ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

সৌরভ-ধোনিদের থেকেও এগিয়ে মাশরাফি

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৫:৫৫ পিএম, ৭ মার্চ ২০২০ শনিবার

সৌরভ-ধোনিদের থেকেও এগিয়ে মাশরাফি

সৌরভ-ধোনিদের থেকেও এগিয়ে মাশরাফি

তামিম ইকবালকে সঙ্গী করে উদ্বোধনী জুটিতে বাংলাদেশের হয়ে ইতিহাস গড়েছেন লিটন দাস, ভেঙ্গেছেন ২১ বছরের রেকর্ডও। একইসঙ্গে ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান ওয়ানডেতে গড়েছেন ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ স্কোরের রেকর্ড। এক ম্যাচ বিরতি দিয়ে ফিরেই ৪ উইকেট পেয়েছেন সাইফউদ্দিন। 

তবে এসব কিছুকে ছাপিয়েই শুক্রবার রাতটি ছিল শুধুই মাশরাফি বিন মুর্তজার। বাংলাদেশের অধিনায়ক হিসেবে এদিনই যে সর্বশেষ ম্যাচটি খেলে ফেললেন নড়াইল এক্সপ্রেস।

অধিনায়ক হিসেবে বিদায়ী ম্যাচে সম্ভাব্য সেরা উপহারই পেয়েছেন মাশরাফি। ইতিবাচক সব রেকর্ডে দেশের ইতিহাস সমৃদ্ধ হয়েছে। নিজেও ছুঁয়েছেন অনন্য এক মাইলফলক। বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়ে ওয়ানডেতে ৫০তম জয়ও পেয়েছেন মাশরাফি। বাংলাদেশের হয়ে এমন কীর্তি যে এই প্রথম সেটা বলাই বাহুল্য। 

বাংলাদেশের দ্বিতীয় সফল অধিনায়ক হাবিবুল বাশারই তার চেয়ে পিছিয়ে আছেন ২১ সংখ্যাটির ব্যবধানে। নিকট ভবিষ্যতে মাশরাফির পর এমন কিছু বাংলাদেশের হয়ে অর্জনের সম্ভাবনা আছে শুধু সাকিব আল হাসানের। তবে সে পথটাও বেশ কঠিন। নিষেধাজ্ঞা থেকে ফেরার পর যদি দলের দায়িত্বটা পানও, তবুও মাশরাফিকে ধরতে দলকে আরও ২৭টি ম্যাচে জয় উপহার দিতে হবে সাকিবকে।

এদিকে, ওয়ানডে ক্রিকেটে অধিনায়ক হিসেবে ৫০তম জয় বাংলাদেশের জন্য প্রথম হলেও এমনটা ক্রিকেট বিশ্ব আরও দেখেছে ২৪ বার। অর্থাৎ ম্যাশকে নিয়ে ওয়ানডেতে মোট ২৫ জন অধিনায়কের জয়ের ফিফটি আছে। এর মধ্যে দলকে জেতানোর সেঞ্চুরিই করেছেন তিনজন। 

এছাড়া, দলকে জয় উপহার দেয়ার ক্ষেত্রে নার্ভাস নাইনটি নাইনে ‘আউট’ হওয়া একমাত্র অধিনায়ক দক্ষিণ আফ্রিকার প্রয়াত ক্যাপ্টেন হ্যান্সি ক্রনিয়ে। ফলে দেখা যাচ্ছে, ওয়ানডের সফল অধিনায়কদের তালিকায় বেশ পিছিয়েই আছেন মাশরাফি। আরও পরিস্কার করে বলা যায়, ওয়ানডে ক্রিকেটে মাশরাফির চেয়েও সফল অধিনায়ক আছেন আরও ২২ জন।

তবে, অধিনায়কত্ব শুধু জয় দিয়ে হিসাব করলে যে ভুলই করা হবে। জয়গুলো পেতে কার কত ম্যাচ দরকার হয়েছে, সেটাও যে খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আর এ ক্ষেত্রে অধিনায়কত্বের শুরুতে জয়-পরাজয়ের অনুপাতে সর্বকালের সেরা অধিনায়কদের সঙ্গেই পাল্লা দিয়েছেন মাশরাফি। 

