ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

মুজিববর্ষে কুড়িগ্রামের ঐতিহাসিক ইয়ুথ ক্যাম্পের স্মৃতিচারণ

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৩:৫৭ পিএম, ১১ মার্চ ২০২০ বুধবার

আলোচনা সভায় অতিথিবৃন্দ। ছবি: একুশে টেলিভিশন

আলোচনা সভায় অতিথিবৃন্দ। ছবি: একুশে টেলিভিশন

মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে মুক্তিযুদ্ধের সময় কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলায় অবস্থতি অস্থায়ীভাবে স্থাপিত ঐতিহাসিক ইয়ুথ ক্যাম্পের স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার সকালে নাওডাঙ্গা ডিএস দাখিল মাদ্রাসার আয়োজনে উক্ত মাদ্রাসা চত্বরে অনুষ্ঠিত হয়। এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম রব্বানী সরকার।

স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানটিতে মাদ্রাসা ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি রেজাউল ইসলামের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন ইয়ুথ ক্যাম্পের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আমির আলী মিয়া, ইয়ুথ ক্যাম্পের সদস্য মনছুর আলী, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধার সাবেক কমান্ডার মজিবর রহমান ও মাদ্রাসা সুপার ওমর আলী খান প্রমুখ।

বক্তারা জানান, ১৯৭১ সালে যুদ্ধের সময় ফুলবাড়ি উপজেলা ছিল মুক্তাঞ্চল। সেই সময় মুক্তিযোদ্ধার প্রশিক্ষণ এবং অবস্থানের জন্য গঠিত হয় নাওডাঙ্গায় ফোরকানিয়া মাদ্রাসায় অস্থায়ীভাবে স্থাপিত ইয়ুথ ক্যাম্প। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ঐতিহাসিক ইয়ুথ ক্যাম্প অগ্রণি ভূমিকা রাখে। বীর প্রতীক বদরুজ্জামান মিয়ার নেতৃত্বে ৬ নম্বর সেক্টরে উপদেষ্ঠা ছিলেন সহ-অধিনায়ক ক্যাপ্টেন নওয়াজেস উদ্দিন, এ্যাডভোকেট আহম্মদ আলী সরকার, সামসুল হক চৌধুরী-এমপিএ, আবুল হোসেন-এমপিএ। 

ভারতের গিদালদহ সেক্টরের সাব সেক্টর কমান্ডার ক্যাপ্টেন দেলোয়ার হোসেনকে নিয়ে গঠন করা হয় সাত সদস্যের একটি কমিটি। ইয়ুথ ক্যাম্প ইনচার্জ ছিলেন জয়নাল আবেদীন। সদস্য ছিলেন- আমির আলী মিয়া, মজিবুর রহমান, নুরনবী সরকার, আমজাদ হোসেন, জামাল উদ্দিন, মনসুর আলী। 

তৎকালীন ইপিআর নায়েক আলী আহম্মদ, ল্যান্সনায়েক নোয়াব আলী, আনসার কমান্ডার পনির উদ্দিন, ইন্সট্রাক্টর স্কাউট সদস্য সামসুদ্দোহার নেতৃত্বে গঠিত হয় মুক্তিযোদ্ধা প্রশিক্ষণ শিবির। এই ইয়ুথ ক্যাম্প হতে প্রশিক্ষণ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিল শতশত মুক্তিযোদ্ধা। 

তারা আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে ইয়ুথ ক্যাম্প পরিদর্শনে আসেন তৎকালীন ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের খাদ্যমন্ত্রী ড. ত্রিগুনা সেনগুপ্ত, পশ্চিম বাংলার কৃষিমন্ত্রী কমল গুহ। এছাড়াও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা তাজুল ইসলাম, মার্শাল মণি, আব্দুল কুদ্দুস, ইসাহাক আলী, আবুল হোসেন, আব্দুর রউফসহ মুজিবনগর সরকারের সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তাগণ পরিদর্শন করেছিলেন। 

অনুষ্ঠানে আমীর আলী মিয়া ও  মনসুর আলী জানালেন, ’৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীনের পর ১৮ ডিসেম্বর এই ইয়ুথ ক্যাম্পের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু স্বাধীনতার ৪৯ বছর পেরিয়ে গেলেও আজ পর্যন্ত এই ঐতিহাসিক ইয়ুথ ক্যাম্পের কেউ খোঁজ রাখেনি। ইয়ুথ ক্যাম্পের অবকাঠামো উন্নয়নসহ স্মৃতিরক্ষার দাবি জানান বক্তারা।

এএইচ/