ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

করোনার থাবায় ইতালিতে আরও ৩৪৯ জনের মৃত্যু

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:৪৫ এএম, ১৭ মার্চ ২০২০ মঙ্গলবার

চীনের মহামারির রূপ এখন ইতালিতে। করোনা ভাইরাসের ছোঁবলে দেশটি মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত হয়েছে। দেশটিতে দিন দিন মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছেই। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে ৩৪৯ জন মারা গেছেন। নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে ৩ হাজার ২৩৩ জন। 

এ নিয়ে ইতালিতে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২১৫৮ জনে। দেশটিতে এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ২৪ হাজার ৭৪৭ জন। একদিনে মৃত্যুর হার ৮ ভাগ। সুস্থ হয়েছেন ৯ ভাগ। যদিও মৃত্যুর চেয়ে সুস্থতার হার বেশি তবুও দিনের পর দিন আতঙ্কে মধ্যে আছে ইতালির মানুষ। দেশটিতে করোনার আঘাতে গুরুতর রোগীর সংখ্যা ১৮৫১ জনে দাঁড়িয়েছে। সুস্থ হয়েছেন ২৭৪৯ জন। চিকিৎসাধীন রয়েছেন ২৩ হাজার ৭৩ জন।

দেশটির প্রধানমন্ত্রী জুসেপ্পে কোন্তি করোনা সমস্যা উত্তরণের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ অব্যাহত রেখেছেন। করোনার মোকাবেলায় ২৫ বিলিয়ন ইউরো অর্থ বরাদ্দ করেছেন। এ দিয়ে চিকিৎসক, কর্মী, পরিবার ও ব্যবসার জন্য সহায়তা দেয়া হবে। অন্যদিকে নতুন একটি হাসপাতাল তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে দেশটির নাগরিক সুরক্ষা বিভাগ।

এদিকে দেশটির প্রধানমন্ত্রী গিসেপে কন্তের নির্দেশে ছয় কোটিরও বেশি মানুষকে গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে দেড় লাখ বাংলাদেশিও রয়েছে বলে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যগুলো জানিয়েছে। 

পুরো দেশজুড়েই ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ও জনসমাগমে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এর আগে দেশটির ১৪টি প্রদেশে ৮ মার্চ থেকে আগামী ৩ এপ্রিল পর্যন্ত জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। কিন্তু এখন তা বাড়িয়ে দেশটির ২০টি প্রদেশের সবগুলোতেই জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।

দেশটির প্রধানমন্ত্রী কন্তে টেলিভিশনে দেয়া এক ভাষণে বলেন, ‘এখন আর সময় নেই। যারা সবচেয়ে ঝুঁকিতে আছেন তাদের সুরক্ষার জন্যই এই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।’

এর আগে দেশজুড়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, খেলাধুলা, জিমনেশিয়াম, জাদুঘর, নাইটক্লাব, সিনেমা, মসজিদ এবং অন্যান্য ভেন্যু আগামী ১৫ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। যদিও তা এখন অনির্দিষ্টকালের জন্য করা হয়েছে। 

দেশটিতে জারি করা জরুরি অবস্থার মধ্যে বাড়ছে বেকারের সংখ্যা। প্রাণঘাতি ভাইরাসটির প্রকোপে থমকে আছে পুরো ইতালি। অর্থনৈতিক পরিস্থিতি চরম হুমকির মধ্যে পড়েছে। কোনো পর্যটক দেশটিতে প্রবেশ করতে পারছেন না। সরকারের কঠোর নির্দেশনা, অতি প্রয়োজন ছাড়া কেউ যেন ঘর থেকে বাইরে বের না হয়।

দ্রুত বিস্তার করায় রাজধানী রোমসহ অন্যান্য জনবহুল শহরগুলো এখন জনমানব শূন্য। দেশটির সবচেয়ে বিলাসবহুল গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ফেরারি করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে আগামী দুই সপ্তাহের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে। যেখানে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার লোকসান গুনতে হবে ইতালিকে। 

করোনা ভাইরাস এখন পর্যন্ত বিশ্বের ১৫২টি দেশে ছড়িয়েছে। আজ পর্যন্ত সারাবিশ্বে ৭ হাজার ৭১ জন মারা গেছেন করোনা আক্রান্ত হয়ে। আর এখন পর্যন্ত প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছে ১ লাখ ৭৩ হাজার ৫১৭ জন। তবে সুখবর হচ্ছে সুস্থতার সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এ যাবত ৭৮ হাজার ৮৮৪ জন সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরেছেন।

এএইচ/