কিন্তু ২০১৮ ও ২০১৯ সালে ধীরে ধীরে কমে যায় সেই সমীকরণটা। তবুও ৮৮ ম্যাচে ৫০ জয় হেলায় উড়িয়ে দেয়া সম্ভব নয় কারও পক্ষেই। মাশরাফির অধিনায়কত্বে ওয়ানডেতে বাংলাদেশ জয় পেয়েছে ৫৬.৮২ ভাগ ম্যাচেই।

এ হিসেবে কমপক্ষে ৫০ ম্যাচ জেতা অধিনায়কদের মাঝে বেশ এগিয়েই আছেন ম্যাশ। সেরা পঁচিশে জয়ের হারে মাশরাফির চেয়ে পিছিয়ে আছেন আরও দশজন। তাদের মাঝে আছেন ভারতকে বিশ্বকাপ জেতানো ও ১১০ ম্যাচে জয় উপহার দেয়া মহেন্দ্র সিং ধোনিও (৫৫ ভাগ)। 

বিশ্বকাপজয়ী আরও দুই অধিনায়ক পাকিস্তানের ইমরান খান (৫৩.৯৫) ও শ্রীলঙ্কার অর্জুনা রানাতুঙ্গাও (৪৬.১১ ভাগ) আছেন এ তালিকায়। আরও আছেন ক্রিকেটে ভারতেকে বদলে দেয়ার কৃতিত্ব পাওয়া সৌরভ গাঙ্গুলীও (৫১ ভাগ)।

মাশরাফির চেয়ে তাহলে এগিয়ে আছেন কারা? এখানেও আছেন বিশ্বজয়ীরা। অস্ট্রেলিয়ার মাইকেল ক্লার্ক মাশরাফির মতোই ৫০ জয় পেলেও তার অধিনায়কত্বে অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ খেলেছে ৭৪টি। ফলে জয়ের হারে ক্লার্ক বেশ এগিয়ে (৬৭.৫৭ ভাগ)। ক্লার্কের চেয়েও এগিয়ে আছেন এখও পর্যন্ত কোনো বৈশ্বিক ট্রফি না জেতা বিরাট কোহলি (৬৯.৬৬)। 

এদিকে, ক্লার্ক ও মাশরাফির মাঝে আছেন- এবি ডি ভিলিয়ার্স (৫৭.২৮), ইনজামাম-উল-হককে (৫৭.৭৮)। দুজন বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক অ্যালান বোর্ডার (৬১.১১) ও ইয়ন মরগানও (৬০.৫৩) আছেন এখানে। অধিনায়ক হিসেবে সফলতায় পিছিয়ে ছিলেন না ওয়াসিম আকরাম (৬০.৫৫), গ্রায়েম স্মিথ (৬১.৩৩), শন পোলকরাও (৬১.৮৫)। সমান ৬৭টি ম্যাচে জয় পেলেও স্টিভ ওয়াহকে (৬৩.২১) একটুর জন্য পেছনে ফেলেছেন ভিভ রিচার্ডস (৬৩.৮১)।

তবে, সবার স্পর্শের বাইরে আছেন ক্যারিবিয়ান গ্রেট ক্লাইভ লয়েড। দুটি বিশ্বকাপজয়ী এই অধিনায়ক মাত্র ৮৪ ম্যাচেই পেয়েছেন ৬৪টি জয়। ৭৬.১৯ ভাগ সাফল্যের গল্পের পরেই আছেন রিকি পন্টিং ও হ্যান্সি ক্রনিয়ে। জয় পাওয়ার রেকর্ডে পন্টিংয়ের ১৬৫-কে ছাড়িয়ে যাওয়া হয়তো কারও পক্ষেই সম্ভব হবে না। কিন্তু জয় পাওয়ার হারে তার সঙ্গে সমতায় আছেন ৯৯ ম্যাচে বিজয়ীর হাসি হাসা ক্রনিয়ে। দুজনই নিজ নিজ দলকে নেতৃত্ব দিয়ে জয় পেয়েছেন ৭১.৭৪ ভাগ ম্যাচেই।

এনএস/