করোনা ভাইরাস: সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে রিট
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০১:২৭ পিএম, ১৫ মার্চ ২০২০ রবিবার | আপডেট: ০১:৫০ পিএম, ১৫ মার্চ ২০২০ রবিবার
বিশ্বব্যাপী মহামারি আকার ধারণ করা প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস থেকে রক্ষায় সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধে নির্দেশনা জারির আর্জি জানিয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে।
আজ রোববার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. ইউনুছ আলী আকন্দ এ রিট দায়ের করেন। রিটে সব বিমানবন্দর, নৌবন্দর ও স্থলবন্দরে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তিকে শনাক্তে এবং সব বন্দরের প্রবেশমুখে মনিটরিংয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনাও চাওয়া হয়েছে।
এই আইনজীবী জানান, আগামীকাল সোমবার বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানির জন্য উপস্থাপন করা হতে পারে।
আবেদনে সব বিমানবন্দর, নৌবন্দর ও স্থলবন্দরে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তিকে শনাক্তে এবং সব বন্দরের প্রবেশমুখে মনিটরিংয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে, করোনা ভাইরাস থেকে জনগণকে রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে, সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধে কেন নির্দেশনা দেওয়া হবে না এবং করোনা ভাইরাস থেকে জনগণকে রক্ষায় সরকারের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না এ মর্মে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব, স্বাস্থ্য সচিব, শিক্ষা সচিব, বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালককে বিবাদী করা হয়েছে।
এর আগে গতকাল শনিবার রাতে ইস্কাটনে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় অনুষ্ঠিত এক জরুরি ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, আপাতত স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হচ্ছে না। যেহেতু এক থেকে ৪০ বছর বয়সীদের করোনা আক্রান্ত হওয়ার হার কম তাই জনমনে যাতে আতঙ্ক সৃষ্টি হয় সেজন্য স্কুল-কলেজ খোলা রাখা হচ্ছে।
এরও আগে শনিবার সকালে সার্বিক পরিস্থিতি বিচার-বিশ্লেষণ করে স্কুল-কলেজ বন্ধে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছিলেন জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা।
তিনি বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো এখন কী ব্যবস্থা নেবে সে বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে শিক্ষা অধিদফতর দুটি নির্দেশনা পাঠিয়েছে। স্কুলগুলো যেহেতু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে নয়, তাই আমরা কেবল পরামর্শ দিতে পারি। সেখানে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য আমরা সব স্কুল কর্তৃপক্ষকে বলব। কারণ সাবান দিয়ে হাত ধোয়াই করোনা প্রতিরোধের সর্বোত্তম পন্থা।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের সংক্রমণ কিন্তু সেভাবে নেই। এখানে যে তিনজন সংক্রমিত ছিলেন তারাও কিন্তু নেগেটিভ হয়ে গেছেন।
এদিকে, উৎপত্তিস্থল চীনে অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আসলেও বিশ্বজুড়ে মহামারি আকার ধারণা করেছে করোনা। ইউরোপ, আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর অবস্থা উদ্বেগজনক। ইতালি ও ইরানের অবস্থ সবচেয়ে ভয়াবহ। দেশ দুটিতে প্রতিনিয়ত লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। এমন অবস্থায় ইউরোপকে পৃথকভাবে ‘মহামারির আশ্রয়কেন্দ্র’ বলে অভিহিত করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের বরাত দিয়ে আজ রোববার স্থানীয় সংবাদমাধ্যম দ্য চায়না মর্নিং পোস্ট জানিয়েছে, বিশ্বের ১৩২টি দেশে ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতি ভাইরাসটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৪২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী মৃতের সংখ্যা ৫ হাজার ৭৯৫ জনে দাঁড়িয়েছে। নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন আরও প্রায় ১০ হাজার মানুষ। বর্তমানে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১ লাখ প্রায় ৫২ হাজার মানুষ।
একে//