ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

করোনা ঝুঁকিতে বাংলাদেশ: এখনই সাবধান হোন

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৬:৪৩ পিএম, ১৬ মার্চ ২০২০ সোমবার

বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস ছড়াতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যে জেলা শহর থেকে শুরু করে গ্রাম এলাকাতেও বিস্তার লাভ করেছে। করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ঝুঁকিতে আছে ডাক্তার, নার্স ও হেলথ প্রফেশনালরা। এ অবস্থায় বিন্দুমাত্রও ভুল করা যাবেনা।

করোনায় সন্দেহভাজন রোগীদেরকে ভূলেও ঢাকা মেডিকেল কলেজ বা এ জাতীয় জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা যাবে না৷ এই একটি ভূলেই আরও ভয়ঙ্করভাবে ছড়িয়ে পড়বে এ ভাইরাসটি।

সরকারের ঊর্ধ্বতনদের প্রতি অনুরোধ- সরকারি বিভিন্ন ভবন, হোটেল-মোটেল খালি করে অস্থায়ী হাসপাতাল বানিয়ে ফেলুন। সেখানে আইসোলেশন করুন। একইসঙ্গে ডাক্তার, নার্স, ওয়ার্ডবয়দের জন্য বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করুন। ওষুধ, কীটসহ যেগুলো পর্যাপ্ত নেই, দ্রুতই আনার ব্যবস্থা করুন।

ডায়াগনসিস:

করোনা ভাইরাসের ডায়াগনসিস করার প্রক্রিয়াটা ডেংগির মত সহজ না। এটা আমাদের জন্য একটা বড় সমস্যা। পিসি আর পদ্ধতিতে পরীক্ষা করতে হয়। এমনকি এটা খুবই ব্যয়বহুল। দেশে এই পরীক্ষা করার মত ল্যাব আছে মাত্র দুই-তিনটা। এই সমস্যাগুলো সমাধান করতে না পারলে আতঙ্ক ভয়াবহ আকারে রূপ নেবে বলেই আমার ধারণা। করোনা ছড়িয়ে পড়লে দেশে একটা অরাজক পরিস্থিতি তৈরি হবে। শুধু সন্দেহের ভিত্তিতে সাধারণত কেউ কোয়ারান্টাইনে যেতে চাইবে না। বাংলাদেশ ঘনবসতি দেশ। এখানে ফ্লু আউটব্রেক একটু বেশিই ক্ষতি করবে, এটা সহজেই অনুমান করা যায়।

গুজব:

বাংলাদেশের তাপমাত্রায় করোনা সুবিধা করতে/ঠিকতে পারবে না বলে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। এটি একটি ভুল ধারণা/তথ্য। ভাইরাস ৩৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সবচেয়ে ভাল থাকে। ল্যাবে ভাইরাস কালচারই করা হয় ৩৭ ডিগ্রিতে। তবে ভাইরাসকে ৫৪ ডিগ্রী সেলসিয়াসে আধা ঘন্টা (৩০ মিনিট) ফুটালে মারা যায়। সুতরাং এবার নিজেই বুঝে নিন।

বলা হচ্ছে করোনায় ২% মানুষ মৃত্যুবরণ করছে, এটা ভয়ের কিছু না। কিন্তু কোন রোগেই ২ শতাংশ মৃত্যুহার কম নয়। এটাকে হালকা করে দেখার সুযোগ নেই। তারচেয়েও বড় কথা ব্যপক অর্থনৈতিক মন্দা তৈরি হবে। প্রচুর আর্থিক ক্ষতি হবে।

করনীয়:

করোনায় করণীয় কী -এটা বলা খুবই মুশকিল। করোনা বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোন ক্লিয়ার গাইড লাইন নেই। তাই আসুন সবাই সাবধান হয়ে যাই। পাশাপাশি কয়েকটা জরুরি বিষয় খেয়াল রাখুন-

১. প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে যাবেন না।

২. জনসমাগম এড়িয়ে চলুন।

৩. মাস্ক পড়ুন।

৪. হাত মেলাবেন না।

৫. দরজা, রেলিং প্রভৃতি সারফেসে হাত লাগানোর ক্ষেত্রে সাবধান।

৬. হ্যান্ড সেনিটাইজার ব্যবহার করুন। না পারলে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলুন।

উল্লেখ্য, দেশে করোনাভাইরাসে আরও তিনজন আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন মোট আট জন। এর আগে পাঁচজন করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হলেও এদের মধ্যে তিনজনই বর্তমানে সুস্থ। তাদের মধ্যে দুজন বাড়ি ফিরে গেছেন। এছাড়াও সারা দেশে হোম কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন  ২ হাজার ৪৭১ জন। এ অবস্থায় সবাই সর্বোচ্চ সতর্ক থাকুন। একে অন্যকে সতর্ক করুন। অচিরেই এই দুর্যোগ কাটিয়ে উঠুক বাংলাদেশ।

টিআই/এসি