১৯৭২ সালে তৎকালীন বর্ধমান হাউস চত্বরে আন্তর্জাতিক বইমেলার যাত্রা থেকেই বইমেলার ইতিহাস
প্রকাশিত : ১২:৩০ পিএম, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ মঙ্গলবার | আপডেট: ১২:৩০ পিএম, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ মঙ্গলবার
১৯৭২ সালে তৎকালীন বর্ধমান হাউস চত্বরে যে আন্তর্জাতিক বইমেলা যাত্রা করেছিল, তারই ধারাবাহিকতায় আজকের অমর একুশে গ্রন্থমেলা। মানুষের গভীর আবেগ, ভালোবাসা ও গ্রন্থপ্রীতি যুক্ত হয়ে বই মেলাটি ধীরে ধীরে পরিনত হয়েছে বাঙালির সাহিত্য-সাস্কৃতির জাগরণ কেন্দ্রে। তবে শুরুর ইতিহাসটা অনেকেরই অজানা। আর তাই অমর একুশে গ্রন্থমেলা প্রাঙ্গনেই করা হোক, বই মেলার ইতিহাস সংবলিত স্মৃতিচিহ্ন, এমন দাবি জানিয়েছেন কেউ কেউ।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের তৎকালীন প্রধান সরদার জয়েনউদ্দীন উদ্যোগে আয়োজন করা হয় আন্তর্জাতিক বইমেলা। এতে ভারতের দু-একটি প্রকাশনা সংস্থা, বাংলাদেশের কিছু প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান ও ঢাকায় অবস্থিত কয়েকটি দূতাবাস অংশ নেয়। উদ্বোধন করেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী। এই মেলাটিকেই দেখা হয় বাংলাদেশে বইমেলার পথিকৃৎ হিসেবে ।
এরপরে অমর একুশে ফেব্র“য়ারি উপলক্ষে বাংলা একাডেমিতে বিচ্ছিন্নভাবে নিজেদের বইপত্রের পসরা সাজিয়ে বসেছেন মুক্তধারার শ্রী চিত্তরঞ্জন সাহা, স্ট্যান্ডার্ড পাবলিশার্সের রুহুল আমিন নিজামী, বর্ণমিছিলের তাজুল ইসলাম। কিন্তু তখনো বাংলাদেশে বইমেলা কোনো সুস্পষ্ট রূপ পায়নি।
১৯৮৩-তে একাডেমির তৎকালীন মহাপরিচালক মনজুরে মওলা ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা’ আয়োজন করেন। কিন্তু স্বৈরাচারী সরকার একটি ছাত্রমিছিলে ট্রাক তুলে দেওয়ায় সেই বছর মেলাটি আর হতে পারেনি। তবে পরের বছর বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গনে ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা’র সূচনা। প্রথমবার আয়োজনে মাত্র পঁচিশ-ত্রিশটি প্রকাশনা সংস্থা অংশ নেয়।
এরপর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। এখন শুধু বাংলা একাডেমিতে নয়, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। প্রতিবছর এই মেলায় আসা, বই কেনা বাঙালির জীবনের অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছে। শুরুর ইতিহাসটা জানেনা অনেকে। তাদের দাবি একটি স্মৃতি চিহ্ন সংবলিত ফলক থাকলে নতুন প্রজন্ম জানতে পারবে ইতিহাস।
বাঙালির উজ্জ্বল সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অনন্য প্রতীক বাংলা একাডেমির গ্রন্থমেলা। মানবিক গুনাবলী ও শুভবুদ্ধির জাতি গঠন ও আলোকিত সমাজ গড়ায় এই মেলা ভূমিকা রাখবে-এমনটাই প্রত্যাশা সবার।