মুজিববর্ষে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর চিঠি
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৪:০৭ পিএম, ১৬ মার্চ ২০২০ সোমবার
১৭ মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী। এ উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার হবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। যদিও বড় পরিসরে অনুষ্ঠানটি করার কথা ছিল, কিন্তু করোনাভাইরাস বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ায় ছোট পরিসরে অনুষ্ঠানটি উদযাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মঙ্গলবার এর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে জন্মবার্ষিকীতে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে একটি খোলা চিঠি লিখেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চিঠির শুরুতে তিনি লিখেছেন-
‘ছোট্ট সোনামণি,
আমার শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা নিও। তোমার বাবা-মাকে আমার সালাম ও ভাই-বোনদের স্নেহ পৌঁছে দিও। পাড়া-প্রতিবেশীদের প্রতি শুভেচ্ছা রইলো।’
‘আজ ১৭ মার্চ। ১৯২০ সালের এদিনে বাংলার মাটিতে জন্ম নিয়েছিলেন এক মহাপুরুষ। তিনি আমার পিতা, শেখ মুজিবুর রহমান। বাংলাদেশ নামের এই দেশটি তিনি উপহার দিয়েছেন। দিয়েছেন বাঙালিকে একটি জাতি হিসেবে আত্মপরিচয়ের সুযোগ। তাইতো তিনি আমাদের জাতির পিতা।’
‘দুঃখী মানুষদের ক্ষুধা-দারিদ্র্য থেকে মুক্তি দিতে নিজের জীবনের সব সুখ-আরাম বিসর্জন দিয়ে তিনি সংগ্রাম করেছেন। বারবার কারাবরণ করেছেন। মানুষের দুঃখ-কষ্ট তাঁকে ব্যথিত করত। অধিকারহারা দুঃখী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য যেকোনো ত্যাগ স্বীকারে তিনি দ্বিধা করেননি। এই বঙ্গভূমির বঙ্গ-সন্তানদের একান্ত আপনজন হয়ে উঠেছিলেন, তাই তিনি ‘বঙ্গবন্ধু’।
২০২০ সালে আমরা জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন করছি। আজ শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের অনেক দেশ এই জন্মশতবার্ষিকী অর্থাৎ ‘মুজিববর্ষ’ উদ্যাপন করছে। সকলকে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ।
প্রিয় বন্ধু,
ঘাতকের নির্মম বুলেট কেড়ে নিয়েছে জাতির পিতাকে। তার নাম বাংলাদেশের ইতিহাস থেকে মুছে ফেলতে চেষ্টা করেছে। কিন্তু ওরা পরেনি। ঘাতকরা বুঝতে পারেনি বঙ্গবন্ধুর রক্ত ৩২ নম্বর বাড়ির সিঁড়ি বেয়ে বেয়ে ছড়িয়ে গেছে সারা বাংলাদেশে। জন্ম দিয়েছে কোটি কোটি মুজিবের। তাই আজ জেগে উঠেছে বাংলাদেশের মানুষ সত্যের সন্ধানে। ইতিহাস মুছে ফেলা যায় না। সত্যকে মিথ্যা দিয়ে দাবিয়ে রাখা যায় না। আজ শুধু বাংলাদেশ নয়, জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী পালিত হচ্ছে বিশ্বব্যাপী। বাংলাদেশকে বিশ্ব চিনে নিয়েছে তারই ত্যাগের মহিমায়।
সোনামণি,
জাতির পিতার কাছে আমাদের অঙ্গীকার, তার স্বপ্নের সোনার বাংলা আমরা গড়বই। আর সেদিন বেশি দূরে নয়। পিতা ঘুমিয়ে আছেন টুঙ্গিপাড়ার সবুজ ছায়াঘেরা মাটিতে পিতামাতার কোলের কাছে। তিনি শান্তিতে ঘুমান। তাঁর বাংলাদেশ অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে।
আমরা জেগে রইব তার আদর্শ বুকে নিয়ে। জেগে থাকবে মানুষ—প্রজন্মের পর প্রজন্ম—তার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ। জাতির পিতার দেওয়া পতাকা সমুন্নত থাকবে চিরদিন।
তোমরা মন দিয়ে পড়ালেখা করবে, মানুষের মত মানুষ হয়ে দেশ ও মানুষের সেবা করবে।
জয় বাংলার জয়, জয় মুজিবের জয়, জয় বঙ্গবন্ধুর জয়।
ইতি,
তোমারই শেখ হাসিনা।’
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রীর লেখা এই চিঠি পড়বে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় দেড় কোটি শিক্ষার্থী। শিশুদের উদ্দেশে লেখা এই চিঠি স্কুলে স্কুলে পৌঁছে দেবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রত্যেক শিশুই পৃথকভাবে চিঠিটা পাবে। চিঠিটা এমনভাবে দেওয়া হবে যাতে প্রত্যেকটি শিশুই মনে করে, প্রধানমন্ত্রী তার জন্যই লিখেছেন।
এসএ/