ডাকসু নির্বাচনের এক বছরপূর্তি আজ
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১২:১১ পিএম, ১১ মার্চ ২০২০ বুধবার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের এক বছরপূর্তি হচ্ছে আজ বুধবার। দীর্ঘ ২৮ বছর অপেক্ষার পর ডাকসু নির্বাচন হয় গত বছরের ১১ মার্চ। নির্বাচিত প্রতিনিধিরা দায়িত্ব গ্রহণ করেন ২৩ মার্চ। সে হিসাবে এ মাসেই ডাকসুর মেয়াদ পূর্ণ হচ্ছে।
ডাকসুতে নির্বাচিত ছাত্রলীগ ও কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের দুই প্যানেলেরই নির্বাচনী ইশতেহারে প্রতিশ্রুতি ছিল- বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসন সংকট নিরসন, গণরুম-গেস্টরুমপ্রথা উচ্ছেদ, হল থেকে অছাত্র-বহিরাগত বিতাড়ন, সান্ধ্যকোর্স বন্ধ, গবেষণা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি, পরিবহন সমস্যার সমাধান, ক্যান্টিনে খাবারের মান বৃদ্ধি, সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিল, ক্যাম্পাসে বাইরের যান চলাচল বন্ধ প্রভৃতি। এসব প্রতিশ্রুতির কোনোটিই বাস্তবায়ন করতে পারেননি ডাকসু নেতৃবৃন্দ।
তবে এর পরও সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রনেতারা চাচ্ছেন ডাকসু নির্বাচনের এ প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকুক। শিক্ষার্থীদের ভোটে প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়ে তাদের কল্যাণে ভূমিকা রাখুক ডাকসু।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ডাকসুতে সংখ্যাগরিষ্ঠ ছাত্রলীগের সঙ্গে কোটাবিরোধী আন্দোলনের দ্বন্দ্ব নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে ডাকসুর কার্যক্রমে। শীর্ষ নেতৃত্বের মধ্যে মানসিক দূরত্ব ছিল প্রকট। ভিপি-জিএসের মধ্যে দূরত্ব, ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল, সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ এবং ছাত্রলীগের মধ্যকার দ্বন্দ্ব, ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তার প্রতি আকর্ষণ, সমন্বয়হীনতা প্রভৃতি কারণে ডাকসু তার কার্যক্রম সঠিকভাবে চালিয়ে যেতে পারছে না।
তবে কেউ কেউ বলছেন, দীর্ঘদিন ছাত্র সংসদ না থাকায় ডাকসুর নিয়মতান্ত্রিকতার সঙ্গে সবাই অভ্যস্ত হয়ে উঠতে পারেননি। ফলে ভালোভাবে কাজ করতে পারছেন না প্রতিনিধিরা।
ডাকসুর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের নেওয়া দৃশ্যমান উদ্যোগের মধ্যে রয়েছে কয়েকটি বিভাগের উন্নয়ন ফি কমানো, হলের ফি কমানো, সুপেয় পানির ব্যবস্থা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, খেলাধুলার আয়োজন, সাহিত্য সাময়িকী প্রকাশ, ছাত্রী হলসহ বিভিন্ন রুটে পরিবহন বৃদ্ধি, লাইব্রেরি খোলার সময়সীমা দুই ঘণ্টা বাড়ানো, শিক্ষার্থীদের সাংস্কৃতিক প্রতিভা অন্বেষণে ট্যালেন্ট হ্যান্ট প্রতিযোগিতার আয়োজন, অ্যাপভিত্তিক বাইসাইকেল সেবা চালু ইত্যাদি। এসব কাজও বিচ্ছিন্নভাবে ডাকসুর কিছু সদস্য করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান সমস্যা- ‘গণরুম’ ‘গেস্টরুম’প্রথা এখনো চালু রয়েছে নতুন আঙ্গিকে। গণরুম হয়েছে ‘বন্ধুরুম’, গেস্টরুম হয়ে উঠেছে ‘মতবিনিময় কক্ষ’। অথচ কার্যক্রম চলে আগের মতোই। শিক্ষার্থী নিপীড়নের ঘটনাও ঘটছে নিয়মিত। গণরুম সমস্যাকে পুঁজি করে শিক্ষার্থীদের দলীয় প্রোগ্রামে ব্যবহার করা হচ্ছে।
তবে ডাকসুর কার্যক্রমে সন্তুষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান। তিনি বলেন, ডাকসু বিভিন্নভাবে অনেক কর্মসূচি করছে এবং সেগুলোতে বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীর সম্পৃক্ততাও দেখা গেছে। এগুলো দেখে খুব ভালো লাগছে। এত অল্প সময়ে তারা যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, তা খুবই আশাব্যঞ্জক।
এসএ/