ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

করোনা আতঙ্কে ক্যাম্পাস বন্ধের দাবি হাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:৪৯ পিএম, ১৫ মার্চ ২০২০ রবিবার

চীন থেকে ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে গোটা বিশ্ব ছড়িয়ে পড়েছে। এই ভাইরাস বাংলাদেশে শনাক্ত হওয়ায় দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীদের মাঝেও আতংক বিরাজ করছে। এই করোনার সংক্রমন থেকে মুক্তি পেতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

মেহেদী হাসান,মাসুমা হিমু ও নিলয় নামে কয়েকজন নিজেদের নাম,অনুষদ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয় দিয়ে ফেসবুকে লিখেছেন, করোনা ভাইরাস সংক্রমণ থেকে পরিত্রাণ পেতে বিশ্ববিদ্যালয় সাময়িক বন্ধ ঘোষণার পক্ষে অবস্থান করছি।বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে বাতাসের চেয়ে দ্রুততম সময়ে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। কারণ সবার জানা। আক্রান্ত হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের ঘোষণা আসলে সেটি আরও বেশি ভয়াবহ হবে। তখন অনেকেই করোনা ভাইরাস বহন করে বাড়িতে যাবে। বিষয়টি এখনই গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করার সময় এসেছে।  

আরিফ মিলন নামে এক শিক্ষার্থী লিখেছেন”হাবিপ্রবিতে অনেক বিদেশি শিক্ষার্থী আছে,যাদের অনেকেই সাম্প্রতিক নিজ দেশ ভ্রমন করে এসেছে।তাই আমার মতামত সাময়িকভাবে দুই সপ্তাহের জন্য হলেও ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষনা করে অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে দেখা হোক”।

সাব্বির আহমেদ নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, করোনা ভাইরাস ঝড়ের গতিতে ছড়াচ্ছে গোটা দেশে৷আমরা হলে গড়ে প্রতিটি রুমে ৪-৬ জন এবং গণরুমে ২৫ থেকে ৩০ জন করে অবস্থান করি। হলের ডাইনিং এ খাবার খাই ১৫০ থেকে ২০০ জন করে। বাসে গাদাগাদি করে আসা-যাওয়া করে অনেকে। ক্লাসে উপস্থিত থাকি প্রায় সবাই। যদি কারও করোনা হয় এবং এটি শনাক্ত করতে ব্যার্থ হলে এক ভয়বহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। ইমরান নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, অত্যন্ত আমাদের পিতা-মাতার কথা চিন্তা করে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের দাবি করছি।তবে অনেকে আবার সেশনজটের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে বন্ধ না করার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রফেসর ডা. মো. ফজলুল হক(মুক্তিযোদ্ধা)বলেন, করোনা ভাইরাস মোকাবিলার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল প্রকার সভা, সমাবেশ, মিছিল, পিকনিক সাময়িক সময়ের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ বিষয়ে একটি নোটিশ প্রকাশ করা হয়েছে ইতিমধ্যে। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হবে কিনা এটি নির্ভর করছে আইইডিসিআর, শিক্ষামন্ত্রনালয় তথা সরকারের সিদ্ধান্তের উপর।

এ বিষয়ে চীপ মেডিকেল অফিসার ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, করোনা একটি বৈশ্বিক মহামারিতে রুপ নিয়েছে এতে কোন সন্দেহ নেই। তবে দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে এ ভাইরাস মোকাবেলায় কোন এন্টিবায়োটিক কাজ করছে না। এখনও পর্যন্ত কোন প্রতিষেধক নেই। ব্যাপক জনসচেতনতা সৃষ্টিকল্পে প্রত্যেককে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।

এদিকে আজ রবিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক ড.ইমরান পারভেজ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট সকলকে জনসমাগম হয় এ ধরনের কর্মসূচি এড়িয়ে চলাসহ সচেতনতা অবলম্বন এবং সাংস্কৃতিক,ক্রিড়া,পিকনিকসহ সব ধরনের অনুষ্ঠানসূচি পুনর্বিন্যাস করার অনুরোধ জানিয়েছে নির্দেশনা প্রদান করা হয়।  

কেআই/আরকে