিন লিটন-তামিমের জুটিটা ছিল ২৯২ রানের। যা ওয়ানডেতে টাইগারদের যে কোনও উইকেটে সর্বোচ্চ রানের জুটি। আবার সার্বজনীন রেকর্ডে সর্বোচ্চ ষষ্ঠতম জুটি। তবে উদ্বোধনী জুটিতে সর্বোচ্চ তৃতীয় রানের জুটি এটা।
দূর্দান্ত এই জুটিতে তামিম-লিটন আজ ভেঙেছেন ২১ বছরের রেকর্ড। ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশের হয়ে উদ্বোধনী জুটিতে সর্বোচ্চ ১৭০ রান করেন শাহরিয়ার হোসেন বিদ্যুৎ ও মেহরাব হোসেন অপি। ২৫ মার্চের সেই ঘটনার স্বাক্ষী অবশ্য ছিলো সেদিনকার জিম্বাবুয়েই।
এদিকে, লিটন-তামিম দুজনই সেঞ্চুরি পেয়েছেন আজ। যা বাংলাদেশের এক ইনিংসে দুই ব্যাটসম্যানের সেঞ্চুরি করার চতুর্থ ঘটনা।
টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি হাঁকানো তামিম এদিন ছিলেন ১২৮ রানে অপরাজিত। যা তার ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ১৩তম শতক। এই সংস্করণে বাংলাদেশের আর কোনও ব্যাটসম্যানেরই শতক সংখ্যায় দুই অংক ছোঁয়ার নজির নেই। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৯টি সেঞ্চুরি আছে নির্বাসনে থাকা সাকিব আল হাসানের।
এছাড়া, তামিম-লিটনের আজকের সেঞ্চুরির ফলে বাংলাদেশের এক সিরিজে দুই ওপেনারের দুটি করে সেঞ্চুরি পাওয়ার এটাই প্রথম নজির।
প্রথম ম্যাচে সেঞ্চুরি হাঁকানো লিটন এদিন আউট হয়েছেন ১৭৬ রানে। ওয়ানডেতে বাংলাদেশের পক্ষে যা কোনও ব্যাটসম্যানের পক্ষে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। দুদিন আগে এই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই নিজের রেকর্ড ভেঙেছিলেন তামিম। করেছিলেন ১৫৮ রান। তার আগের রেকর্ডটি ছিল ১৫৪ রানের।
আজ প্রায় তিন শ রানের জুটি গড়ার পথে তামিম ও লিটন যৌথভাবে মেরেছেন ১৪টি ছক্কা। এক ম্যাচে বাংলাদেশের দুই ব্যাটসম্যানের সর্বোচ্চ ছক্কার নতুন রেকর্ড এটা।
এক ম্যাচে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ছক্কার রেকর্ডও এটি। গত বছর ডাবলিনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১১টি ছক্কা হাঁকিয়েছিল টাইগাররা।
ইনিংস শেষে বাংলাদেশের ওভার প্রতি রান ছিল ৭.৪৮। যা টাইগারদের ওভার প্রতি গড়ে সর্বোচ্চ রান তোলার দ্বিতীয় রেকর্ড। গত বছর টনটনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ৪১.৩ ওভারে ৩২২ রান করেছিল বাংলাদেশ। সেদিন ওভার প্রতি গড়ে ৭.৭৫ রান করেছিল টাইগাররা। এছাড়া, এ নিয়ে চতুর্থবার ৩২২ রান করেছে টাইগাররা।
অন্যদিকে, এ নিয়ে দ্বিতীয়বার তিন উইকেটে তিন শ ছাড়িয়েছে বাংলাদেশ। এর আগে যতবারই বাংলাদেশ তিন শ ছাড়িয়েছে, ততবারই অন্তত চার উইকেট বা তার বেশি হারিয়েছে টাইগাররা।
সর্বশেষ, এই সিরিজে বাংলাদেশ মোট রান করেছে ৯৬৫। যা তিন ম্যাচের সিরিজে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। তেমনি তামিম ও লিটনের জন্যও তিন ম্যাচের সিরিজে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত সংগ্রহ। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এই সিরিজে তামিম দুই সেঞ্চুরিতে ১৫৫ গড়ে করেন ৩১০ রান।
অন্যদিকে, প্রায় একই গড়ে (১৫৫.৫০) তামিমের থেকে মাত্র ১ রান বেশি (৩১১) করেন দেশের হয়ে এক ব্যক্তিগত সংগ্রহে রেকর্ড গড়া লিটন দাস। এটাই সবচেয়ে ভালো সিরিজ গেল এই ডানহাতি মারকুটে ওপেনারের।
এনএস/