ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

করোনা ঠেকাতে ঘরে বসে যেভাবে বানাবেন মাস্ক

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:৩৫ পিএম, ৯ মার্চ ২০২০ সোমবার

দেশে করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী সনাক্তের পর আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে সারাদেশে। এ ভাইরাস প্রতিরোধে কোনো ওষুধ বা টিকা আবিষ্কার না হওয়ায় প্রতিরোধকেই গুরুত্ব দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। ফলে ফার্মেসিগুলোতে দেখা দিয়েছে মাস্কের সংকট। অধিকাংশ দোকানেই পাওয়া যাচ্ছে না মাস্ক। আর পাওয়া গেলেও দাম রাখা হচ্ছে কয়েকগুণ বেশি।

মাস্কের এই সংকটাপন্ন অবস্থায় আতঙ্কিত না হয়ে ঘরে বসেই বানিয়ে নিতে পারেন ব্যবহার উপযোগী মাস্ক। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যগুলোতে ঘুরে বেড়াচ্ছে অভিনব পদ্ধতিতে মাস্ক তৈরির নানা ভিডিও। করোনা থেকে সুরক্ষা পেতে আসুন ঘরে বসে নিজেই তৈরি করে নিন সহজ পদ্ধতিতে মাস্ক।

মাস্ক তৈরিতে যা যা প্রয়োজন:

১. টিস্যু বা কাপড়
২. রাবার
৩. স্ট্যাপলার

মাস্ক বানানোর নিয়ম:

একটি কাপড় বা টিস্যু পেপার নিন (টাওয়েল টিস্যু পেপার, যেটা দিয়ে মুখ মোছা হয়)। সেটি খাট অথবা টেবিলের ওপর রাখুন। এখন এটিকে লম্বা লম্বা করে ও একবার বিপরীত দিকে উল্টিয়ে ভাজ করুন। ভাজ করা হয়ে গেলে টিস্যুর দু’পাশে দু’টি রাবার দিয়ে দিন। এবার রাবারটি টিস্যু পেপার দিয়ে ভাজ করে সেটিকে স্ট্যাপলার দিয়ে পিনআপ করে নিন। ব্যস আপনার মাস্কটি তৈরি হয়ে যাবে।

করোনা থেকে বাঁচতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১১ পরামর্শ:

১. নিয়মিত সাবান বা এলকোহলের উপস্থিতি আছে এমন হ্যান্ডওয়াশ ব্যবহার করুন। কারণ ভালভাবে দুই হাত সাবান বা হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে ঘষে বিশুদ্ধ পানিতে ধুয়ে নিলে ভাইরাস ধ্বংস হয়ে যায়।

২. হাঁচি-কাশি আছে এমন মানুষ থেকে অন্তত ৩ ফুট দূরত্ব বজায় রেখে চলুন। কারণ হাঁচি কাশির সময় মানুষের মুখ থেকে তরল নির্গত হয়। আশপাশের বাতাসেও তখন জীবাণু মিশে ছড়িয়ে পড়ে। সেক্ষেত্রে করোনার জীবাণু বাহক কারো হাঁচি কাশি থেকে আপনার মাঝেও ছড়াতে পারে। তাই জনসমাগম ঘটানো থেকে বিরত থাকুন।

৩.নিজের চোখ, নাক, মুখ স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকুন। কারণ হাত দিয়ে আমরা নানা বস্তু স্পর্শ করে থাকি। তাই হাতে জীবাণু থাকার সম্ভাবনা থাকে। তাই বারবার চোখ, নাক, মুখ স্পর্শ করলে হাত থেকে শরীরে খুব দ্রুত সংক্রমণ হতে পারে।

৪.আপনি যদি হাঁচি, কাশি বা সামান্য জ্বরেও ভুগে থাকেন তবে ভ্রমণ এড়িয়ে চলুন। ভ্রমণে থাকা অবস্থায় অসুস্থ হলে বা হাঁচি কাশির হলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

৫.শিশুদের ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্ক থাকুন। শুধু কোভিড-১৯-ই নয়, শিশুরা যাতে কোনো রকম ভাইরাসে আক্রান্ত না হয় সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। কোনো শিশুকে করোনা আক্রান্ত মনে হলে বা আক্রান্ত হলে তার সাথে ভালো আচরণ করুন। তার যত্ন নিন।

৬.অবশ্যই শ্বাস প্রশ্বাসের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। এতে মুখমণ্ডল ঢেকে রাখার বিকল্প নেই। এ ক্ষেত্রে মাস্ক ব্যবহার করা উত্তম। তবে আপনার ব্যবহৃত মাস্কটি কতোটা স্বাস্থ্য সম্মত তা নিশ্চিত করতে হবে। একটি মাস্ক একবার ব্যবহারের পর পরিষ্কার না করে আবার ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।

৭.হাঁচি-কাশির সময় টিস্যু ব্যবহার করতে হবে। এতে করে নিজে এবং আশপাশের মানুষ করোনা বা কোভিড-১৯ থেকে সুরক্ষিত থাকবে। অবশ্যই টিস্যু নির্দিষ্ট স্থানে ফেলতে হবে। যত্রতত্র ফেললে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে অন্যদের মাঝে।

৮.আপনি যদি জ্বর, হাঁচি, কাশি বা শ্বাস কষ্ট হয় তবে, নিজে থেকেই দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন। অসুস্থ বোধ করলে বাসায় থাকুন। ডাক্তারর পরামর্শ মেনে চলুন। কারণ প্রতিটি দেশের পরিবেশ পরিস্থিতি সেখানকার ডাক্তার বা সরকারি স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা পর্যবেক্ষণ করছেন। তাই তাদের পরামর্শ মেনে চলার বিকল্প নেই।

৯.কোভিড-১৯ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে এমন দেশ বা এলাকা থেকে কেউ নিরাপদ এলাকায় আসলে তাকে অন্তত ১৪ দিন পর্যবেক্ষণ করতে হবে। পর্যবেক্ষণ কালে আশঙ্কাজনক ব্যক্তিকে অন্যদের চেয়ে আলাদা করতে হবে। এতে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি কমে যায়।

১০.খাবার ভালোভাবে রান্না করে খান। কাঁচা মাংস খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। রান্নার সময় ডিম বা অন্য খাবার ভালোভাবে সেদ্ধ করুন। এতে খাবারে কোনো জীবাণু থাকলে সেটি আগুনে ধ্বংস হয়ে যাবে। একই সাথে অসুস্থ অথবা মৃত পশুর মাংস খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।

১১.আপনার বাসার আসবাবপত্র বা ব্যবহারের জিনিস, তৈজসপত্র এন্টিসেফ্টিক (বস্তু জীবাণু মুক্ত করার তরল) দিয়ে পরিষ্কার করুন।জামাকাপড় এমনকি ঘর পরিষ্কারের ব্রাশও ভালোভাবে প্রতিদিন পরিষ্কার করুন।

টিআই/